Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

প্রাইভেট ব্যাংক কৃষককে খুব একটা সহায়তা করে না -কৃষিমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, দেশে কার্যরত তফসিলি বেসকারী ব্যাংকগুলো কৃষককে খুব একটা সহায়তা করে না। কৃষকদের পাশে সবসময় সরকারি ব্যাংকগুলোই থাকে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গতকাল বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের অডিটরিয়ামে ‘কৃষক সংগঠনের জন্য আর্থিক সেবা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প‘ বাস্তবায়নের প্রারম্ভিক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, এম এম আই ওয়াশিংটনস্থ সমন্বয়ক ড. ইফতিখার মোস্তফাসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ।
কৃষিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বেসকারী ব্যাংকগুলোর সমালোচনা করে বলেন, ‘প্রাইভেট ব্যাংকের রেকর্ড খুব একটা ভালো না। প্রাইভেট ব্যাংক কৃষকদের খুব একটা সহযোগীতা করে না। আপনারা কেউ চাইলে এর ডাটা নিয়ে আমার সঙ্গে বসতে পারেন। আমার কাছেও তথ্য আছে। তারা কৃষকদের খুব একটা পাত্তাও দেয় না। যেটুকু করার তা সরকারি ব্যাংকগুলোই করে।’ তিনি বলেন, আমাদের কৃষক থেকে শুরু করে বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি থেকে শুরু করে উন্নত সবকিছুই ছড়িয়ে দিতে হবে। কারণ তারা সবাই নতুন কোন কিছু এলেই সেটা গ্রহন করতে চায় এবং করে। যে কারনে আমাদের জমি কমে গেলেও উৎপাদন বেড়েছে, দ্বিগুন হয়েছে। এজন্য দ্রæত কৃষির উন্নত প্রযুক্তি বা প্রশিক্ষণ কৃষককে দিতে হবে।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, কৃষকদের উন্নয়নের জন্য শুধু সংগঠন দিয়েও হয় না। আবার শুধুমাত্র অর্থিক সহায়তা দিয়েও হয় না। দুটোর মধ্যেই সমন্বয় করতে হবে। একজন দাড়িয়ে গেলে তো ভালো, কিন্তু যার পড়ে যাবার অবস্থা তৈরি হয় তাকেও তুলে আনতে হবে। তিনি ফরিয়া বা মিডলম্যাদের নিয়ে বলেন, আমাদের দেশে ফরিয়া একটা গালিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু তারা যে কৃষকের ক্ষেত থেকে পণ্যগুলো আমাদের খাবার টেবিলে আনার ব্যবস্থা করছে সেটাও দেখতে হবে। শুধু গালি দিলে হবে না। এখন তো মহাজনের দেখা পাওয়া যায় না খুব একটা। কারণ কৃষকরা ব্যাংকের যেতে শুরু করেছে। তাই তারাও উধাও হয়ে গেছে।
মঈনউদ্দীন আব্দুল্লাহ বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে কৃষির উৎপাদন দ্বিগুন করতে হবে। কৃষকদের সংগঠিত করার পাশপাশি বাজার ব্যবস্থাপনা ও উৎপাদনেও সহযোগীতা করতে হবে। এখনো পর্যন্ত অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা কৃষকদের লিঙ্ক করে বড় বড় ঋণ বাগিয়ে নিচ্ছে, অথচ কৃষক ঠিকমত ঋণ পায় না। আবার গত বছর হাওড়ের বন্যায় যখন সেখানকার কৃষক ফসল হারিয়ে নি:স্ব তখন এনজিওগুলো তাদের গরু নিয়ে গেছে, ঘড়ের চাল খুলে নিয়ে গেছে। এ বিষয়গুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ করা উচিত। ফজলে কবীর কৃষিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হারে ঋণ বিতরণ হচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, কৃষিতে গুরুত্ব দেয়ার পাশাপাশি এখন আমরা ম্যানুফ্যাকচারিং এবং সেবাতে গুরুত্ব দিচ্ছি। কৃষকরা যারা একটু বড় পরিষরে কৃষি প্রজেক্ট করছে তাদের জন্য আমরা বড় ঋণের ব্যবস্থা করেছি। ৬০০ কেটি টাকার একটি ইএফ স্কিম গঠন করার কাজ চলছে। কৃষির মান ও এগ্রো প্রসেসিংকে গুরুত্ব দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা করে ঋণ দেয়া হবে। এখান থেকে আইটি খাতও ঋণ পাবে। এই ঋণ আসলে ইক্যুইটি হিসেবে দেয়া হবে। এর কোন সুদ থাকবে না। একটা নির্দিষ্ট মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বাজার, কারিগরী জ্ঞ্যান, মূল্য সংযোগন ধারা, তথ্য এবং অর্থায় সেবার জন্য কৃষক সংগঠনসমূহের সক্ষমতা বাড়াতে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা তিন বছর মেয়াদী কৃষক সংগঠনের জন্য আর্থিক সেবা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এতে অর্থায়ন করেছে গেøাবাল এগ্রিকালচার এন্ড ফুড সিকিউরিটি প্রোগ্রাম (জিএএফএসপি) মিসিং মিডল ইনিশিয়েটিভ (এম এম আই)। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফএও এর বাংলাদেশস্থ প্রতিনীধি ডেভি ডোলান।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ