Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুবর্ণ ট্রেনের ছাদে জোড়া লাশ চোখের সামনে দুই বন্ধুর মৃত্যু দেখল শিশু রায়হান

| প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘ওরা দু’জনই ট্রেনের ছাদে নাচানাচি করছিল। আমি তাদের নিষেধ করি। কিন্তু এতেও তারা থামেনি। উল্টো আমাকেও তাদের সাথে নাচতে বলে। হঠাৎ দেখি ওভারব্রিজের সাথে ধাক্কা খেয়ে তাদের দু’জনের মাথা ফেটে যায়। ট্রেনের ছাদে লুটিয়ে পড়ে তারা। সেখানে ছটফট করতে করতে দু’জনই মারা যায়। এ দৃশ্য দেখে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’ এভাবেই দুই বন্ধুর করুণ মৃত্যুর বর্ণনা দেয় শিশু রায়হান (১০)। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা থেকে আসা বিরতিহীন সুবর্ণ এক্সপ্রেসের ছাদে দুই শিশুর লাশের সাথে আহত অবস্থায় রায়হানকে উদ্ধার করে জিআরপি থানা পুলিশ।
পুলিশ বলছে, তারা তিনজনই ভাসমান পথশিশু। নিহত দু’জনের পরিচয় মেলেনি গতকালও। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে দুই লাশের ময়নাতদন্ত হয়। ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকেরা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন, মাথায় আঘাতজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে। রায়হানকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জিআরপি থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে জিআরপি থানার এসআই নুরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, রায়হানসহ ওই দু’জন একসাথে ট্রেনের ছাদে উঠলেও নিহত দু’জনের নাম বলতে পারছে না। রায়হানের বাড়ি জয়দেবপুরে বলে জানিয়েছে সে। তার বাবা-মা কোথায় আছে সে ঠিকানা দিতে পারেনি রায়হান। নিহত দু’জনের মধ্যে একজনের বয়স ১৫, আরেকজনের বয়স ১৪ বলে জানান তিনি।
রায়হানের বক্তব্যের বরাত দিয়ে এসআই নুরুল ইসলাম বলেন, কমলাপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা সুবর্ণ এক্সপ্রেস বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছলে রায়হানসহ ৫ পথশিশু ট্রেনের ছাদে উঠে। ফেনী স্টেশন পার হওয়ার সময় তারা ছাদে লাফালাফি করছিল। এসময় ফুটওভার ব্রিজের সাথে ধাক্কা লেগে ওই দু’জনের মাথা ফেটে যায়। ট্রেনের ছাদেই ছিটকে পড়ে তারা। সেখানে তাদের মৃত্যু হয়। রায়হান সামান্য আহত হলেও ওই দু’জনের মৃত্যু এবং রক্ত দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তবে বাকি দু’জন কোথায় নেমেছে সে ব্যাপারে রায়হান কিছু বলতে পারেনি। এসআই নুরুল ইসলাম জানান, ট্রেনটি মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছলে রায়হানের জ্ঞান ফিরে আসে। সে ট্রেনের ছাদে বসে চিৎকার করে কান্না করতে থাকে। তার কান্নায় লোকজন ছাদে উঠে তাকে উদ্ধার করে। সেখানে সে তার দুই বন্ধুর লাশ দেখিয়ে দেয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ