Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতের সাথে সরকার দেশবিরোধী গোপন চুক্তি করেছে : রিজভী

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : আওয়ামী লীগ সরকার আবারও ক্ষমতা দখল করতে ভারতের সাথে দেশবিরোধী গোপন চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অবিলম্বে এই গোপন চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন। রিজভী বলেন, সকল জনমতকে উপেক্ষা করে আকস্মিকভাবে বাংলাদেশ-ভারত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। এমনকি তাদের বাছাইকৃত লোক দিয়ে গঠিত একদলীয় জাতীয় সংসদেও এটি নিয়ে আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করেনি।
এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। গতকাল (রোববার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের জাতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ভিন দেশের এক্সটেনশন হতে দেয়া যাবে না হুশিয়ারী উচ্চারণ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, অবিলম্বে গোপন চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ করুন। ভারত আমাদের সবচেয়ে নিকটতম প্রতিবেশী। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের তিন দিক দিয়েই সীমান্ত রয়েছে। একই সঙ্গে রয়েছে সীমান্ত প্রতিযোগিতা। তাদের সঙ্গে সীমান্ত প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ায় দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে না জানিয়ে এধরণের দেশবিরোধী চুক্তির খবরে গোটা জাতি হতভম্ব ও চিন্তিত হয়ে পড়েছে। দেশবাসী মনে করে আবারও ক্ষমতা দখল করতে দেশবিরোধী এই গোপন চুক্তি করা হয়েছে। বিএনপির এই নেতা জানান, প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় ঋণ বাস্তবায়ন এবং সার্বিক সহযোগিতার বিস্তার ঘটাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে কি না, সেই সংশয় এখন বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আসলেই নাচের যে পুতুলের ভূমিকাই পালন করছেন তা এই চুক্তির মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে।
খালেদা জিয়ার সাথে তার পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দিচ্ছে না অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, খালেদা জিয়াকে ভিত্তিহীন মামলায় অন্যায় সাজা দিয়ে কারবন্দী রেখে এখন দেশনেত্রীর সঙ্গে তাঁর স্বজনদেরও দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। ১০দিন ধরে পরিবারের কোন সদস্যরা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। পরিবারের স্বজনসহ আমরা দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থার কোন খবর পাচ্ছিনা। বিএনপি’র নেতাকর্মীরাসহ দেশবাসী বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যগত অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, আমরা আগেই জানতে পেরেছিলাম দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থার প্রতিদিন অবনতি হচ্ছে। তাঁর হাঁটা চলা করতে অসুবিধা হচ্ছে। এখন তাঁকে পরিত্যক্ত স্যাঁতসেতে অস্বাস্থ্যকর ভবনে রাখায় নানা ধরণের রোগ ও সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন তিনি। এমনকি সরকারি মেডিকেল বোর্ড বেগম খালেদা জিয়াকে অর্থোপেডিক্স বেড দেওয়ার এবং ফিজিওথেরাপির সুপারিশ করলেও এখন পর্যন্ত সেটির কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা বার বার তাঁর অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন। দেশনেত্রী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও সরকার ও কারাকর্তৃপক্ষ তা আমলে নিচ্ছে না। তাঁকে উন্নতমানের এমআরআই এর ব্যবস্থা দিতে চিকিৎসকরা সুপারিশ করেছিলেন, অথচ সেটি বাস্তবায়িত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আত্মীয়স্বজনদেরকে দেশনেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে না দেয়াটা সরকারের কালো কাপড় ঘেরা গভীর অন্ধকারের মধ্যে এক ভয়াল ষড়যন্ত্রের অংশ। খালেদা জিয়াকে অশুভ ও দুরভিসন্ধিমূলক উদ্দেশ্যেই কারাবন্দী করা হয়েছে বলে আমরা বারবার যে আশঙ্কার কথা বলে আসছি সেটি আরও স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
খালেদা জিয়াকে মাইনাস করার চক্রান্ত হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আগামী নির্বাচনে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য দেশী-বিদেশী চক্রান্তের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মাইনাস করতেই তাঁকে সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দী করা হয়েছে। এখন তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে প্রতিহিংসার এক বিভৎস প্রতিশোধ নিতে চান কী না তা নিয়ে দেশের মানুষ উৎকন্ঠিত।
খুলনায় নির্বাচনের একদিন আগেও রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সন্ত্রাসী তাÐব চলছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের মধ্যে এক ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্ষমতাসীনদের দাপটে খুলনা মহানগর জুড়ে এখন শুধুই আতঙ্ক। ভোটার’রা ভীতিমুক্ত পরিবেশে নির্বিঘেœ ভোট দেয়া দুরে থাক এখন তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা চরম হুমকির মধ্যে নিপতিত। তিনি বলেন, গতরাতেও বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোটার ও বিএনপি নেতাকর্মীদের হুমকি দেয়া হয়েছে, গণগ্রেফতার করা হয়েছে, ভোটকেন্দ্রে না যেতে চাপ দেয়া হচ্ছে। ধানের শীষের প্রার্থী ক্ষমতাসীনদের নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের ১৯টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলেও নির্বাচন কমিশন অভিযোগগুলিকে আমলে নেয়নি। সরকারী সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের আনাগোনা চলছে নির্বাচনী এলাকায়। অথচ ইসি নির্বিকার ও নীরব দর্শক। নির্বাচন কমিশন জেগে থেকে ঘুমিয়ে থাকার ভান করছে। এই কারনেই খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের মাঝে কানাঘুষা চলছে নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশন সরকারের ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বাস্তবায়ন করছে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, আব্দুস সালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ