পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : সরকার নির্বাচনী বছরে ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে আসবে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৬০ হাজার কোটি টাকা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।
পরিকল্পনা কমিশন থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, এডিপিতে এক লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকার পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নের জন্য সাত হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সঙ্গে তুলনা করলে আগামী অর্থবছরের এডিপির আকার বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। টাকার অঙ্কে ১৯ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ই-পাসপোর্ট তৈরির জন্য বাজেটে বাড়তি এক হাজার ৮০০ কোটি টাকা দাবি করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জাফর আহমেদ খান তার মন্ত্রণালয়ের জন্য বাড়তি টাকা দাবি করেন। এসব দাবি শুনার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন মন্ত্রণালয়ের কত টাকা লাগবে, তা নিয়ে এর আগে দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। সবার মতামত নেওয়া হয়েছে। তাই এখন বাড়তি টাকা দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে কেউ যদি খরচ করতে পারে, তাহলে সামনে দেওয়া হবে।
২০০৯ সাল থেকে দেশে সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব বা পিপিপি মডেল চালু হলেও এখন পর্যন্ত তেমন সফলতা আসেনি। পিপিপির আওতায় কোনো প্রকল্প সফলতার মুখ না দেখলেও আগামী অর্থবছরের এডিপিতে ৭৮টি প্রকল্প রাখা হয়েছে পিপিপির মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য। তার মধ্যে রয়েছে ঢাকা চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, ঢাকা ময়মনসিংহ সড়ক এক্সপ্রেসওয়ে উন্নীতকরণ, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের মতো প্রকল্প।
এনইসি সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, চলতি অর্থবছরের অর্জন, বাস্তবতা ও সক্ষমতা বিবেচনা করে নতুন অর্থবছরের এডিপির আকার নির্ধারণ করা হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার পথে আমরা বিশ্বের অন্য দেশের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছি।’ পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এডিপি হচ্ছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি’র) প্রবৃদ্ধির লাইফ লাইন। তাই আমরা পরিকল্পিতভাবে এগুচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হওয়া। মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের উন্নত দেশ হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ২০৩০ সালের কথা মাথায় রেখে। কারণ ওই বছর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নের শেষ বছর। মানসম্পন্ন উপায়ে ওই লক্ষ্য অর্জনের মধ্যে দিয়েই আমরা ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হতে চাই।
প্রধানমন্ত্রীর চারটি প্রতিশ্রæতির কথা উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সবার স্কুলে উপস্থিতি, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হওয়া, ডিজিটাল বাংলাদেশ এবং ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুত সুবিধা নিশ্চিত করা- এই অঙ্গীকারগুলো পূরণ হওয়ার পথে রয়েছে।
বাজেট ঘোষণার পর থেকে আর মাত্র ছয় মাস সময় হাতে পাবে বর্তমান সরকার। তাই স্থানীয় রাস্তাঘাট, সেতুসহ জনতুষ্টিমুলক প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি নজর দিতে চায় সরকার। সে কারণে আসছে বাজেটে পরিবহন খাতের পরিবর্তে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে বাড়তি বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। যদিও প্রতিবার পরিবহন খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এবছর দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে। পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য বলছে, আসছে বাজেটে এডিপিতে স্থানীয় সরকার বিভাগে সর্বোচ্চ ২৩ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা রাখা হচ্ছে।
সংসদ সদস্যদের পছন্দমতো রাস্তাঘাট নির্মাণ করতে নেওয়া একটি প্রকল্পে আগামী বাজেটে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পল্লী সড়ক উন্নয়নে ৭০০ কোটি, তৃতীয় স্থানীয় সরকার সুশাসন প্রকল্পে এক হাজার ১৪০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে এক হাজার ৫০ কোটি এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পে ৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে জনতুষ্টির জন্য। এদিকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুত বিভাগে ২২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয় অবস্থানে থাকা পরিবহনে রাখা হচ্ছে ২০ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের কারণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় উঠে এসেছে চার নম্বরে ১১ হাজার ৭২০ কোটি টাকা।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র বলছে, আসছে অর্থবছরের এডিপিতে এক হাজার ৪৩৬ টি প্রকল্প ঢুকেছে। এরমধ্যে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য সবচেয়ে বেশি টাকা রাখা হয়েছে। রাশিয়ার অর্থায়নে বাস্তবায়িত পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমানবিক বিদ্যুতকেন্দ্রের জন্য আসছে বাজেটে ১১ হাজার ৯৯ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া দশটি প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম একটি পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প। চীনের সঙ্গে চুক্তি করতে দেরি হওয়ায় সময় পুষিয়ে নিতে আসছে বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য পাঁচ হাজার ৩৩০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এছাড়া পদ্মা সেতু প্রকল্পে আগামী বাজেটে চার হাজার ৩৯৫ কোটি, ঢাকা আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পে দুই হাজার ২২৫ কোটি, মেট্রেরেল প্রকল্পে তিন হাজার ৯০২ কোটি, কর্ণফুলী নদীর নিচে টানেল নির্মাণ প্রকল্পে এক হাজার ৯০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
বিদ্যুত ও শিক্ষা খাতেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে আগামী অর্থবছরের এডিপিতে। প্রাথমিক শিক্ষায় উপবৃত্তি দেওয়ার জন্য এক হাজার ৫৫০ কোটি, নতুন জাতীয়করণ হওয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নে এক হাজার ৮২১ কোটি এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়নে এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাখা হয়েছে। অন্যদিকে বিদ্যুত খাতে মাতারবাড়ি বিদ্যুতকেন্দ্র প্রকল্পে দুই হাজার ১৭১ কোটি টাকা, ১৫ লাখ গ্রাহককে বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া প্রকল্পে এক হাজার ৩৯৮ কোটি টাকা এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে বিদ্যুত সংযোগ প্রকল্পে দুই হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।