পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভোটের মাধ্যমে নয় নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আগামীকাল (আজ শনিবার) সাবজেক্ট কমিটি বসবে। সেখানে কারা কারা নেতৃত্ব চায় ইতোমধ্যে দরখাস্ত পাঠিয়েছে। আমি চাই সমঝোতার মাধ্যমে তোমরা তোমাদের নেতৃত্ব নিয়ে আস। তোমরা নিজেরা বসে স্যাক্রিফাইস করাটা শিখতে হবে। যে কোনো ব্যাপারে স্যাক্রিফাইস না করলে কিন্তু অর্জন করা যায় না। অর্জন তখনই করতে পারবা, যখন কিছু দিতে পারবা। কাজেই তোমরা সমঝোতার মাধ্যমে কর, সেটাই আমরা চাই।
গতকাল শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ছাত্রলীগের সহসভাপতি এবং নতুন কমিটি নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরিফুর রহমান লিমন, সম্মেলন আয়োজক উপকমিটির আহ্বায়ক ছাত্রলীগ সহসভাপতি কাজী এনায়েত হোসেন, অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক ইমতিয়াজ বুলবুল বাপ্পি বক্তৃতা করেন। সংঠনের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন অনুষ্ঠান পরিচালনা এবং সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন শাহজাদা শোক প্রস্তাব পাঠ করেন।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এ সময় দলীয় পতাকা ওড়ান। গতকাল শুক্রবার ৪টায় সম্মেলনস্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বিকাল পৌণে ৬টায় সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়া শুরু করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। পৌণে একঘন্টার বক্তব্য শেষ করেন সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে।
ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে চলতি বয়সসীমা ২৭ থেকে এক বছর বাড়িয়ে ২৮ বছর করার কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ছাত্রলীগের নেতৃত্বের বয়স আমরা ২৭ বছর করে দিয়েছিলাম। যদিও দুই বছর মেয়াদি এই কমিটির মেয়াদ নয় মাস বেশি হয়ে গেছে। আমি চাই না, এই নয় মাস বেশি হয়েছে বলে কেউ বঞ্চিত হোক। তাই আমরা এক বছর গ্রেস দিতে পারি। কাজেই ২৮ বছরের মধ্যে যারা তারাই হবে।
বসয়সীমা বাড়ানোর ব্যাখ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, কারণ এখন কোনো সেশন জট নাই। ২৩ থেকে ২৪ বছরের মধ্যে মাস্টার্স ডিগ্রী পাস হয়ে যায়। এরপর ডাবল মাস্টার্সও করা যায়, তারপরও যথেষ্ট বয়স থাকে। আমি চাই, তোমরা এমন নেতৃত্ব খুঁজবে, যারা সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে তোমাদের এই সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে পারে, যাতে আগামী দিনে তোমরা এই দেশকে এগিয়ে নিতে পার জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসাবে।
বাঙালির ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস, আমিও ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম
বাঙালির ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালির ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস। প্রতিটি আন্দোলনে ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে। দেশের সব আন্দোলন সংগ্রামে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ছাত্রলীগও ছিল। আন্দোলন গড়ে তোলায় আওয়ামী লীগের পাশাপাশি ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। তিনি বলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। সেই সংগ্রামেও ছাত্রলীগ ছিল। ‘৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রলীগের ভূমিকা আছে। আমিও ছাত্রলীগের একজন কর্মী ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধেও এ সংগঠনের অবদান আছে। আমাদের বহু সহকর্মী প্রাণ দিয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, যে সময় দেশের ক্ষমতায় খুনিরা, সেই অবস্থায় আমি বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম। ‘৭৫-এর পর বাংলার যে গৌরব হারিয়ে গিয়েছিল, সেই গৌরব ফিরিয়ে দেয়া, দেশকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে দেশে ফেরত আসি। তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যার প্রতিবাদ এবং গণতন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার সংগ্রামও করেছিল ছাত্রলীগ। স্বৈরতন্ত্রকে হটিয়ে বাংলাদেশের মানুষের হাতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়ার সংগ্রামে ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে ১৯৯৬ সালে ২১ বছর পর আমরা ক্ষমতায় আসি। ক্ষমতায় এসে যারা ছাত্রসমাজের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল, মেধাবীদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছিল, যারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সেশন জট তৈরি করেছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ২০০১ সালে চক্রান্ত করে আমাদের ক্ষমতায় আসতে দেয়া হয়নি। তিনি বলেন, বিএনপির ক্ষমতায় এসে সারাদেশে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অস্ত্রপাচার, অর্থপাচারসহ যত ধরনের অপকর্ম করা হয় তারা তা করেছে। তাদের অত্যাচারে দেশে জরুরি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমি ক্ষমতায় না থাকার পরও আমাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে সময় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করেছিল। এমন কোনও দিন নেই যে তারা কারাগারের সামনে যেতেন না, কোর্টের সামনে যেতেন না।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে কোন প্রকার নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, তার সরকার এ ধরনের অপরাধ কোনভাবেই বরদাশত করবে না। তিনি বলেন, আমি আমাদের ছাত্রদের বলবো কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন ধরনের ভাংচুর করা চলবে না। ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করবে এটা আমি বরদাশত করবো না। তিনি আরও বলেন, কারণ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বায়ত্তশাসন থাকলেও সেগুলো চালাতে সকল খরচ সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, যদি কেউ ভাংচুর করে, সেখানে আমার কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর প্রতি নির্দেশ রয়েছে-সে দলের হোক, আর যেই হোক কাউকে ছাড়া হবে না, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশনা
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, দেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রাম ও অর্জনে ছাত্রলীগের ভূমিকা রয়েছে। আদর্শহীন রাজনীতি কোনো রাজনীতি নয়। আদর্শ নিয়ে এগিয়ে গেলে অবশ্যই তাতে দেশের মানুষের কল্যাণ হবে। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেশকে ভালোবাসতে হবে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করতে হবে। তিনি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে চলতে এবং নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনে রাখতে হবে, ছাত্র রাজনীতি আমরা করব। কিন্তু শিক্ষা গ্রহণ করাটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় এবং সবার আগের কাজ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ বই দু’টি পড়তে হবে এবং দেশকে ভালোবাসতে হবে।
ইনশাল্লাহ, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হবে
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট অবশ্যই উৎক্ষেপণ হবে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বৃহস্পতিবার উৎক্ষেপণ না হওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, মাত্র ৪৬ সেকেন্ডের জন্য উৎক্ষেপণ হতে পারেনি। তবে অবশ্যই হবে। তিনি সম্ভাব্য এ উৎক্ষেপণকে ‘আকাশ জয়’ বলেও মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের জন্য কাউন্টডাউন শুরু হয়। কিন্তু কারিগরি কারণে শেষ মুহূর্তে তা বাতিল করা হয়েছে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সফলতা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করে। তাই এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই; সময় লাগে, সময় লাগতে পারে। তবে স্যাটেলাইট অবশ্যই মহাকাশে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।