Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা সঙ্কট এভাবে চলতে পারে না

নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদলের সংবাদ সম্মেলন

| প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী পরিস্থিতিকে একটি মানবিক সঙ্কট এবং মানবাধিকারের সঙ্কট হিসেবে বর্ণনা করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দল বলেছে, সমাধান না করে এই সমস্যা এভাবে ফেলে রাখা যায় না। রোহিঙ্গা ক্যাম্প ঘুরে দেখে গতকাল বাংলাদেশ ত্যাগের আগে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের পক্ষে কুয়েতের স্থায়ী প্রতিনিধি মনসুর আয়াদ আল-ওতাইবি বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের বলেন, যে বার্তা আমরা মিয়ানমার, রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থী আর পুরো বিশ্বকে দিতে চাই, তা হল এই সঙ্কটের অবসান ঘটাতে এবং সমাধানের একটি পথ খুঁজে বের করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এ সময় প্রতিনিধি দলের নেতা নিরাপত্তা পরিষদের চলতি মাসের সভাপতি গুস্তাবো আদোলফো মেসা কুয়াদ্রা ভেলাসকাসও ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাধর পর্ষদ হিসেবে বিবেচিত নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ দেশের প্রতিনিধিসহ ৪০ সদস্যের এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা গত রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ক্যাম্প ঘুরে দেখেন। গতকাল ঢাকা থেকে তারা রওনা হন মিয়ানমারের নেপিদোর উদ্দেশ্যে।
গত বছর অগাস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন থেকে বাঁচতে রাখাইন থেকে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল বাংলাদেশে আসা শুরু হয়ার পর এই প্রথম জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কোনো প্রতিনিধি দল রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলো।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ব্যাপক হত্যা নির্যাতনের মুখে গত আট মাসে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। সুচির দেশের সেনাবাহিনীর ওই খুন-নির্যাতনকে জাতিসংঘ বর্ণনা করে আসছে জাতিগত নির্মূল অভিযান হিসেবে। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের প্রতিনিধিরা রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে এলেও এই সঙ্কটে জাতিসংঘের এই পর্ষদ কীভাবে সম্পৃক্ত হবে তা নিয়ে মিয়ানমারের দুই মিত্র দেশ রাশিয়া ও চীনের ভিন্নমত ছিল। অন্যদিকে লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর ভার বহন করে আসা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই সঙ্কটের দ্রæত সমাধানের উদ্যোগ নিতে তাগিদ দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা পরিষদকে। এই সঙ্কট সময়মত সামাল দেওয়া না হলে তা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি হয়ে উঠতে পারে বলেও সতর্ক করে আসছে বাংলাদেশ।
কুয়েতের প্রতিনিধি মনসুর আয়াদ আল-ওতাইবি এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের বলেন, চীন বা রাশিয়ার দিক থেকে কোনো বাধা তিনি দেখেননি। তারা নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য এবং তারাও আমাদের সাথে আছে। তাদের বক্তব্য দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন এবং এই সঙ্কটের সমাধানে পৌঁছানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। অবশ্য এ সমস্যার সহজ বা তাৎক্ষণিক কোনো সমাধান দেখতে পাচ্ছি না। যত দ্রæত সম্ভব এই সমস্যার সমাধানে সব পক্ষকেই আন্তরিক হতে হবে।
এ বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার শীর্ষে থাকবে মন্তব্য করে কুয়েতের প্রতিনিধি বলেন, এ বিষয়ে আমরা চুপ থাকতে পারি না। নিউ ইয়র্কে ফিরে গিয়ে আমরা বসবো। শরণার্থীদের স্বেচ্ছায়, সসম্মানে, নিরাপদে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তার বাস্তবায়ন কীভাবে দ্রæত করা যায় তা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবো। দ্রæত চুক্তি বাস্তবায়নে তারা সব পক্ষকেই সহযোগিতা করতে চান। আমরা এখানে যা দেখেছি তা গ্রহণযোগ্য নয়। এর একটা সমাধান আমরা দেখতে চাই। এই সমাধান খুব দ্রæত আসবে না। জেন্য সময় প্রয়োজন। আমরা আশা করি, ওই চুক্তি বাস্তবায়িত হবে।
প্রতিনিধি দলের নেতা গুস্তাবো আদোলফো মেসা কুয়াদ্রা ভেলাসকাস বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ। ১৫ সদস্য দেশের সিদ্ধান্তেই বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে তাদের এই সফর। সঙ্কট সমাধানের ধীর গতির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। আমাদের মহাসচিব ইতোমধ্যে একজন বিশেষ দূত নিয়োগ করেছেন। আলোচনা শুরু হয়েছে এবং এই আলোচনা অব্যাহত থাকবে। ##

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ