Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রজ্ঞাপনের দাবিতে বিক্ষোভ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ঢাবি সংবাদদাতা : কোটা ব্যবস্থা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় আজ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল সকালে এক বিক্ষোভ মিছিল শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির আহŸায়ক হাসান আল মামুন। তিনি বলেন, “ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার ৩২ দিন পার হলেও প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। আজ (গতকাল রোববার) বিকাল পাঁচটার মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হলে কাল (আজ সোমবার) থেকে সারা দেশের সব কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট চলবে। অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করা হবে।” বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে হাজারো শিক্ষার্থীর একটি মিছিল মধুর ক্যান্টিন, ঢাবির বিজনেস ফ্যাকাল্টি, বিজয় একাত্তর হল, বসুনিয়া, ভিসি চত্বর, শহীদ মিনার হয়ে কার্জন হলের দিকে যায়। মিছিলে শিক্ষার্থীরা, ‘আর নয় কালক্ষেপণ, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘শেখ হাসিনার ঘোষণা, বাস্তবায়ন করতে হবে’ ইত্যাদি ¯েøাগান দেয়। মিছিল পরবর্তী সময়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের আহŸায়ক হাসান আল মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। তারা ছাত্রসমাজের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এটা ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না। আজ (গতকাল রোববার) বিকেল ৫টার মধ্যে যদি প্রজ্ঞাপন জারি না হয় তবে আগামীকাল (আজ সোমবার) সকাল ১০টা থেকে ছাত্রসমাজ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করবে। যুগ্ম আহŸায়ক ফারুক হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ৩২ দিন পার হলেও এখনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি। আজকের (গতকাল রোববার) মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে আগামীকাল (আজ সোমবার) থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে
যুগ্ম আহŸায়ক নুরুল হক নূর বলেন, “সরকার যখন ডেকেছে, আমরা সাড়া দিয়েছি। ৭ মের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির কথা ছিল, কিন্তু এমনটা না হওয়ায় ছাত্ররা বিক্ষুব্ধ হয়েছে। বাংলার ছাত্র সমাজ তাদের অধিকার আদায়ে আর ছাড় দেব না। যদি দ্রæত সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না করা হয়, তাহলে কঠোর আন্দোলনে যাব। “ প্রধানমন্ত্রী যখন কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন আমরা তার বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছি এবং আমাদের আন্দোলনকে স্থগিত করে আনন্দ মিছিল করেছি। কিন্তু তার ঘোষণার পর আমরা কোনো প্রজ্ঞাপন পাইনি। ছাত্রদের সাথে কেন এমন প্রহসন করা হচ্ছে?”
উল্লেখ্য, ১০ মে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোজাম্মেল হক খান ‘কোটা সংস্কার বা বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো হয়েছে’ বলে জানালেও প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি।
রাবি সংবাদদাতা জানান, জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কোটা বাতিলসংক্রান্ত ঘোষণা প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করে ক্যাম্পাসের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সেখানে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘আর নয় কালক্ষেপণ, এবার চাই প্রজ্ঞাপন’, ‘পাঞ্জেরি, পাঞ্জেরি প্রজ্ঞাপনের কত দেরি,’ ইত্যাদি ¯েøাগান দেয়।
সমাবেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের রাবি শাখার ভারপ্রাপ্ত আহŸায়ক মোরশিদুল আলম বলেন, ‘কোটা কখনো সম্মানের মানদন্ড হতে পারে না। কোটা যদি সম্মানের মানদন্ড হতো, তাহলে তাদের নামের পাশে কোটাধারী লেখা থাকত। সম্মানের মানদন্ড হলো মেধা।’ মোরশিদুল আরো বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন করে আসছি। আমরা আর আন্দোলনে নামতে চাই না। আমরা দ্রæত সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কোটা বাতিলের ঘোষণার প্রজ্ঞাপন জারি করে এর বাস্তবায়ন চাই।’ এ ছাড়া দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও ঘোষণা দেন তিনি। এ বিক্ষোভ সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শতাধীক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিল।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ