পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : আবারও পিছিয়েছে দেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের তারিক। সর্বশেষ আগামী ৪ মে এই স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের তারিখ ঘোষণা করা হলেও এখন আগামী ৭ মে সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চ প্যাড থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’ এর ফ্যালকন-৯ রকেটের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে উৎক্ষেপণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। গতকাল (বুধবার) টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট: সম্ভাবনার মহাকাশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমাদের কাছে যতটুকু তথ্য আছে, ৪ তারিখ যে উৎক্ষেপণের তারিখ, তা ঠিক থাকছে না। সম্ভব্য তারিখ হচ্ছে আগামী ৭ মে। তিনি বলেন, উৎক্ষেপণের সময়ে যে পরিবর্তন আসতে পারে, সে কথা আগেই জানানো হয়েছিল। এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ স্থল ফ্লোরিডায় সরকারের ৪২ সদস্যর একটি প্রতিনিধি দল থাকবে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হওয়ার পর জাতীয়ভাবে তা উদযাপন করা হবে। প্রকৃতপক্ষে আমারা যখন স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে শুরু করব তখন নতুন নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে পারব। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট শুধুমাত্র কারিগরি বা ব্যবসার বিষয় নয়, এটি আমাদের গর্বের বিষয়। আমার মনে হয়েছে আমাদের প্রস্তুতি যতটুকু করা সম্ভব ছিল তার কোনটার কোনো কমতি নাই। ভবিষ্যতের ভাবনার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ নিয়ে আমরা কাজ করেছি। এরপর ২, ৩, ৪ নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ এখন অপরিহার্য ভাবনা।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, এখন পর্যন্ত যে তথ্য আছে, তাতে ৭ মে আবহাওয়া অনুকূলে থাকবে বলে আশা করা যায়। আশা করি এটাই চূড়ান্ত হবে, তবে বিষয়টা আবহাওয়ার ওপর নির্ভর করে। আশা করি ৭ তারিখেই হয়ে যাবে; তাও আমরা ৪ থেকে ৫ দিন পর নিশ্চিত হব।
বাংলাদেশের যারা যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইটের ওপর নির্ভর করেন, তাদের বঙ্গবন্ধুতে চলে আসার আহ্বান জানিয়ে বিটিআরসি প্রধান বলেন, যে সময় অপারেশনে যাব, আপনারা যেন আমাদের স্যাটেলাইটে চলে আসেন, কোনো সমস্যা হলে ওভারকাম করার চেষ্টা করব। বিটিআরসি নতুন প্রযুক্তির প্রতি খুবই ওপেন, আপনাদের কোনো প্রস্তাব থাকলে বা সুবিধার বিষয় থাকলে আমরা তা দেখব।
বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট প্রকল্পের পরিচালক মো. মোজবাউজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে গ্রাউন্ড স্টেশনের কাজ শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। এখন কেবল কিছু ‘কানেকটিভিটির’ কাজ বাকি রয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়ার সিনিয়র পলিসি ফেলো আবু সাঈদ খান বলেন, সরকারের দুটি মাত্র কোম্পানি কেরু আর সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লাভজনক। অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান লাভজনক না। এখানে বলা হচ্ছে, আগামী ৭ থেকে ৮ বছরের মধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের বিনিয়োগের পুরো টাকা উঠে আসবে। এটা শুনতে ভাল লাগে। কিন্তু আমরা যদি ক্যাপাসিটি বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বিক্রি করতে না পারি, তাহলে সেলিব্রেশন করে লাভ নেই।
অন্যদের মধ্যে এডিএন টেলিকমের চিফ অপারেটিং অফিসার নাইম মোহাম্মদ ফাজলুন, ব্র্যক ন্যানো স্যাটেলাইট প্রকল্পর পরিচালক খলিলুর রহমান এ গোলটেবিল আলোচনায় অংশ নেন। বিটিআরসি ও টেলিকম খাতের প্রতিবেদকদের সংগঠন টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) এ যৌথ আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন টিআরএনবি সভাপতি সজল জাহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার দে।
স্পেসএক্স এর আগে গতবছর ১৬ ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল। কিন্তু হারিকেন আরমায় ফ্লোরিডায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হলে উৎক্ষেপণ পিছিয়ে যায়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায়। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল দুই হাজার ৯৬৮ কোটি টাকা। তবে খরচ ২০০ কোটির টাকার মত কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। সরকার আশা করছে, এ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের পর বিদেশি স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ বছরে ১৪ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয় হবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০টি বাংলাদেশের ব্যবহারের জন্য রেখে বাকিগুলো ভাড়া দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।