Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোটা সংস্কার কমিটি গঠনের ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে : জনপ্রশাসন সচিব

| প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিদ্যমান কোটা পদ্ধতির পর্যালোচনা করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠন করবে সরকার। এ কমিটির প্রতিবেদন আসার পরে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তার আগে নয় বলে জানা গেছে।
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল বা সংস্কার করতে একটি কমিটি গঠনের রূপরেখা গতকাল বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ দপ্তরে কোটা নিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সব শেষ অগ্রগতির সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সচিব। মোজাম্মেল হক খান বলেন,একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি, এটা আজকে গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে পৌঁছেছে। এটা যদি প্রধানমন্ত্রী দেখেন তাহলে দু’এক দিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত দেবেন, একটি কমিটি হবে। সচিব বলেন, কমিটি সুপারিশ করবে, কমিটির সুপারিশ সরকার অনেক সময় লাগে। তারপর একটা সিদ্ধান্ত হবে যেটা সবাই চাচ্ছে, আশা করি সেটা হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা দেয়া হয়েছে। এ কমিটির সদস্য ৪ থেকে ৫ জন হতে পারে। কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারে কমিটি করার জন্য গতকাল পর্যন্ত সরকারকে সময় বেঁধে দিয়েছে। এর মধ্যে কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি না করলে আগামী রোববার থেকে ফের আন্দোলনের ঘোষণা রয়েছে তাদের। জনপ্রশাসন সচিব বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে বা কোটা সংস্কারের বিষয়ে সরকার কি ব্যবস্থা নেবে এ দায়িত্ব পালনের জন্য সরকার একটি কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, কমিটি গঠিত হলে কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পরে সরকার পরবর্তী অবস্থান সকলের জন্য জানিয়ে দেবে। তারা (কমিটি) যে প্রতিবেদন দেবে সেই প্রতিবেদন সরকার বিবেচনা করে দেখবে যে কোটা বিষয়ে সরকারের দায়িত্ব কি হওয়া উচিত অতপর সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দৃশ্যত ক্ষুব্ধ শেখ হাসিনা গত ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে বলেন, বারবার এই আন্দোলন ঝামেলা মিটাবার জন্য কোটা পদ্ধতি বাতিল পরিষ্কার কথা আমি এটাই মনে করি, সেটা হল বাতিল। কোটা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি করার কথাও ওই দিন বলেন প্রধানমন্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কমিটি পুরো প্রক্রিয়া শেষ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে। এতে কমিটির দায়িত্ব কী হবে, তা কার্যপরিধিতে বলা থাকবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে প্রজ্ঞাপন জারি করবে, এরপর তারা কাজ শুরু হবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রধান করে কমিটিতে জনপ্রশাসন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব ছাড়াও কয়েকজন শিক্ষাবিদ ও সাবেক আমলাকে রাখার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে নিয়োগে ৫৬ শতাংশ পদ বিভিন্ন কোটার জন্য সংরক্ষিত এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ, নারী ১০ শতাংশ, জেলা ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ৫ শতাংশ, প্রতিবন্ধী ১ শতাংশ। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে কমিয়ে আনার দাবি তুলেছিল। কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণের দাবিও জানিয়েছিল তারা। প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের কথা বলার পর তারা এখন সেই প্রজ্ঞাপন দ্রæত প্রকাশের দাবি জানাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে তাদের বিক্ষোভ ও অবরোধে রাজধানীর রাজপথ কার্যত অচল হয়ে পড়ে। তাদের ওই আন্দোলনের সমালোচনা করে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের কোটা পদ্ধতি একেবারেই তুলে দেওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্প্রতি জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা বলেন, বারবার এই আন্দোলন ঝামেলা মেটাবার জন্য কোটা পদ্ধতি বাতিল। পরিষ্কার কথা আমি এটাই মনে করি, সেটা হল বাতিল। বর্তমানে সরকারি চাকরির ৩০ শতাংশ পদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য, নারীদের জন্য ১০ শতাংশ, জেলা কোটায় ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ সংরক্ষিত। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এর দাবি ছিল, কোটার পরিমাণ ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে হবে। আর কোটায় প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে তা পূরণ করতে হবে। সরাসরি নিয়োগে কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীদের মধ্য থেকে সেসব পদ পূরণ করা হবে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক সার্কুলারে বলা হয়েছিল। সরাসরি নিয়োগে কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থীদের মধ্য থেকে কীভাবে তা পূরণ করতে হবে- সেই ব্যাখ্যা দেওয়া হয় গত ৫ এপ্রিল। ##

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ