পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রেজাউল করিম রাজু : দেশের মাসজুড়েই সোনালি বোরো ধান। শুরু হয়েছে বোরো কাটার মহোৎসব। এবার প্রথমবারের মত বোরো আবাদে সর্ব্বোচ রেকর্ড সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। মাঠে মাঠে আর খৈলানে খৈলানে ধান দেখে কৃষকের চোখেও সোনালি স্বপ্ন। ঘাম ঝরিয়ে রোদ বৃষ্টিতে পুড়ে ভিজে পরম আদর যতেœর পর এখন ব্যস্ততা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার। যদিও ধান কাটাই মাড়ায়ে মেঘ রোদ্রের লুকোচুরির খেলায় ছন্দপতন ঘটাচ্ছে। শুরুতে এবার আবহাওয়া অনুকুল থাকায় বোরোর আবাদের সরকারী লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৭ লাখ ২৫ হাজার মে:টন। আর আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এককোটি নব্বই লাখ একচল্লিশ হাজার মে:টন। আবাদের জমির পরিমান বেড়ে যাওয়ায় সঙ্গত কারনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হারও বেড়ে যাবে। কৃষি বিভাগের প্রত্যাশা এবার বোরোর উৎপাদন হবে দু’কোটি টনের বেশী। আর তাহলে তা হবে এ যাবতকালের সর্বোচ্চ পরিমান বোরো ধান। যদিও একেবারে শেষ মুহুর্তে এসে বøাষ্ট রোগ, শিলা বৃষ্টি ঝড় আর বানের পানিতে বেশকিছু ধানের ক্ষতি হয়েছে। তবে তা সার্বিক উৎপাদনে তেমন প্রভাব ফেলবেনা বলে মনে করছেন কৃষি বিভাগ। ইতোমধ্যে কোথাও কোথাও ষাট ভাগ ধান কাটাই মাড়াই হয়ে গেছে। প্রকৃতির বৈরী আচরনের কারনে সবাই দ্রæত ফসল ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে।
চালের বাজার চড়া থাকায় এবার ভাল দামের আশায় বোরো আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়ে কৃষক। কোথাও খালি রাখেনি। তাছাড়া বিগত বছর গুলোর মত চাষাবাদের শুরুতে খরার হানা, সেচ সমস্যার ব্যাপার গুলো এবার ছিলনা। বরং ক’দফা বৃষ্টি বোরো আবাদের সহায়ক হয়েছে। অনুকুল আবহাওয়ায় ঘাম ঝরিয়ে যতœ আত্তি করে বড় করেছে ফসল। সে ঘাম ঝরানো ফসল এখন ঘরে তোলার জন্য শুরু হয়েছে কাটাই মাড়াই। যারা আগাম লাগিয়েছিল তাদের বেশীরভাগ ধান গোলায় উঠেছে। বাজারেও নতুন ধান আসতে শুরু করেছে। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাযায়, এবার ধানে গত বছরের চেয়ে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে দু’টাকা আর চালে পাঁচ টাকা। সরকার ধান কাটা শুরু হবার আগে ধান চাল কেনার মূল্য নির্ধারন করে দিয়েছে। গত ২ মে থেকে তা শুরু হয়েছে। এবার সরকারীভাবে নয় লাখ মে:টন চাল আর দেড় লাখ মে:টন ধান কেনার জন্য মিলার আর সরবরাহকারীদের সাথে চুক্তি করেছে। প্রতি কেজি চাল ৩৮ টাকা আর ধান কিনবে ২৬ টাকায়। মাঠ পয্যায়ে থেকে প্রাপ্ত খবরে জানাযায় এবার গড় ফলন হচ্ছে বিঘাপ্রতি ১৮ থেকে ২২ মন। প্রত্যাশিত ফলনে কৃষক খুশী। কিন্তু তাদের এ মুহুর্তে ভাবনায় ফেলেছে হঠাৎ হঠাৎ ঝড়বৃষ্টি। যদিও ফি বছরতো খরা বন্য ঝড়বৃষ্টিকে মানিয়ে নিয়ে তাদের আবাদ করতে হয়। এবার প্রকৃতির বিরুপ আচরনের কারনে সবাই ক্ষতি হবার আগেই ঘরে ফসল আনার চেষ্টা করছে। ফলে বেড়েছে ধান টাকা শ্রমিকের চাহিদা। বেড়েছে শ্রমিকের মজুরী। যেখানে চারশো টাকা রোজে ধান কাটা যেত এখন ক্ষেত্র বিশেষে পাঁচশো টাকা দিতে হচ্ছে। এতে করে উৎপাদন ব্যায় বাড়ছে।
তার পরও নতুন ধানে স্বপ্ন দেখছে কৃষক। ফসলের সাথে মিতালি করেই রয়েছে কৃষান কৃষানীর সুখ দু:খ আর স্বপ্ন। এই ধান বেচেইতো সামনে বড় উৎসব ঈদ পালন করবে। আর ঈদ মানেতো খুশী। কৃষি সম্প্রসারন বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানান, বৃষ্টি বানে ক্ষতিগ্রস্তদের খোজ খবর নেয়া হচ্ছে। বোরো ধানের আবাদ জমিতে তো বটে। এর বাইরেও পদ্মা যমুনা তিস্তার বিশাল বালিচরের পলিতে ও শুকিয়ে যাওয়া নদনদীর বুকে আবাদ ভাল হয়েছে। যা কৃষি বিভাগের হিসাবের খাতায় নেই। সব মিলিয়ে এবারের বোরোর সোনালি ধান ফলনের সোনালি স্বপ্ন দেখাচ্ছে। আমাদের বিভিন্ন ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনে এমন চিত্র ফুটে উঠেছে।
যশোর ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ সংবাদদাতা মিজানুর রহমান তোতা জানান, যশোরে এবার বোরোর আবাদ প্রত্যাশার চেয়ে ভাল হয়েছে। যশোর অঞ্চলে চার লাখ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারন উপ-পরিচালক জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে ষাটভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। গড় ফলন উফসী জাতের ৩ দশমিক ৬৭ মে:টন। আর হাইব্রীড পাঁচ মে:টন চাল। আর ক’দিনের মধ্যে পুরো জমির ধান কাটা নহলে উৎপাদনের চিত্র জানা যাবে।
রাজশাহী ব্যুরো জানান, এবার রাজশাহীতে বোরোর আবাদ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে তিন হাজার হেক্টরে জমিতে বেশী আবাদ হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৬ হাজার ২১৬ হেক্টর। আর আবাদ হয়েছে ৬৯ হাজার হেক্টরের বেশী জমি। তিনলাখ টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যদিও ঝড়বৃষ্টি নোজবøাষ্ট ও অকাল বন্যার কারনে বিল কুমারী ও শিবনদীর পানিতে কিছু ধান নষ্ট হয়েছে। কৃষি বিভাগের মতে তাতে ক্ষতি মোট উৎপাদনের পাঁচ দশ ভাগেরও বেশী হবেনা। এবার প্রত্যাশার চেয়ে ভাল ফলন হবে বরেন্দ্র অঞ্চলে।
আনোয়ারুল হক আনোয়ার, নোয়াখালী থেকে জানান, নোয়াখালীতে এবার বোরো’র বাম্পার উৎপাদন হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৮০% বোরো কাটা সম্পন্ন হয়েছে । আগামী দেড় সাপ্তাহের মধ্যে অবশিষ্ট ধানা কাটা সম্পন্ন হবে । জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত বছর ৬০ হাজার হেক্টরে বোরো চাষ হয়েছে এবং ১লাখ ৫৫হাজার মেট্রিক টন বোরো উৎপন্ন হয়েছে । চলতি বছর ৭৩ হাজার হেক্টরে বোরো চাষ হয়েছে এবং ৩ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে । জেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ নোয়াখালী’র উপ পরিচালক ড. মো. আবুল হোসেন ইনকিলাবকে জানান, এবার বোরো উৎপাদনে টার্গেট অর্জিত হয়েছে ।
বগুড়া ব্যুরো প্রধান ও বিশেষ সংবাদদাতা মহসিন আলী রাজু জানান, বোরোর ভরা মওশুমের শুরু থেকেই বগুড়ায় লাগাতার ঝড় , শিলা বর্ষণ ও ভারি বৃষ্টির কারণে ব্যহত হচ্ছে ধান কাটার কাজ । এছাড়াও কৃষি শ্রমিকদের উচ্চ পারিশ্রমিকের কারণে বেশ বিপদে পড়েছে বগুড়ার চাষীরা । ফলে মাঠের পাকা ধান মাঠেই নষ্ট হতে চলেছে । জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলার ১২ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৭০ মেট্রিক টন। তবে নিচু জমিতে টানা বর্ষণে পাকা, আধাপাকা ধান গাছ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়া ঝড়ো বাতাসে বিভিন্ন এলাকায় ধান গাছ মাটির সাথে মিশে গেছে। ধান মাটিতে শুয়ে পড়ায় কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম ব্যুরো থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইরি-বোরোর ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকের ঘরে ঘরে এখন ধান তোলার উৎসব। আবাদে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। এবার ফলনেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা কৃষি বিভাগের। দেশের অন্য এলাকার মতো চট্টগ্রাম অঞ্চলেও কালবৈশাখীর সাথে ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছে। তবে তা বোরোর কোন ক্ষতি করেনি এখনো। সামনের দিনগুলোতে ভারী বর্ষণ হলে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন চাষিরা।
চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবার কৃষকরা বোরো আবাদে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেন। আবহাওয়া ছিলও অনুকূলে। সার-বীজ আর বালাই নাশকও মিলেছে যথা সময়ে। গেল বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় সেচের পানিরও সংকট ছিলো না। একই কারণে ছিলো না কর্ণফুলীর দুই পাড়ে লোনা পানির আগ্রাসন। এসব কারণে আবাদ হয়েছে বেশি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে দশ শতাংশ জমিতে বেশি আবাদ হয়েছে। এবার পাঁচ জেলায় রের্কড পরিমাণ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৮২ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরোর আবাদ হয়। বেশির ভাগ জমিতে হাইব্রিড জাতীয় ধানের আবাদ হয়। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ লাখ ৬২ হাজার ১১৯ মেট্রিক টন (চাল)। যা এযাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। গতকাল রোববার পর্যন্ত এই অঞ্চলের পাঁচ জেলায় ৭৫ শতাংশ বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। এসময়ে ফলন পাওয়া গেছে ৭ লাখ ৭৭ হাজার ১০৭ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগের হিসাবে এবার উৎপাদনেও লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। হাইব্রিড জাতের বোরোর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিলো প্রতি হেক্টরে ৪.৭ মেট্রিক টন। আর ফলন পাওয়া যাচ্ছে ৪.৭৫ মেট্রিক টন। উচ্চ ফলনশীল বা উফশী জাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৩.৯২, ফলন মিলছে ৩.৭৮ মেট্রিক টন। আর স্থানীয় জাতের ধানের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১.৯৪ এর বিপরীতে ফলন মিলছে ২.৬২ মেট্রিক টন। চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৫ জেলার মধ্যে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও কক্সবাজার জেলায় বোরোর ফলন ঘরে তোলা প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে চট্টগ্রামে এখনও ৫৫ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আবুল হোসেন তালুকদার ইনকিলাবকে বলেন, এবার বোরোর আবাদ এবং ফলনে চট্টগ্রাম অঞ্চল সারা দেশের মধ্যে সেরা হয়েছে। তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত ফলনের যে হার তা অব্যাহত থাকলে ফলন এবার অতীতে সকল রের্কড ছাড়িয়ে যাবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং যথাসময়ে সার, বীজ ও বালাই নাশক সরবরাহ নিশ্চিত করায় এই সাফল্য এসেছে। এই জন্য তিনি কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পুরোপুরি সেচনির্ভর এই আবাদের প্রতি এখন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। এই অঞ্চলের কৃষকরা এখন আর কোন জমি পতিত রাখতে চান না। এটি দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য একটি ইতিবাচক।
চট্টগ্রামের উপ-পরিচালক মোঃ আমিনুল হক চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, এবার এখনও পর্যন্ত চট্টগ্রামে বড় কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। কালবৈশাখীর সাথে মাঝে মধ্যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে বোরোর কোন ক্ষতি হচ্ছে না। তবে আগামী দিনগুলোতে ভারী বর্ষণ অথবা ঝড় হলে পাকা ধানের ক্ষতি হতে পারে। পাহাড়ি ঢল হলে বোরোর তেমন ক্ষতির আশঙ্কা নেই। এই জেলার ১৪টি উপজেলায় এখনও অর্ধেকের মতো ধান মাঠে রয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, দেশের অন্যতম খাদ্যভান্ডার হিসাবে পরিচিত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলসহ এই জেলার প্রায় প্রতিটি এলাকায় ভাল ফলন হয়েছে।
মাহফুজুল হক আনার দিনাজপুর থেকে জানান, ক’দিন আগেও মাঠে মাঠে ধানের দোলা থাকলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে বেশ খানিকটা ক্ষতি হয়েছে। লেট ভ্যারাইটি অঞ্চল হিসাবে দিনাজপুর অঞ্চলের ধান রোপন থেকে কাটা মাড়া একটু দেরীতেই হয়ে থাকে। কিছু কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হলেও পূরো দমে এখনো শুরু হয়নি। স্মরণাতীতকালের বন্যার মত এবার স্মরণাতীতকালের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে দিনাজপুর জেলায় ১ লাখ ৭৪ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবাদকৃত জমি থেকে ৬ লক্ষ ৮৩ হাজার মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু লাভ নেই কারন বাজারে ধানের দাম কমে গেছে। মৌসুমের শুরুতে ভারত থেকে লক্ষ লক্ষ টন চাল ঢুকছে বাংলাদেশে। ফলে ইরি-বোরো মৌসুমের সুফল পূরোটাই বরাবরের মত ভারতের কৃষকেরা ভোগ করছে। ব্যবসায়ীরা বলছে এখন চাল আমদানী বন্ধ না করা হলে বাংলাদেশের কৃষক মরবে আর ভারতীয় কৃষকেরা লাভবান হবে। কৃষকদের রক্ষায় দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া জরুরী বলে ব্যবসায়ীরা মত প্রকাশ করেছে।
সিলেট অফিস থেকে ফয়সাল আমিন জানান, সিলেট বিভাগে এবার বোরো আবাদ হয়েছে লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি। ফলনও আশাতীত। ৪ লাখ সাড়ে ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে বেরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকল্ওে চাষ হয়েছে ৪ লাখ সাড়ে ৮১ হাজার হেক্টর জমি। এর মধ্যে সিলেট জেলায় চাষ হয়েছে ৮৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর, যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি। মৌলভী বাজারে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ হাজার ৪৭১ হেক্টর, চাষাবাদ হয়েছে ৫৪ হাজার ১২ হেক্টর। হবিগঞ্জে ১ লাখ ১৯ হাজার ২৯৪ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকল্ওে চাষাবাদ হয়েছে ১লাখ ২১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে। বিভাগের সবচেয়ে বেশি ধান চাষেল লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল সুনামগঞ্জ জেলায়, ২ লাখ ১৯ হাজার ২৯৪ হেক্টর। সেখানে আবাদ হয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৭১৯ হেক্টর জমিতে।
নাটোর জেলা সংবাদদাতা আজিজুল হক টুকু জানান, নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মওসুমে জেলায় মোট ৬১হাজার ২শ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয় এবং এ থেকে এবার প্রায় ৪লক্ষ ৩৮হাজার মেট্রিকটন ধানের ফলন আশা করা হচ্ছে। যদিও চলনবিল এলাকায় হঠাৎ বানের পানিতে বেশকিছু জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
নওগা জেলা সংবাদদাতা এমদাদুল হক সুমন জানান, ধান উৎপাদনকারী এলাকা হিসাবে পরিচিত নওগায় চলছে বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের মহোৎসব। কিন্তু গত কয়েক দফায় কাল বৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে সুষ্ঠু ভাবে ফসল ঘরে উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ১ লাখ ৯১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে।
হালিম আনছারী, রংপুর থেকে জানান, রংপুরে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হলেও দাম না থাকায় কৃষকের মুখে হাসি নেই। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে ৪’শ ৮০ থেকে ৫’শ ৫০ টাকায়। কৃষক এবং কৃষি বিভাগের তথ্যানুযায়ী, প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৭ টাকার উপরে, এতে প্রতি মণে উৎপাদন খরচ দাঁড়ায় প্রায় ৭’শ টাকায়। জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ১’শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। এসব জমি থেকে ৫ লাখ ৬৫ হাজার ২’শ ৩০ মেট্রিক টন ধান লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে (নিচু এলাকার) ধান কাটা এবং মাড়াই শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী মাসের মধ্যে এ অঞ্চলে ধান কাটা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।