পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা : জমিতে অধিক ফলন হওয়ায় ভৈরবের জোয়ানশাহী হাওরের কৃষকরা যখন স্বপ্ন দেখছিল নতুন ধান ঘরে তুলে ভাগ্যে বদলের। ঠিক সে সময় হাওরের পাকা ধান প্রবল বৃষ্টির পানিতেই তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকের স্বপ্ন এখন তাদের বোঝা। পানিতে তলিয়ে যাওয়া ধান ঘরে তুলতে গিয়ে শ্রমিক সঙ্কট ও বজ্রপাতের প্রাণহানির আশঙ্কায় দিশেহারা জোয়ানশাহীর হাজারো কৃষক পরিবার। অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে চাহিদামতো শ্রমিক না পাওয়ায় নিজেরাই ডুবে ডুবে কাটছেন আধাপাকা ধান। পরিবারের সদস্য ও অল্পসংখ্যক শ্রমিক নিয়ে ভোর থেকে সন্ধ্যার আগমুহূর্ত পর্যন্ত অবিরাম ধান কাটার পরও কোনো কুল পাচ্ছেন না এ হাওয়েরর কৃষকগণ। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জোয়ানশাহী হাওরে এ বছর তিন হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে বলে ভৈরব কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে। হাওরে ধানের বাম্পার ফলন হলেও পানির মধ্যেই হাবুডুবু খাচ্ছে কষ্টার্জিত সোনালি ফসল।
শ্রমিক সঙ্কটের কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর তিনগুণ চড়া মূল্যে ধান কাটতে হচ্ছে। ফলে লাভ দূরের কথা, একর প্রতি শ্রমিকের মূল্য ৮-৯ হাজার টাকাও পানিতে যাবে। বৈরী আবাহওয়ার কারণে যতটুকু ধান কাটা হচ্ছে, তা শুকাতে না পারায় শেষ সম্বলটুকু ঘরে তুলতে পারছেন না তারা।
সরেজমিন জোয়ানশাহী হাওরে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের এ দুর্দশার চিত্র। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে প্রবল বর্ষণ ও আকাশ মেঘলা থাকায় ডুবে যাওয়া ধান কাটার পরও শুকাতে না পারার কারণে ধান পচতে শুরু করেছে। শনিবার আকাশে রোদের দেখা পেয়ে হাওরের কৃষকরা অনেকটাই উৎফুল্ল। এখন তাদের একটাই আশা, অন্তত আরো কয়েকটা দিন রোদ পেলে হয়তো কাটা ধানগুলো ঘরে তুলতে পারবেন।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অতিরক্তি বৃষ্টি ও মেঘনা নদীর পানি হাওরে ঢুকে পড়ায় তলিয়ে যায় তাদের কষ্টে অর্জিত ফসল। রোদ না থাকায় ধান শুকাতে না পারায় পচন ধরেছে যেন তাদের স্বপ্নে। শ্রীনগর বাজার থেকে মেঘনার চর পর্যন্ত একটি রাস্তা হলেই কেবল কেরিং খরচ অনেকটা কম হতো। রাস্তার এ দাবি তাদের দীর্ঘ দিনের। রাস্তার অভাবেই তাদের ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয় বলে জানান তারা। তলিয়ে যাওয়া ধান কেটে নৌকায় তুলা হয়, পাড়ে আনার পর আরো অন্তত এক কিলোমিটার দূরে খলায় আনতে হয় বোঝা বইয়ে। শ্রমিকের অভাবে পানি থেকে কেটে ধানের মটিগুলো পাড়ে স্ত‚প করে রাখতে গিয়ে মারাত্মক পচনের সৃষ্টি হয়েছে। অতিরিক্ত টাকায় ধান কাটার পর খলায় আনা সম্ভব হচ্ছে না তাদের। ওই হাওরে অন্তত দুই হাজার পরিবার কৃষির সাথে জড়িত। বছরে শুধু একবারই জমিতে ধান চাষ করতে পারে তারা। ধান বিক্রি করে ছেলে মেয়ের পড়ালেখা ও সংসারের চাহিদা মেটাতে হয় ওই অঞ্চলের কৃষকদের।
এ সঙ্কটময় মুহূর্তে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে বিস্তীর্ণ হাওরের মাঝে শ্রীনগর ইউপি সদস্য কৃষক জাহের মিয়ার নেতৃত্বে মানববন্ধন করেছে হতাশা ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। শনিবার দুপুরে ভৈরব উপজেলার জোয়ানশাহী হাওরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় হাওরের কৃষি ও কৃষকের বর্তমান অবস্থা বর্ণনা করেতে গিয়ে কৃষকগণ হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।