পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সম্প্রতি তিনটি দেশ সফর শেষে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য বিকারগ্রস্ত মনেরই বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন-আগামী নির্বাচনে কোন পার্টি আসলো বা আসলো না তাতে কিছু আসে যায় না, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। তিনি আরও বলেছেন-আদালতের সাজা পেয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে, এখানে সরকারের কিছু করার নেই। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য বিকারগ্রস্ত মনেরই বহি:প্রকাশ। এটা স্বৈরশাসকের কন্ঠস্বর। কারণ স্বৈরশাসক’রা জনগণকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, কারণে অকারণে জ্ঞান দেয়। শেখ হাসিনা সেটাই করেছেন। তাঁর বক্তব্য হিংসায়-প্রতিহিংসায় আকন্ঠ আপ্লুত। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানকে নিয়ে দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই-আপনি ৮১ সালে দলের সভানেত্রী কিভাবে এবং কোন দেশে থেকে হয়েছিলেন সেটা কি আপনার মনে আছে? তখন আওয়ামী লীগে অনেক বর্ষিয়ান নেতা ছিলেন, তাদেরকে ডিঙ্গিয়ে আপনি কিভাবে দলের সভাপতি হয়েছিলেন। আপনি তো আওয়ামী লীগের সদস্যও ছিলেন না। তারেক রহমান দলে ধাপে ধাপে সদস্য, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এবং পরে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন। তিনি ধারাবাহিকভাবেই জাতীয় রাজনীতির আজকের অবস্থানে উন্নীত হয়েছেন। আপনার এবং আপনার আন্দোলনের ফসলদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত-নির্যাতন-নিপীড়ণ সহ্য করেও তারেক রহমান নিজস্ব আদর্শে অটল থেকে জনগণের মধ্যে যে আস্থার জায়গাটি পেয়েছেন সেজন্যই প্রধানমন্ত্রীর অত্যুগ্র হিংসা তারেক রহমানের দিকে ধেয়ে আসে। আর আপনি কোন রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ব্যতিরেকেই সরাসরি আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। প্রধানমন্ত্রী আয়নার দিকে তাকিয়ে কথা বলেন না, এটাই তাঁর সমস্যা।
দেশে আর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হবে না মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার যেভাবে ক্ষমতায় আসীন হয়েছে সেটির পূণরাবৃত্তির দিবাস্বপ্ন আওয়ামী নেতারা দেখতে পারেন। কিন্ত এদেশে আর একতরফা জাতীয় নির্বাচন হবে না। তাই শেখ হাসিনা যতই মহাপরিকল্পনা করুন না কেন, সেই নীলনকশার নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে পারবেন না। পরিবর্তনের ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্যের আস্ফালন অন্তর্গত ভীতিরই বহি:প্রকাশ। আদালতকে ব্যবহার করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, মিথ্যা সাজানো মামলায় সাজা দিয়ে দেশনেত্রীকে কারাবন্দী করে রেখেছেন। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলছেন, খালেদা জিয়ার সাজা আদালতের ব্যাপার। কিন্তু আদালত নয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রায় এটি। প্রধানমন্ত্রী আপনার কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, যে দেশের প্রধান বিচারপতিকে বন্দুকের নলের মুখে দেশ ছাড়তে হয়, পদত্যাগ করে দেশের বাইরে নির্বাসিত জীবন যাপন করতে হয়, সেখানে আদালতের স্বাধীনতা থাকে কি করে? আপনি যতই মিথ্যাচার করুন না কেন, আপনার কথা জনগণ বিশ^াস করে না। আপনি যতই কুটকৌশল করেন না কেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এবং সব দলের অংশগ্রহণে।
কোটা আন্দোলন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে ঐতিহ্য বজায় রেখেছেন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- কোটা আন্দোলনে যারা ছিল তাদের ছবি-টবি সংরক্ষণ করা আছে। তখন দেখা যাবে, ওই জেলার কারা কারা আন্দোলনে ছিল সেটিও আমরা দেখব। তারপর যদি কান্নাকাটি করে তখন আমাদের কিছু করার থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এধরণের বক্তব্য নতুন কিছু নয়। এই বক্তব্যে তিনি তাঁর ঐতিহ্যই বজায় রেখেছেন। এ জাতির জন্য লজ্জা এই যে, তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিও প্রধানমন্ত্রীর জিঘাংসা কত তীব্র হতে পারে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সড়ক দূর্ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জনগণকে নিয়ে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি বলেছেন-যারা সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হয় তারাই এর জন্য দায়ী। কেবলমাত্র জবাবদিহিহীন সরকার প্রধানের পক্ষেই এমন কথা বলা সম্ভব। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় এমন সরকার প্রধানের পক্ষেই এ ধরণের বক্তব্য মানায়। প্রধানমন্ত্রী আপনি কি ভুলে গেছেন যে, আপনার কেবিনেটের মন্ত্রী বলেছিলেন-রাস্তায় গরু-ছাগল দেখতে পেলেই তাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া হবে। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য দায়ী হচ্ছে মুলত: আপনার দুুর্বিনীত সন্ত্রাসী সরকার। সড়ক দূর্ঘটনার জন্য দায়ী খানাখন্দে ভরা সড়ক মহাসড়ক। প্রধানমন্ত্রী রঙিন চশমা খুলে দেখুন সারাদেশের সড়কের কি বেহাল দশা। কিভাবে আপনার সোনার ছেলেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গোটা পরিবহন ব্যবস্থাকে জিম্মি করে গণপরিবহনে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি এর দায় এড়াতে পারেন না। এর জবাব পাবার সময় হয়ে গেছে। জনগণ এর জবাব নিশ্চয় নিবে।
সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন সারা বাংলাদেশ থেকে দুই সিটিতে নির্বাচন উপলক্ষে অস্ত্রধারীদের মজুদ করছে আওয়ামী লীগ। কারণ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের হাতে হাতে বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি। নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচনী এলাকার বৈধ অস্ত্র জমা নেয়া হয়নি। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়নি। একই সঙ্গে সারাদেশের বৈধ ও অবৈধ অস্ত্রধারীরা দুই সিটিতে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় নির্বিঘেœ অবস্থান নিচ্ছে। বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শাসক দলীয় ক্যাডারদের হুমকি-ধামকি প্রদর্শন, পাঁচটি প্রচার মাইক ভাংচুরের চেষ্টা ও প্রচার কাজে নিয়োজিত ইজিবাইক আটকে রাখা, মহিলা কর্মীদের ওপর হামলা, প্রার্থী এবং ঢাকা থেকে আগত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের পথসভাকে বাঁধাগ্রস্থ করা হয়েছে। পথ সভার জন্য নির্ধারিত স্থান যুবলীগ কর্মীরা দখলে নিয়ে মহড়া দিয়েছে। বিএনপির মেয়র প্রার্থীর গণসংযোগে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে একাধিকবার। এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসিরউদ্দিন, শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ভিপি জয়নাল আবেদীন, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন ও মুনির হোসেন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।