পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পোশাকসহ ছয় খাতের শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির জন্য গঠন করা নি¤œতম মজুরি বোর্ড আসছে অর্থবছরের বাজেটের আগেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে চায়। তবে ন্যূনতম বেতন কত হবে, এ বিষয়ে এখনও কথা আগায়নি। এর মধ্যে বোর্ডের কাছে শ্রমিকরা সর্বনি¤œ বেতন দাবি করছেন ১৬ থেকে ১৮ হাজার টাকা। তবে পোশাক কারখানা মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সর্বনি¤œ বেতন নির্ধারণ করতে চাইছে ১০ হাজার টাকা। আবার বাজেট পাসের আগেই সুপারিশ না নিয়ে সময় নেয়ার পক্ষে বোর্ডে মালিক প্রতিনিধি তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলছেন, যেহেতু নতুন মজুরি কাঠামো ঘোষণার জন্য ৩১ ডিসেম্বর অবধি সময় আছে, তাই আরও সময় নেয়া যায়। ২০১৩ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয় সবশেষ বেতন কাঠামো। আর শ্রমিকরা ওই কাঠামো অনুযায়ী বেতন পেয়েছিলেন ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে। এর আগের মাসে কার্যকর হওয়া এই মজুরি বোর্ডে প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ হারে বেতন বাড়ার পাশাপাশি পাঁচ বছর পর নতুন বেতন কাঠামো করার কথা বলা ছিল। এই হিসাবে নতুন মজুরি কাঠামো চালু হতে আরও সাত মাস সময় বাকি আছে। তবে সরকারের শেষ বছরে এই বিষয়টি নিয়ে যেন কোনো পক্ষ অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে, সে জন্য সরকার আগেভাগেই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগের পর গত নভেম্বরের শেষ দিকে শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে সরকারকে সম্মতি জানায় পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। আবার চলতি বছরের ডিসেম্বরে বা আগামী জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের ভোট হবে। অক্টোবরে হচ্ছে ভোটের তফসিল। তাই তফসিলের আগেই মজুরি ঘোষণার চেষ্টা চলছে। জানতে চাইলে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, মজুরি বোর্ড গঠন হয়েছে তিন মাস হলো। আর তিন মাসের মধ্যে সরকারকে প্রতিবেদন দিতে হবে। এরপর সরকার ঠিক করবে কত টাকা চূড়ান্ত করা হবে। তৈরি পোশাক ছাড়াও এবার গøাস, অটোমোবাইল, বেকারি ও কনফেকশনারি, অ্যালুমিনিয়াম এবং বেসরকারি নিরাপত্তা কর্মীদের সর্বনি¤œ বেতনও নির্ধারণ করবে এই বোর্ড। এজন্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজের নেতৃত্বে সর্বনি¤œ মজুরি বোর্ড গঠন করেছে সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। প্রথম বৈঠকে শ্রমিকরা তাদের সর্বনি¤œ বেতন ১৬ হাজার টাকা দাবি করছেন। সঙ্গে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। এ বিষয়ে মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যানকে স্মারকলিপিও দেয়া হয়েছে। এতে তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের জন্য মূল বেতন ১০ হাজার টাকাসহ মোট ১৬ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছে। আবার বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি বা ইনক্রিমেন্ট আগের বারের পাঁচ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা, স্থায়ীভাবে রেশনিং ব্যবস্থা চালু, কন্ট্রিবিউটর প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ) ঘোষণারও দাবি জানানো হয়েছে। তবে এ জোটের বাইরে থাকা সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (জি-স্কপ) শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৮ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে। শ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনমান বিবেচনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য এটি নির্ধারণ করা জরুরি বলেও মনে করেন তারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নি¤œতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, নি¤œতম মজুরি ঠিক করতে আমাদের কাজ চলছে। আশা করি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সুপারিশ দিতে পারব। জানতে চাইলে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সবার সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে চূড়ান্ত হবে সর্বনি¤œ বেতন কত হবে। অবশ্যই যা ঘোষণা করা হবে তা বাস্তবায়নের সক্ষমতাও থাকতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।