পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন-রাশিয়া সম্মত
বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার থেকে : মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে (রাখাইনে) রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বেদনাবিধুর উল্লেখ করে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সফররত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা বলেছেন, মিয়ানমার-বাংলাদেশের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সম্পন্ন করা হবে। নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সে লক্ষ্যে রাশিয়া ও চীন একমত পোষণ করেছে। গতকাল রোববার বাংলাদেশে সফররত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরা কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান গুস্তাভো মেজা-চুয়াদ্রার নেতৃত্বে ১৫ সদস্যদের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন চীন, রাশিয়া, যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরা। সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়া, চীনসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে রোহিঙ্গারা যাতে স্বেচ্ছায় নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন সেই লক্ষ্যে কাজ করার অঙ্গীকার করেন নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। কথা বলার আগে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন সফরকারী এই প্রতিনধি দল। সংবাদ সম্মেলনে এ সফর রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
গতকাল সফররত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ টিম। সেখানে তারা অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় চোখের সামনেই বাবা সৈয়দ আলম ও মা সখিনাকে গুলি করে হত্যার দৃশ্য দেখে ছোট ভাই-বোনকে নিয়ে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা কিশোরী আমেনা কান্নায় ভেঙে পড়ে। তাকে বারবার সান্ত¡না দিচ্ছিলেন সফররত দলের প্রধান। তারা কিশোরী আমেনার বাবাসহ রাখাইনে হত্যার শিকার সবার বিচার পেতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ সময় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ২৬ সদস্যকে কাছে পেয়ে স্বজন হত্যার বিচার দাবি করেন রোহিঙ্গারা। নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাও হত্যাকারীর বিচারের আশ্বাস দেন।
তুমব্রু জিরো পয়েন্ট পরিদর্শন শেষে কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যরা। উভয় স্থানেই তারা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিদের কাছে তাদের ওপর চালানো মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্মমতার বর্ণনা দেন।
রোহিঙ্গাদের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে দু’দিনের সফরে গত শনিবার বিকেলে কুয়েত এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে ইরাক থেকে সরাসরি কক্সবাজারে আসেন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই প্রতিনিধি দলটি।
কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে দলটি উখিয়ার ইনানীর রয়েল টিউলিপ হোটেলে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানান, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, শরণার্থী সচিব আবুল কালাম, চট্টগ্রামের রেঞ্জের ডি আইজি এ এইচ এম মনিরুজ্জামান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার ড. একে ইকবাল হোসেন, উখিয়া সার্কেল চাই লাউ মারমা, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে ছিলেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলেই বিশেষ বিমানে প্রতিনিধিদল ঢাকা ফিরে গেছেন। ঢাকায় আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা মিয়ানমার যাবেন।
এদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই প্রতিনিধি দলটিকে স্বাগত জানিয়ে বিভিন্ন ধরণের
ফেস্টুনও প্লেকার্ড বহন করে রোহিঙ্গারা। এছাড়া ১০ দফা দাবী সম্বলিত বড় ব্যানার ও ছাটাঁ হয় বিভিন্নস্থানে।
রোহিঙ্গাদের দাবির মধ্যে রয়েছে, প্রত্যাবাসনের সময় ইউএন সিকিউরিটি ফোর্স রাখা, রোহিঙ্গাদের জাতীয়তার স্বীকৃতিসহ মৌলিক অধিকার দেয়া, প্রত্যাবাসন হতে হবে নিজেদের ছেড়ে আসা ভিটে বাড়িতেই,ক্ষতিপুরণসহ ছেড়ে আসা ভিটেবাড়ি ফেরত দিতে হবে, আরাকানে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠন গুলোর ফ্রি যাতায়াতের সুযোগ দিতে হবে, আটককৃত রোহিঙ্গাদের বিনা শর্তে মুক্তি দিতে হবে ও সরকারী চাকরি হারানোদের চাকরীতে বহাল রাখতে হবে এবং প্রত্যাবাসনে ইউএনসহ আন্তর্জাতিক সংস্থা গুলোকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।