পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবৈধ আয়ের নারীদের মধ্যে যারা সাজা প্রাপ্ত হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৫৫ শতাংশই রাজনীতিকের স্ত্রী। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা মামলার রায় পর্যালোচনা করে এমন তথ্য জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি রোববার (০৬ মে) ধানমণ্ডির কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভা আয়োজন করে এমন পরিসংখ্যান দেয়। সভার কার্যপত্র প্রণয়ন করে টিআইবি’র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) শাম্মী লায়লা ইসলাম ও সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার (রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি) শাহজাদা এম আকরাম। দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদসহ ওই সভায় টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, নারী নেত্রী খুশি কবীর ও ফারাহ কবীর উপস্থিত ছিলেন।
‘দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত আয় ও সম্পদের পারিবারিক দায়: নারীর ভূমিকা, ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক কার্যপত্রে উল্লেখ করা হয়, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত দুদকের দায়ের করা ২৯টি মামলায় ২৯ জন নারীকে স্বামীর দুর্নীতির কাজে সহায়তা বা জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ অর্জন বা সম্পদের তথ্য গোপেনর অভিযোগে অধস্তন আদালত কারাদণ্ড, আর্থিক জরিমানা করা হয়।
২৯ জনের মধ্যে ২৬ জন নারীকে স্বামীর দুর্নীতিতে সহায়তা করার অপরাধে শাস্তি দেওয়া হয়। এদের মধ্যে আবার ২৫ জনেকে তিন বছর এবং একজনকে দুই বছরের সাধারণ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০ জনকে সাধারণ কারাদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডও দেন আদালত।
প্রায় সবগুলো মামলার ক্ষেত্রেই অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ বা সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হয়, যার পরিমাণ ৫০ লাখ টাকা থেকে ৮০ কোটি টাকা পর্যন্ত।
দুদক থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, টিআইবি বলছে-ওই ২৯ জন নারীর মধ্যে ১৬ জন অর্থাৎ ৫৫ দশমিক ২ শতাংশ নারীর স্বামীর পেশা রাজনীতি। এদের মধ্যে চারজন সাবেক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রী, দশজন সাবেক সংসদ সদস্য, একজন সাবেক সংসদ সদস্যের পুত্র এবং একজন সেচ্ছাসেবক লীগের সচিব।
সরকারি চাকরিজীবীদের স্ত্রী। এদের দখল করে আছে ২১ শতাংশ। এই ২১ শতাংশ নারীর স্বামীদের মধ্যে রয়েছে দুইজন সাবেক সচিব, একজন এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) সদস্য, একজন এআইজি (পুলিশ), একজন প্রধান বন সংরক্ষক এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর অ্যাসাইনমেন্ট অফিসার।
১০ শতাংশ নারীর স্বামীরা ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য রয়েছে ১৪ শতাংশ। এদের মধ্যে চিকিৎসক সংগঠনের নেতা, শ্রমিক নেতা ও ব্যাংক কর্মকর্তা রয়েছে।
দুদকের অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে-স্ত্রীরা গৃহিনী হলেও তাদের নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ, ব্যাংকে লগ্নি, ব্যবসার অংশীদার হিসেবে শেয়ার এবং ফ্ল্যাট, বাড়ি রয়েছে।
এদিকে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত দুদক পরিচালিত স্বামীর অবৈধ সম্পদ স্ত্রী অর্জন সংক্রান্ত অনুসন্ধানাধীন অভিযোগ রয়েছে ১১৮টি। এগুলোর ৫৮ জনের স্বামী বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বা সরকারি মালিকানাধীন কোম্পানির কর্মকর্তা বা কর্মচারী। এছাড়া চারজন জনপ্রতিনিধি, দুইজন ব্যবসায়ী ও পাঁচজন অন্যান্য পেশাজীবী। আর ৪৯ জনের পেশা জানা সম্ভব হয়নি।
এই পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই আলোচকরা তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। এক্ষেত্রে স্বামীর অবৈধ আয় রুখে দিতে স্ত্রীকে ভূমিকা রাখার পরামর্শ দেন তারা। বক্তারা বলেন, নারীরা সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় না থেকেও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। অথচ তিনি জানতেই পারছেন না কিছু। এসব নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা বাড়াতে হবে। কেননা, নারী চাইলেই দুর্নীতি প্রতিরোধ অনেকটাই করতে পারেন।
দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, আইনের হাত থেকে রেহাই পেতে অবৈধ, বেআইনি সম্পদ স্ত্রীর নামে গড়েন স্বামীরা। এতে মামলা হলে ফেঁসে যান নির্দোষ স্ত্রীও। তাই স্বামীর অপকর্ম এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে রেহাই পেতে নারীদের পাঁচটি পরামর্শ দেন। প্রথমত, স্বামী অর্থ কীভাবে উপার্জন করলেন তা জিজ্ঞেস করতে হবে; দ্বিতীয়ত, নিজেকে সচেতন হতে হবে; তৃতীয়ত, অনাহুত ভিকটিম হবেন না; চতুর্থত, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফরমে কিসের অ্যাকাউন্ট না জেনে স্বাক্ষর করবেন না এবং সর্বশেষ কোনো প্রকার অর্থ লেনদেন বা ব্ল্যাঙ্ক চেক বা চেকের পাতায় না জেনে স্বাক্ষর করবেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।