পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গির মতো মাদক প্রতিরোধেও সফল হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী মাদকের ভয়াল ছোবল থেকে ছেলেমেয়েদের রক্ষায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রেখে উন্নয়নের ধারা বজায় রাখার পাশাপাশি দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে যেতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে কুর্মিটোলা সদর দপ্তরে র্যাবের ১৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি র্যাবকে অনুরোধ করব, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যেমন আমরা অভিযান চালিয়ে সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি, তেমনি এখন মাদকের বিরুদ্ধেও এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদক যারা তৈরি করে, যারা বিক্রি করে, যারা পরিবহন করে এবং যারা সেবন করে, সকলেই সমানভাবে দোষী। এটাই মাথায় রাখতে হবে এবং সেভাবেই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন,মাদকবিরোধী অভিযানে ইতিমধ্যেই যথেষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে এর ছোবল থেকে দূরে থাকতে পারে, তার ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে নিতে হবে। এ ব্যাপারে বিশেষভাবে ভূমিকা পালনের জন্য প্রধানমন্ত্রী সবার প্রতি আহŸান জানান।
তিনি আরো বলেন,মাদকের বিরুদ্ধে বড় বড় অভিযানে র্যাবের সাফল্যের জন্য এর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই এবং এই অভিযান অব্যাহত রেখে মাদকমুক্ত সমাজ গঠনে র্যাবকে আরো কঠোর হতে হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানে সন্ত্রাস, জঙ্গি দমন, মাদক নিয়ন্ত্রণ, অপহরণ, জাল-জালিয়াতিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় র্যাবের বিভিন্ন ভূমিকা সম্পর্কে এবং সুন্দরবনে র্যাবের অভিযানে ২০টি জলদস্যু বাহিনীর ২১৭ জন সদস্যের আত্মসমর্পণ এবং তাদের সাধারণ জীবনে পুনর্বাসন সম্পর্কিত পৃথক দুটি ভিডিওচিত্র পরিবেশন করে র্যাব। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা,সংসদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান,পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিজিবি মহাপরিচালক, সরকারের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, র্যাব ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ র্যাবের সব স্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে র্যাবের একটি সুসজ্জিত বাহিনী তাঁকে গার্ড অব অনার প্রদান করে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উত্তরা আশকোনা এলাকায় ৮ দশমিক ৫৬ একর জমির ওপর অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত র্যাব সদর দপ্তর কমপ্লেক্স নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
শহীদ র্যাব সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে র্যাব সদর দপ্তরে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ ‘প্রেরণা ধারা’র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদক এমনভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে যে আমাদের সমাজে একেকটা পরিবার, কোনও পরিবারে মাদকাসক্ত সন্তান থাকলে এর থেকে দুঃখের আর কিছু হতে পারে না।
গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসহ সব বাহিনীর পক্ষ থেকেই ভূমিকা রাখার আহŸান জানান তিনি।
একইসঙ্গে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত রাখার আহŸান জানান প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম হলেও এই ধর্মের নাম করে কিছু মানুষকে বিভ্রান্তির পথে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি কোমলমতি ছেলেরা, উচ্চশিক্ষিত, এমনকি যারা যথেষ্ঠ অর্থশালী, সম্পদশালী পরিবারের সদস্য তারাও এই বিভ্রান্তির বেড়াজালে পড়ে যায়। তাদের ভেতর একটা ধারণা জন্মে যায় যে, তারা মানুষ হত্যা করতে পারলেই নাকি একেবারে বেহেস্তে চলে যাবে। এই ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের সম্ভাবনাময় অনেক মেধাবী সন্তানেরা বিপথে চলে যাচ্ছিল।
এই বিপথগামীরা দেশে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেছিল তার বিরুদ্ধে র্যাব, গোয়েন্দা সংস্থা ও বিভিন্ন বাহিনীর বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,জঙ্গি দমনে যে কাজগুলি র্যাব করেছে, সেটা আরো অব্যাহত রাখা দরকার। কারণ আমরা ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি যে, বাংলাদেশ হবে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ। কোনও মতেই কোন ধরনের জঙ্গিবাদকে আমরা প্রশ্রয় দেব না।
তিনি বলেন, এজন্য গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খা রক্ষাকারী সংস্থা থেকে শুরু করে, সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড, র্যাব সকলে সম্মিলিতভাবে এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে যেন বাংলাদেশকে কখনো কেউ জঙ্গির দেশ, সন্ত্রাসের দেশ এই ধরনের অপপ্রচার না দিতে পারে।
দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাÐের তথ্য তুলে ধরে এই ধারা অব্যাহত রাখতে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার উপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী।
এক্ষেত্রে র্যাবের ভূমিকা মনে করিয়ে দিয়ে এই বাহিনীর বিভিন্ন সফলতা ও কর্তব্যনিষ্ঠার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
দেশের এই ‘এলিট ফোর্সকে’ আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যে সমস্ত র্যাব সদস্যরা আত্মত্যাগ করেছেন তাদেরকে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।