পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : পদ্মা সেতুতে যেদিন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে, সেদিনই ওই সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচলও শুরু হবে। প্রথম দিন ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে পাটুরিয়া-রাজবাড়ী হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলবে। গতকাল রোববার রেল ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী মোঃ মুজিবুল হক এ তথ্য জানান। রেলমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। পদ্মা সেতুতে একইদিনে ট্রেন ও যানবাহন চলবে। আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা নিয়েছি। এই প্রকল্পের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। গত মাসের ২৭ তারিখ এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য এক্সিম ব্যাংক অব চায়নার সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ২ হাজার ৬৬৭ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের (২১ হাজার ৩৬ কোটি টাকা) ঋণচুক্তি বেইজিংয়ে স্বাক্ষর হয়। বাংলাদেশের পক্ষে ইআরডির অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুন পিং এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ঢাকা থেকে যশোরের দূরত্ব ৩৫৬ দশমিক ৪০ কিলোমিটার। পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ দূরত্ব হবে মাত্র ১৭০ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার। অর্থাৎ ১৮৫ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। মুজিবুল হক বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ঢাকা হতে খুলনার দূরত্ব দাঁড়াবে ১৯১ দশমিক ১৩ কিলোমিটার। অর্থাৎ এ পথের দূরত্ব কমবে ২১৩ দশমিক ২৭ কিলোমিটার। বর্তমানে ঢাকা থেকে ট্রেনে চড়ে খুলনা যেতে সময় লাগে ৯ ঘণ্টা। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পর সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘণ্টা। রেলমন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ২০১৬ সালের ৮ আগস্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘চায়না রেলওয়ে গ্রæপ লিমিটেড’ এর সঙ্গে ২৭ হাজার ৬৫২ কোটি ৫৭ লাখ টাকার কমার্শিয়াল চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। রেলমন্ত্রী বলেন, শিগগিরই এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সার সংক্ষেপ পাঠাবো। তিনি যেদিন সময় দিবেন, সেদিন এ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।
রেলমন্ত্রী এ সময় রেলওয়েতে চলমান আরও কয়েকটি প্রকল্পের কথা উরেøখ করে বলেন, সারাদেশকে রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কক্সবাজারে নতুন রেল লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে। বরিশালের পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মিত হবে। বিদ্যমান রেললাইনকে পর্যায়ক্রমে ডাবল লাইন করা হবে। ১০ টি রেল ইঞ্জিন দ্রæত বহরে যুক্ত হবে। আরও ৭০ টি ইঞ্জিন কেনা প্রক্রিয়াধীন আছে। ২৭০ টি কোচ রেলে যুক্ত হয়েছে, আরও কোচ আনার প্রক্রিয়া চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, এ প্রকল্পের নির্মাণ কাজের জন্য ২০১৬ সালের ৮ আগস্টে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রæপ লিমিটেডের সঙ্গে ২৭ হাজার ৬৫২ কোটি টাকার কমার্শিয়াল চুক্তিপত্র সই হয়। প্রকল্পের আওতায় মোট ২১৫ দশমিক ২২ কি.মি. রেললাইন নির্মাণ করা হবে যার মধ্যে ২৩ কি.মি. উড়াল (এলিভেটেট) রেলপথ। এ সেকশনে ১৪টি নতুন রেলওয়ে স্টেশন নির্মাণ এবং বিদ্যমান ৬টি স্টেশন নবায়ন করা হবে। এ ছাড়া এ সেকশনে নতুন ট্রেন পরিচালনার জন্য ১০০টি ব্রডগেজ যাত্রীবাহী কোচ সংগ্রহ করা হবে। এ প্রকল্পের উপকারিতা তুলে ধরে বলা হয়, প্রকল্পটির আওতায় ঢাকা-পদ্মাসেতু-যশোর করিডোর নির্মাণের ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হবে। মুন্সিগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, নড়াইল- এ চারটি জেলা রেলওয়ে সংযোগের সঙ্গে যুক্ত হবে। এছাড়া ভবিষ্যতে এ রেললাইনের সঙ্গে বরিশাল ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, এ করিডোরটি ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবনা রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিআরটিসি এবং বুয়েটের সহযোগিতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গত বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সুপারভিশন পরামর্শক হিসেবে সেবা দিচ্ছে। ভূমি অধিগ্রহন কার্যক্রম দ্রæত গতিতে এগিয়ে চলছে উল্লেখ করে বলা হয়, ইতোমধ্যে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, শরিয়তপুর, মাদারীপুর ও ফরিদপুর জেলার ৫৮৩ একর ভূমি অধিগ্রহন শেষ হয়েছে। ফরিদপুর, নড়াইল, গোপালগঞ্জ ও যশোর জেলার অবশিষ্ট ১২৩০ একর ভূমি অধিগ্রহন কার্যক্রম চলমান আছে। এ পর্যন্ত ২৭১ জন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে রিসেটেলমেন্ট অনুদান দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রেলপথ সচিব মোঃ মোফাজ্জেল হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (প্রকল্প পরিচালক) গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ইআরডির (অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ) অতিরিক্ত সচিব মো. জাহিদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।