Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নৌকায় ভোট দিন পরিকল্পিত নগর উপহার দেবো : জাহাঙ্গীর আলম

নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে আমাকে থ্রেট করা হচ্ছে : হাসান সরকার

| প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 

মোঃ হেদায়েত উল্লাহ, টেঙ্গী থেকে : বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার বলেছেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও আমার কর্মী সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে তল্লাশির নামে পুলিশ অহেতুক হয়রানী করছে।
তিনি বলেন, দলের নেতাকর্মীদের হামলা-মামলা, গ্রেফতার করে দমিয়ে রাখা যাবে না। ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে গাজীপুরের জনগণ ব্যালটের মাধ্যমে সকল অবিচারের জবাব দেবে। তিনি আরো বলেন, সরকারের দলীয় প্রশাসন দিয়ে আমার নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করে প্রকারান্তরে আমাকে থ্রেট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাকে থ্রেট করে লাভ নেই, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। কোন হুমকি ধমকিকে আমি ভয় করিনা। গাজীপুরের জনগণ আমার সাথে আছে। ফেয়ার ইলেকশন হলে ভোটে আমাকে কেউ হারাতে পারবে তা আমি বিশ^াস করি না। তিনি শনিবার নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পথসভায় বক্তৃতকালে এসব কথা বলেন। এসব পথসভায় তিনি আরো বলেন, আমি নির্বাচিত হলে এলাকার জ্ঞানী-গুণীদের পরামর্শ নিয়ে ১০০ জনের কমিটি করবো যারা গুরুত্বের ভিত্তিতে ইশতেহার বাস্তবায়নের কাজে সহযোগিতা করবেন। যেটা প্রথমে করা দরকার সেটি প্রথমে করা হবে। ইশতেহারে বিশ^বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে তিনি বলেন, আমি টঙ্গী-গাজীপুরে প্রায় অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করেছি। এসব প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা এখন দেশ-বিদেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছে, ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হচ্ছে। আমি মির্জাপুর কলেজ করেছি এই এলাকার কলা, কাঁঠাল বিক্রি করা টাকায়, বাঁশ বিক্রির টাকায়। ভালো কাজে এই গাজীপুরের মানুষের সহযোগিতা ও ভালোবাসা আগেও পেয়েছি ভবিষ্যতেও পাবো ইনশাল্লাহ। তিনি বলেন, এখন গাজীপুরের জমির দাম ২০ লাখ টাকা কাঠা, এখানকার অনেকেই ৫-৭ কাঠা করে জমি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। নির্বাচিত হলে বিশ^বিদ্যালয় করা কোন বিষয় নয়।
হাসান উদ্দিন সরকার শনিবার দিনব্যাপী কোনাবাড়ি অঞ্চলে গণসংযোগ ও পথসভা করেন। তিনি সকাল ৯টায় সাবেক কোনাবাড়ি ইউনিয়নের রাজাবাড়ি থেকে গণসংযোগ ও পথসভা শুরু করেন। শনিবারের নির্ধারিত কর্মসূচী অনুযায়ী তিনি পর্যায়ক্রমে কাদের মার্কেট, কুদ্দুস নগর, কেয়া স্পিনিং, মেডিটেক্স, জেলখানা গেট, মাহবুব সুপার মার্কেট, কলেজ গেট, বাগিয়া পুকুর পাড়, নছের মার্কেট, মিতালী ক্লাব, আমবাগ তেতুল তলা, সর্বশেষ রাত সাড়ে ৭টায় বিসিক ১ নম্বর গেটে পথসভা করেন। এসব পথসভায় তার সাথে ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমদ আজম খান, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ও ধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহবায়ক সাবেক এমপি ফজলুল হক মিলন, সাধারণ সম্পাদকধানের শীষ প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা হেফাজতে ইসলামের যুগ্ন সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন, মহানগর মহিলাদলের সভানেত্রী শিরিন চাকলাদার, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক সেলিম হোসেন, বিএনপি নেতা সাজ্জাদুর রহমান মামুন, কোনাবাড়ি সাংগঠনিক থানা বিএনপির সভাপতি ইদ্রিস আলী, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, শ্রমিকদল সভাপতি আব্দুল বারেক, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, ছাত্রদল সভাপতি বাবুল হোসেনসহ ২০ দলীয় জোটের নেতারা।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ধানের শীষের মিডিয়া সেলের প্রধান সমন্বয়কারী ডা. মাজাহারুল আলম জানান, শনিবার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বাসন এলাকায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মো. নাসির উদ্দিন ধানের শীষের পক্ষে পথসভা করেছেন। এ সময় তার সাথে ছিলেন গাজীপুর সদর থানা বিএনপিসাধারণ সম্পাদক সুরুজ আহমদ ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন। এছাড়া ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শ্যামা ওয়াহেদ, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক এমপি শাহ শহীদ সারওয়ার, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে অ্যাডভোকেট নুরুল কবির শরিফ, আসাদুজ্জামান সোহেল, হারুনুর রশিদ তপন লিফলেট বিতরণ করেন। ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন আলী, ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মুরতাজুল করিম বাদরু, নুরুল ইসলাম নয়ন, প্রভাষক বশির উদ্দিন, রাশেদুল ইসলাম কিরণ, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য সেলিম রেজা হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা আনিসুর রহমান, জয়নাল আবদীন তালুকদার গণসংযোগ করেন। এছাড়া বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কেন্দ্রীয় নেতা কৃষিবীদ হাসান জাকির তোহিন, শাহাদাত মো. বিপ্লব, এনামুল হক, ইলিয়াস হাবীব, তৌহিদুল ইসলাম, আনোয়ারুজ্জামান, ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজা উল্লাহ-সহ বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের লিফলেট বিতরণ করেন। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় নেতা শামসুল আলম তোহা নগরির ৬ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।
এদিকে, আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম শনিবার সকাল থেকে পুবাইল এলাকার ৩৯, ৪০, ৪১ এবং ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন। এসময় মহাজোট নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সাধারণ ভোটারগণ জাহাঙ্গীরের পথসভায় যোগ দেন। সকাল সাড়ে ৯ টায় ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের সুকুন্দিরবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পথসভার মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেন। পরে হায়দরাবাদ, মেঘডুবি, তালুটিয়া, হারবাইদ মোড়, হারবাইদ নন্দিবাড়ি, মাজুখান, কুদাব, বিন্দান, পুবাইল উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গন, নওগাঁ, পুবাইল মাদ্রাসা মাঠে পথসভায় বক্তব্য দেন। গাজীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটির সদস্য মো. আখতারউজ্জামান কয়েকটি পথসভায় বক্তব্য রাখেন।
পথসভায় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি নিজে কাজ পছন্দ করি। বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে একটি স্বচ্ছল সমাজ গঠনের উদ্যোগ নিব। আমি নির্বাচিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মাদকমুক্ত সমাজ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দেব। আমাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করুন, আমি আপনাদের একটি পরিকল্পিত নগর উপহার দিব।’
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, টঙ্গী থানা আওয়ামী লীগর সাধারণ সম্পাদক মো. রজব আলী, কাউন্সিলর মো. আজিজুর রহমান শিরিষ, কাউন্সিলর মো. বিল্লাল হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মো. জাহিদ আল মামুন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কাশেম, সদস্য আলী হোসেন মাষ্টার, মহানগর যুবলীগ যুগ্ম আহŸায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, পুবাইল আ. লীগ নেতা মো. মাসুদ, পুবাইল ইউনিয়ন আ. লীগের ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক এড মো. মোজিবুর রহমান, বন বিভাগের জিপি রেজাউল করিম রেজা, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটির পরিবার পরিকল্পনা ও জনসংখ্যা বিষয়ক যুগ্ম সম্পাদক মো. নিজাম উদ্দিন সরকার, পুবাইল ইউনিয়ন সভাপতি আশরাফ হোসেন, মহানগর যুব সংহতির সভাপতি জাকির হোসেন, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র টঙ্গী আঞ্চলিক কামিটির সা. সম্পাদক শ্যামলাল দাস প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষকে নিরাপত্তাহীন করবে : ড. শাহদীন মালিক
স্টাফ রিপোর্টার : সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক বলেছেন, ডিজিটাল আইনের নামে অপরাধ সংক্রান্ত ধারাগুলো সবস্তরের মানুষের জন্য ভয়াবহ ভীতিকর অবস্থায় সৃষ্টি করছে। ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা ও চেতনা বা অনুভূতিতে আঘাতের নামে এসব আইন তৈরি করা হলেও বাস্তবে তার পরিপন্থী হিসেবে কাজ করবে। নতুন করে শাস্তি বাড়াতে সরকার এসব আইন তৈরি করছে। এ আইন মানুষকে নিরাপত্তাহীন করে তুলবে। গতকাল রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) মৌলিক অধিকার সুরক্ষা কমিটি আয়োজিত ‘মৌলিক অধিকার ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। আলোচনা সভায় ব্যারিষ্টার সারা হোসেনসহ বিভিন্ন আদালতের আইনজীবী ও সমাজকর্মীরা বক্তৃতা করেন।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, সংবিধানে জরুরি অবস্থা জারি করার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টকে দেয়া হলেও নতুন আইনের মাধ্যমে পুলিশকে সেই ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে। তারা চাইলেই পুরো দেশকে অচল করে দিতে পারবে। তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল আইনের মাধ্যমে মানুষের বাক স্বাধীনতা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সরকার প্রধানমন্ত্রীর সম্বন্বয়ে ১১ সদস্য বিশিষ্ট্য ডিজিটাল কাউন্সিল তৈরি করে তা নিশ্চিত করা হবে। ব্যারিষ্টার সারা হোসেন বলেন, ৫৭ ধারা আইনের মাধ্যমে মানুষের নিরাপত্তায় বিঘœ ঘটবে। যদিও এ আইন পরিবর্তন করতে গণমাধ্যম কর্মীরা নানাভাবে দাবি জানিয়ে আসছেন। এ আইনের দ্বারা সবস্তরের মানুষের বাক স্বাধীনতা রুদ্ধ হবে। তাই শুধু সাংবাদিকদের নয়, সবার সঙ্গে আলোচনা করে এ আইনের সংশোধন করতে হবে। নারী পক্ষ সংগঠনের আহŸায়ক শিরিন হক বলেন, ৫৭ ধারা আইনটি মন্ত্রী পরিষদ থেকে বর্তমানে সংসদে বিল আকারে পাঠানো হয়েছে। হাসি ঠাট্টার মাধ্যমে এ আইনটি যাতে পাশ হতে না পারে সে বিষয়ে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। ##

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ