পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ফারুক হোসাইন : দেশে সত্যিকার অর্থে গণতন্ত্র চায় এমন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে যাচ্ছে বিএনপি। ‘গণতান্ত্রিক মঞ্চ’ বা এরকম কোন একটি নামে বৃহত্তর এই ঐক্য গড়ে তোলার লক্ষে কাজ করছে দলগুলো। এতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল ছাড়াও নতুন করে আরও ১২টি রাজনৈতিক দল যুক্ত হবে। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রাথমিক আলোচনা শেষ হয়েছে। আরও কিছু ছোটখাট বিষয়ে আলোচনা করেই রমজানের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা আসতে পারে বলে বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন। গতকাল (শুক্রবার) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের বর্ধিত সভায় এ বিষয়ে আলোচনাও হয়েছে বলে বিএনপি সূত্রে জানা যায়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, আগামী দিনের আন্দোলন-সংগ্রামের কৌশল নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। দলের নেতারা বেশ কিছু পরামর্শ ও প্রস্তাব দিয়েছেন। সেগুলো নোট করা হয়েছে। পরবর্তীতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সাথে বসে সেসব বিষয়ে আলোচনা করে চুড়ান্তভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে আলোচনা করে জানাবেন। এছাড়া বৈঠকে বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলেও জানান এসব নেতা। তারা বলেন, বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার জন্য অনেক আগে থেকেই আমরা কাজ করছি। বিশেষ করে সত্যিকার অর্থে দেশে গণতন্ত্র চায় এমন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা অনেকদিন ধরেই চলছে। আলোচনা এখন একটা পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। কারা কারা এই ঐক্যে থাকবে জানতে চাইলে বিএনপির এক শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ২০ দলীয় জোট তো ইতোমধ্যেই আছে, এর সাথে যুক্ত হবে ড. কামাল হোসেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আ স ম আব্দুর রব, মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরও বেশ কিছু রাজনৈতিক দল। রোজার পরেই আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে বলে তিনি জানান।
গণতান্ত্রিক মঞ্চে বিদ্যমান ২০ দলীয় জোটের বাইরেও বেশ কিছু দল যুক্ত হবে বলে বিএনপি ও যুক্ত হতে আগ্রহী দুলগুলো সূত্রে জানা যায়। বিএনপির এক সিনিয়র নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল ইনকিলাবকে জানান গণতান্ত্রিক মঞ্চে ৩২টি দল থাকবে। ২০ দলীয় জোট ছাড়াও এতে আরও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ১২টি দল যুক্ত হবে। এর মধ্যে সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের গণফোরাম, সাবেক প্রেসিডেন্ট এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিকল্পধারা বাংলাদেশ, আ স ম আব্দুর রবের জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) মাহমুদুর রহমান মান্নার নাগরিক ঐক্য, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাম-গণতান্ত্রিক ধারার ৩টি দল, ধর্মভিত্তিক ২টি দল ও নিবন্ধিত ২টি ছোট দল।
বৃহত্তর ঐক্যের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ইনকিলাবকে বলেন, আমরা সব সময় চাই সকল গণতান্ত্রিক দলগুলো দেশের গণতন্ত্রের স্বার্থে একসাথে যুক্ত থাকতে। এজন্য বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে এবং এই ঐক্যের পরিধি বৃদ্ধি করতে আমরা সহায়ক শক্তিগুলোর সাথে আলোচনা করছি।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী ইনকিলাবকে বলেন, বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলতে অনেকগুলো রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা চলছে। ২০ দলীয় জোটের সাথে আরও ১২টি গণতান্ত্রিক সমমনা দল যুক্ত হয়ে এই ঐক্য গড়ে তোলা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। ইতোমধ্যে কাজ চলছে খুব শিগগিরই এটি দৃশমান হবে বলে তিনি জানান।
সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে জাতীয় ঐক্যের বিষয়ে সরকারবিরোধী দলগুলোর কাছে প্রস্তাব দেয় বিএনপি। কিন্তু সে সময় তারা বৃহত্তর ঐক্য গঠন করতে পারেনি। তবে অধিকাংশ দল ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করায় বিএনপি এটিকে তাদের সফলতা হিসেবে দেখে। পরে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নির্দেশে আবারও সরকারবিরোধী দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা। পাশাপাশি বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে জোর দেন দলটির চেয়ারপারসনসহ সিনিয়র নেতারা। এ নিয়ে প্রায় আড়াই বছর ধরে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে দলটি। একাধিকবার অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন বিএনপি নেতারা।
সূত্র জানায়, সরকারবিরোধী দলগুলোর বৃহত্তর ঐক্য গঠন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংকেতও পেয়েছে দলটি।
ঐক্যে আগ্রহী দলগুলোর নেতারা বলছেন, দেশে সত্যিকার অর্থে কোনো গণতন্ত্র নেই। এখানে বিরোধী কোনো দলকে তাদের মতপ্রকাশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কোনো নির্দিষ্ট দলের বিরুদ্ধে এ ঐক্য নয়, এটি হবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশের স্বার্থের জন্য। পাশাপাশি তারা মনে করছেন, জাতীয় নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করতে সর্বদলীয় ঐক্যের বিকল্প দেখছেন না তারা।
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, এই সরকার কতটা নীতিহীন এবং কতটা স্বৈরশাসক হতে পারে তা এই সরকারের আচরণই প্রমাণ করে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর আমাকে বলেছিল আর একটি জাতীয় নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু এর পর ২০১৪, ১৫, ১৬, ১৭ গেল নির্লজ্জভাবে তারা এখনও দেশ চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের লজ্জা নেই, নীতি নেই। এরা আমাদের ওপর বসবে, আর আমরা মেনে নেব? এজন্য দলমত নির্বশেষে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ না হলে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকলে সব কিছু সম্ভব।
নাগরিক ঐক্যের আহŸায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই। এমনকি তা প্রবিধান করার জন্য কোনো আইন নেই। লড়াই করার মতো লোক লাগবে। একমাত্র গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ব্যবস্থাই এ সমস্যা থেকে উত্তরণ করবে দেশকে। বর্তমান সরকার যে রকম সর্বগ্রাসী হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য হওয়া দরকার। এজন্য সকল দলকে গণতন্ত্রের সার্থে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ যখন দেখবে দলগুলো এক হয়েছে, তখন সরকার এমনিতেই দুর্বল হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।