Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাজীপুর সিটি নির্বাচন বন্ধ করে আত্মসমর্পণ করেছে সরকার

খুলনায় প্রেস ব্রিফিংয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম


পুলিশ ও জনপ্রশাসনকে প্রভাবিত করেছে আ.লীগ- মঞ্জু
আবু হেনা মুক্তি : বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, সরকার গাজীপুর সিটি নির্বাচন বন্ধ করে আদালতের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেছে।
তিনি বলেন, খুলনা সিটিতেও একই ধরনের প্রক্রিয়া করে রেখেছে তারা। তবে, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ দলীয় কর্মীদের ব্যবহার করে ফলাফল আয়ত্ব করতে পারলে বন্ধের প্রক্রিয়ায় যাবে না। মূলত জনগণ এবং ভোটারদের ওপর আস্থা নেই আওয়ামী লীগের। তারা ভোটেরও ধার ধারে না। ভোটাররা ভোট দিক আর না দিক, তাদের জিততেই হবে-এ ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে আওয়ামী লীগ খুলনায় নির্বাচন করছে।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে ঘিরে নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত দলীয় নেতা-কর্মীদের গণগ্রেপ্তার, পুলিশের হয়রানি, ক্ষমতাসীন দল কর্তৃক হামলা-মামলা, হুমকি-ধামকি এবং ধানের শীষের প্রচারণায় লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড না থাকার অভিযোগ এনে গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব অভিযোগ করেন তিনি।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে বলেন, কেসিসি নির্বাচন পরিচালায় রিটার্নিং অফিসারই হচ্ছেন সর্বোচ্চ কর্মকর্তা। কিন্তু সরকারের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন একজন যুগ্ম সচিবকে খুলনায় পাঠিয়ে তাকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এটা নির্বাচনী আচরণবিধি ও আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘণ। এর মধ্য দিয়েই নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব না উল্লেখ করে তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে সংসদ ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমামের উদ্ধৃতি দিয়ে গয়েশ্বর রায় বলেন, কেসিসি নির্বাচনে ‘লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড’ নেই বলে স্বীকার করেছেন এইচটি ইমাম। তবে, তার বক্তব্য আওয়ামী লীগের জন্য প্রযোজ্য না হলেও বিএনপির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
খুলনার পুলিশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে চলছে কি না-প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিনিয়ত বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, খবরদারি ও হয়রানি করছে। এসব বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারের দপ্তরে অসংখ্য অভিযোগ দাখিল করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপি মনোনীত কেসিসির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেন, খুলনায় এ পর্যন্ত বিএনপির ৯০ জন নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে জেলায় ৫৫ এবং মহানগরীতে ৩৫ জন। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত ছিল। রাজনৈতিক মামলায় জবাই জামিনে রয়েছে। বর্তমানে কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। অথচ পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তার দেখাচ্ছে। একই সঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছে। কর্মীরা নির্বাচনি মাঠে থাকতে পারছে না। অথচ শহরে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না।
যতই গ্রেপ্তার আর বাঁধা আসুক বিএনপি নির্বাচনের মাঠ ছাড়বে না-উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে কোনো কারচুপি হলে জনগণ মেনে নেবে না। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দাবি করে ভোটারদের সময়মত কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহŸান জানান। একই সঙ্গে তিনি সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করে লেভেলপ্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, ভীতিমুক্ত পরিবেশ, নির্বাচনি কর্মকর্তা নিয়োগে দলীয়করণ না করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহŸান জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, বরকতউল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবদীন ফারুক, মশিউর রহমান, মো. শাজাহান, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ ও জনপ্রশাসনকে প্রভাবিত করেছে আ’লীগ- মঞ্জু
কেসিসি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত ও ২০ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেছেন, সিটি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে শাসক দলের প্রার্থী ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বেপরোয়া আচরন করছে। খোদ প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য এসে খুলনার পুলিশ ও জনপ্রশাসনকে প্রভাবিত করেছে। পুলিশ ও ডিবি লেলিয়ে দিয়ে গ্রেফতার হয়রানি করা হচ্ছে ধানের শীষের কর্মীদের। কিন্ত জনগণ এদেরকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায়না। তারা পরিবর্তন চায়। ১৫ তারিখ হবে একদলীয় শাসনের বিরুদ্ধে জনগনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার ও গণতন্ত্রের বিজয়ের দিন।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, মেয়র নির্বাচিত হলে নগরীর বাজারঘাটের উন্নয়ন ও ব্যবসায়ীদের কল্যাণে নানামুখি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। সকালে তিনি পাইকারি মাছ বাজারে গণসংযোগ শেষ করে রূপসা ফেরীঘাট, রূপসা স্ট্যান্ড রোড, রূপসা শ্মশান রোড ও সংলগ্ন জনবসতি এলাকায় বসবাসকারীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন, তাদের হাতে ধানের শীষের লিফলেট তুলে দেন এবং নির্বাচনে ভোট চান।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ