স্টাফ রিপোর্টার : গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত হওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো গাফিলতি নেই। স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ‘ক্লিয়ারেন্স’ পাওয়ার পর ইসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে থাকে। এরপরও যেকোনো ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হলে আদালতে যেতে পারেন। আদালত নির্বাচন কমিশনকে ( ইসি) কিছু জানায়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম। তিনি বলেন এবিষয় আমরা আগে কিছু জানতাম না। গণমাধ্যম থেকে বিষটি জেনেছি।
গককাল সোমবার বিকালে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জাবাবে কবিতা খানম এ কথা জানান। তিনি বলেন, গণমাধ্যমের খবরে জানতে পেরেছি হাইকোর্ট গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত করেছেন। আদালতের নির্দেশনার প্রতি সম্মান রেখে আমরা এ নির্বাচনের সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি।
সংবিধানের ১২৫ (গ) অনুযায়ী কোন আদালত, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হইয়াছে এইরুপ কোন নির্বাচনের বিষয়ে, নির্বাচন কমিশনকে যুক্তিসংগত নোটিশ ও শুনানির সুযোগ প্রদান না করিয়া, অন্তরর্বতী বা অন্য কোনরুপে কোন আদেশ বা নির্দেশ প্রদান করিবেন না।সংবিধানের এ বিষয়টি কবিতা খানমের সামনে পড়ে শুনান সাংবাদিকরা। প্রশ্ন করেন আদাত কি এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) আগে জানিয়েছেন কি না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, আমরা এ রিট বিষয়ে হিয়ারিংয়ের আগে জানতাম না। হিয়ারিং হওয়ার পর জেনেছি।
আইনমন্ত্রী অথবা এ্যাটর্নিজেনারেলকে এ বিষটা ইসি জানাবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, এ বিষয়টা কমিশন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে। আমি এতটুকু বলতে পারি আদালতের সিদ্ধান্তকে আমরা অনার করেছি। গাজিপুর সিটি নির্বাচন স্থগিতের বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, আমরা কোন আইনজীবী ওখানে নিয়োগ দেই নি। আমাদের আইজীবী প্যানেল আছে । প্যানেলভুক্ত একজন আইজীবী রিটের একটা কপি পেয়েছে। কয়টি পাওয়ার পরে উনি হিয়ারিংয়ে ছিলেন। কিন্তু আমরা তাকে অফিসিয়ালি নিয়োগ পত্র দেই নি।তাকে ওকালত নামা দেওয়ার মত সুযোগ ছিলনা আমাদের।
তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন স্থগিত হয়ে যাচ্ছে এতে জনগনের মনে নির্বাচন ও ইসিকে নিয়ে অনেক প্রশ্ন তৈরী হচ্ছে। তারা শঙ্কা করছে সামনে সিটি নির্বাচন কী অবার স্থগিত হয়ে যায় কি না? বিশেষ করে গতকাকল খুলনা ছিলেন সিইসি। সেখানের সিটি নির্বাচন নিয়ে সিইসি সেখানের ভোটারকে অনেক সময় আসস্থ করতে হচ্ছে নির্বাচন হবে। এই যে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা ভোটারদের মধ্যে কাজ করছে? অন্য সিটি নির্বাচন কি ঢাকা ও গাজীপুরের মত স্থগিত হবে? এবিষয়ে ইসির পক্ষ থেকে কি বলার আছে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, কোন সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি আদালতের কাছে যেতে পারে। আইন তাকে সে সুযোগ দিয়েছে। আমরা স্থানিয় সরকার থেকে ক্লিয়ারেন্স নেওয়ার পরই নির্বচনের তফসিল ঘোষণা করি। আমরা গাজিপুর সিটি নির্বাচনের ব্যপারে স্থানিয় সরকার থেকে দুইবার ক্লিয়ারেন্স নিয়েছি।তারা জানিয়েছে সেখানে কোন ধরনের জটিলতা নেই।তারা আমাদের নির্বাচন করতে বলেছে। কবিতা খানম বলেন, তবে অন্য সিটি নির্বাচন নিয়ে অ্যডভান্স বলা যাবে না।তিনি বলেন কী কারণে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে বিষয়গুলো জখন ক্লিয়ার হবে। তখন জনগনের মনে সংঙ্কা থাকবে না। তিনি বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন রংপুর ও কুমিল­া সিটি নির্বাচনের মতোই সমাপ্ত করতে পারবো।প্রসঙ্গত আগামী ১৫ মে খুলনা সিটি নির্বাচন। কমিশন এখন গাজিপুর সিটি নির্বাচনের ব্যপারে আপিল করবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, আমরা এখন অফিসিয়ালি বিষয়টি পাইনি। লিখিত আদেশ পেলে কমিশন বৈঠকে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। পরবর্তী পদক্ষেপ ইসি কী নিবে। তিনি বলেন, আমরা এখনও রিটের সারমর্ম পাই নি। আশা করি দ্রæতই লিখিত আদেশ পাবো। গাজিপুর সিটি নিয়ে আবার তফসিল ঘোষণা করা হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, মাত্র কয়েক দিন সময় আছে এ সিটি নির্বাচন। এর মধ্যে কোন বিষয় সুরাহা না হলে তো আবার তফসিল দিতেই হবে। মানুষ জানতে চায় সিটি নির্বাচন স্থগিত হচ্ছে এর দায় কার? নির্বাচন কমিশনের এখানে হাত আছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে কবিতা খানম বলেন, দায় কার এটা বলার সুযোগ আমার নেই। তবে আমি বলতে পারি কমিশনের কোন গাফেলতি নেই। ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিত হয়েছ বিষটি এখন কোন পর্য়ায়ে রয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম বলেন, যতটুকু জানি লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি হওয়ার জন্য হাইকোর্টে পাঠিয়েছে। আগামী ১৫ মে গাজিপুর সিটি করপোরেশনে ভোট হওয়ার কথা ছিল। রবিবার একটি রিট আবেদনের শুনানি শেষে গাজীপুর সিটি নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে হাইকোট।