Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দুইজনকে মৃত্যুদন্ড তিনজনের যাবজ্জীবন

রাবি শিক্ষক রেজাউল করিম হত্যা মামলার রায়

| প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

রাবি সংবাদদাতা : দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলার রায় দিয়েছে আদালত। গতকাল মঙ্গলবাল দুপুরে রাজশাহীর দ্রæতবিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শিরীন কবিতা আখতারের আদালতে ২ জন আসামীকে মৃত্যুদÐ ও ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদÐ দিয়ে এ রায় ঘোষনা করা হয়।
একইসঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। হত্যাকাÐের প্রায় দুই বছর পর বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হলো। মৃত্যুদÐ প্রাপ্তরা হলেন, প্রধান আসামী রাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী (পলাতক) শরিফুল ইসলাম ও বগুড়ার শিবগঞ্জের মাসকাওয়াত হাসান ওরফে আব্দুল্লাহ ওরফে সাকিব এবং যাবজ্জীবন কারাদÐপ্রাপ্তরা হলেন- নীলফামারীর মিয়াপাড়ার রহমত উল্লাহ, রাজশাহীর নারিকেলবাড়িয়া এলাকার আবদুস সাত্তার ও তার ছেলে রিপন আলী। এ সময় পলাতক শরিফুল ইসলাম ছাড়া জীবিত সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আট আসামীর মধ্যে বাকী তিনজন খায়রুল ইসলাম বাঁধন, নজরুল ইসলাম ওরফে হাসান ওরফে বাইক হাসান ও তারেক হাসান ওরফে নিলু ওরফে ওসমান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবি হিসাবে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু ও আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মিজানুল ইসলাম। অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় এবং যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে গত ১১ এপ্রিল যুক্তিতর্ক শেষ হয়। পরে চাঞ্চল্যকর এই মামলাটির রায় ঘোষণার জন্য ৮ মে দিন ধার্য করা হয়। রাজশাহীর দ্রæতবিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক শিরীন কবিতা আখতার যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য এ দিন ধার্য করেন। মামলায় মোট ৩২ জন সাক্ষী থাকলেও ২৬ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ২০১৬ সালের ২৩ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজশাহী নগরীর বোয়ালিয়ার শালবাগান এলাকায় বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে অধ্যাপক রেজাউলকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহতের ছেলে সৌরভ হোসেন ঐদিনই বোয়ালিয়া থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে প্রায় সাড়ে ৬ মাসের তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর আটজনকে আসামি করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক রেজাউস সাদিক। অধ্যাপক ড. এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী ‘কোমলগান্ধার’ নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। ‘সুন্দরম’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনেরও উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়া অধ্যাপক রেজাউল করিম ছিলেন একজন ভালো সেতার বাদক। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু বলেন, এ হত্যাকাÐের সঙ্গে জীবিত এবং মৃত আসামিদের সম্পৃক্ততা রাষ্ট্রপক্ষ প্রমাণ করতে পেরেছেন। তাই রায়ে জীবিত আসামিদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এতে তারা সন্তুষ্ট। এদিকে ড. রেজাউল করিম হত্যা মামলার আসামি জেএমবি সদস্য শরিফুল এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন নিহত শিক্ষক রেজাউল করিমের মেয়ে রিজওয়ানা হাসিন শতভি। তিনি বলেন, শরিফুল তার বাবাকে হত্যার ম‚ল পরিকল্পনাকারী। কিন্তু তিনি এখনও গ্রেফতার হননি। বিষয়টি তাদের খুব কষ্ট দেয়। তারা শরিফুলের বিচার দেখে যেতে চান বলে জানান তিনি। পলাতক শরিফুলের সাথে নিহত শিক্ষক রেজাউল করিমের ভালো সম্পর্ক ছিলো বলে জানা যায়। তবে শরিফুলকে ধরিয়ে দিতে রাজশাহীর পুলিশ (আরএমপি) দুই লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেও আটক করতে না পারায় পলাতক দেখিয়েই গতকাল মঙ্গলবার রায় ঘোষণা করে আদালত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ