পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি আইনি সেবা করুনা নয় বিচারপ্রার্থীর অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেছেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় আইনগত সহায়তা পাওয়া কোনো দান বা করুণা নয়; এটা দরিদ্র ও অসহায় মানুষের অধিকার, আর রাষ্ট্রের এক অপরিহার্য দায়িত্ব। আইনের দৃষ্টিতে সমতা’র যে অমীয় বাণী আমরা বারবার উচ্চারণ করি, আইনগত সহায়তা ব্যতিরেকে তা কখনই সম্ভব নয়। গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে উচ্চ আদালতে সরকারি আইনি সেবা বিচার প্রার্থীগণের প্রত্যাশা ও জেল আপিল মামলা পরিচালনায় আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন এ সভার আয়োজন করেন।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি চেয়ারম্যান বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আপিল বিভাগের বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মোঃ গোলাম রব্বানী, অতিরিক্ত কারা মহা-পরিদর্শক কর্ণেল ইকবাল হাসান ও জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মোঃ জাফরোল হাছান, দাতা সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম প্রমুখ। এছাড়াও বিভিন্ন জেলার জেলা ও দায়রা জজ, বিভিন্ন জেলার সিনিয়র জেল সুপারগণ, সুপ্রিম কোর্টের প্যানেল আইনজীবীগণ, বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাগণ, মানবাধিকার কর্মীগণ ও গণমাধ্যামের কর্মীগণ।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, জেলা জজগণ বিভিন্ন সময় জেলা কারাগার পরির্দশন করেন। তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নিন। অনিয়ম থাকলে কর্তৃপক্ষের নজরে আনুন। বিনা বিচারে দীর্ঘ দিন আটক আছেন অথবা প্রতিনিধিত্ব বিহীন অবস্থায় কিংবা আইনজীবী না থাকার কারণে মামলা শুনানি করতে পারছে না এরূপ দরিদ্র কারাবন্দীদের আইনি সহায়তা দেয়ার জন্য উদ্যোগ নিন। জেল আপিল মামলাসহ লিগ্যাল এইডের মামলা পরিচালনায় বিজ্ঞ আইনজীবীদের অনেক আন্তরিক হতে হবে। প্রয়োজনে দ্রæত মামলা নিষ্পত্তির জন্য পৃথক বেঞ্চ গঠনের অঙ্গীকার পূন:ব্যক্ত করেন।
তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ মামলা অনেক বড় মামলা। এ মামলা পরিচালনা ও প্রমাণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রপক্ষের উচিত সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ, তথ্য- উপাত্ত সংগ্রহ করে আদালতে হাজির করা। এ মামলায় ভিকটিম শুধু একজন সাক্ষী মাত্র। ভিকটিমের বক্তব্য নির্ভযোগ্য হলে কলাবরেট (সহযোগী) লাগে না। ধর্ষণ মামলায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান মেডিকেল তথ্য উপাত্ত উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে মেডিকেল এভিডেন্স পাওয়া গেলে বিচার করা অনেকটা সহজ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের দেশে মেডিকেল এভিডেন্স তিন দিন, পাচঁ দিন এবং কখনো ১৫ দিন পরও আসে। দেখা যায় তখন সেখানে কোন আলামত থাকছে না। সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এসব মামলায় কোর্টকে দোষারুপ করার আগে দেখতে হবে গলদটা কোথায়। ধর্ষণ মামলায় মেডিকেল এভিডেন্স যদি সঠিক এবং পরীক্ষিত হয়, তাহলে আসামির সাজা না হওয়ার কোন সুযোগ নাই। বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলী বলেন, প্রত্যেক বিচারককে প্রবেশন অব অফেন্ডারস অর্ডিন্যান্স ১৯৬০ মেনে চলতে হবে। যাতে করে প্রথম অপরাধী ও কম সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের বিশেষ সুবিধা দেয়া যায়।জামিন হওয়ার পর এক দিনও যাতে সাজা ভোগ করতে না হয় সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। যে কোন মূল্য ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার আহবান জানন আপিল বিভাগের এই বিচারপতি।
বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম বলেন, সুপ্রিম কোর্টের কাছে দেশের মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। আইনে কী আছে সেটা বিচারপ্রার্থী জনগণ বুঝতে চায় না। গরীব মানুষের আইনি সেবা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে।
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ন্যায় বিচার না হলে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হবে। এতে করে আমাদের সভ্যতা ধবংস হবে। আমরা অন্ধকার যুগে চলে যাব। তিনি আরো বলেন, যারা অযোগ্য ও জুডিসিয়াল মন মানষিকতার অভাব রয়েছে; তাদের বিচারবিভাগ থেকে রিমুভ হওয়ার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন।
জাফরোল হাছান বলেন, আইনের শাসনের পূর্বশত হচ্ছে ন্যায় বিচারবিচার। অসহায় ও দরিদ্রদের আইনি সেবা দিতে সারা দেশে কাজ করছে আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা।
শাহীন আনাম বলেন, সরকারি ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সমূহের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কার্যক্রম করা জরুরী। নারী ও শিশু ভিকটিমদের সরকারি আইনি সেবার মাধ্যমে লিগ্যাল এইড দেয়া অত্যন্ত ভাল উদ্যোগ। তিনি আরো বলেন, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মামলার নিষ্পত্তির হার খুবই উদ্বেগ জনক। এইসব মামলা নজর দেয়ার প্রতি তাগিদ দেন তিনি। সভা পরিচালনা করেন লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল টাইটাস হিল্লোল রেমা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।