Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাদা দলের নিরঙ্কুশ জয়

রাবির সিনেট নির্বাচন

| প্রকাশের সময় : ২৫ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


রাবি সংবাদদাতা : রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের (রাবি) সিন্ডিকেট, শিক্ষক সমিতিসহ ৭টি ক্যাটাগরিতে শিক্ষকদের ৭০টি পদে সিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ (হলুদ প্যানেল) পদের সংখ্যার দিক দিয়ে এগিয়ে থাকলেও সিন্ডিকেট ও শিক্ষক সমিতিসহ গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিএনপি-জামায়াতপন্থী (সাদা) দলের শিক্ষকরা জয়লাভ করায় এ পদগুলোতে ভরাডুবি হয়ে আ’লীগপন্থী (হলুদ) প্যানেলের শিক্ষকদের। এর কারন হিসেবে কিছু সিনিয়র শিক্ষকদের নির্বাচনের প্রতি অনীহা, কিছুসংখ্যক শিক্ষকের অতিমাত্রায় ক্ষমতা লিপ্সা, সমন্বয়হীনতা, প্রার্থী নির্বাচনে হঠকারিতা, লীয় স্টিয়ারিং কমিটির শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা, তরুণ শিক্ষকরে প্রতি অবজ্ঞা, সিনিয়রদের ব্যক্তিগত গ্রæপিং, ফ্রেশ ইমেজ ও ত্যাগী শিক্ষকদের সুযোগ না দেওয়াসহ নানা কারণকে দাবি করেছেন হলুদ প্যানেলের শিক্ষকরা।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য মতে, ৭০ টি পদের নির্বাচনে সিন্ডিকেট, ডিন, ফাইন্যান্স কমিটি, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি, শিক্ষক সমিতি, শিক্ষা পরিষদ, সিনেটসহ ৭ টি ক্যাটাগরিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ^াসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ হলুদ প্যানেলের শিক্ষকরা ৩৮ টি পদে জয়ী হয়েছেন। আর, জাতীয়তাবাদ ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ^াসী শিক্ষক গ্রæপ (সাদাদল) বিএনপিপন্থী শিক্ষকরা ৩২ টি পদে জয়লাভ করেছেন। তবে সিনিটে শিক্ষক প্রতিনিধির ৩৩ সদস্যর মধ্যে সাদা দল জয় পেয়েছে ১৯ জন, আ’লীগপন্থী হলুদ প্যানেলে জয় পেয়েছে ১৪ জন প্রার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষসহ গুরুত্বপূর্ণ ৬টি পদই পেয়েছে সাদা প্যানেল। এর মধ্যে সভাপতি হিসেবে ফাইন্যান্স বিভাগের আমজাদ হোসেন, সহ-সভাপতি হিসেবে সমাজকর্ম বিভাগের গোলাম কিবরিয়া ফেরদৌস, সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফার্মেসী বিভাগের মামুনুর রশিদ ও সদস্য পদে অর্থনীতি বিভাগের কেবিএম মাহবুবুর রহমান ও ফলিত পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের মামুন-উর-রশীদ খন্দকার নির্বাচিত হয়েছেন সাদা প্যানেল থেকে। অন্যদিকে হলুদ প্যানেল থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদের মধ্যে শুধুমাত্র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল্যাহ আল মারুফ নির্বাচিত হয়েছেন। বাকি আটটি পদ সদস্য হিসেবে পেয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি অনুষদের ডিন পদে নির্বাচনে আইন অনুষদে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন হলুদ প্যানেল থেকে আইন বিভাগের অধ্যাপক আহসান কবির। বাকি আটটির চারটি পেয়েছে সাদা প্যানেল এবং চারটি পেয়েছে হলুদ প্যানেল। সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন কলা অনুষদে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ফজলুল হক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল ইসলাম, কৃষি অনুষদে ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক সাহেলা জেসমিন এবং প্রকৌশল অনুষদে কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক একরামুল হামিদ। হলুদ প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন, বিজ্ঞান অনুষদে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক খলিলুর রহমান খান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থা বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ূন কবির, জীব ও ভূবিজ্ঞান অনুষদে প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, চারুকলা অনুষদে চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর তালুকদার।
সিন্ডিকেট নির্বাচনে পাঁচটি পদের মধ্যে প্রভাষক ক্যাটাগরিতে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় বিজয়ী হয়েছেন হলুদ প্যানেলের ভূতত্ত¡ ও খনিবিদ্যা বিভাগের মসিদুল হক। বাকি চারটির মধ্যে তিনটিই পেয়েছে সাদা প্যানেল। সাদা প্যানেল থেকে নির্বাচিতরা হলেন, প্রাধ্যক্ষ ক্যাটাগরিতে মাদার বখস হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল আলিম, প্রফেসর ক্যাটাগরিতে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক হাবিবুর রহমান এবং সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের মনিরুল হক। শুধুমাত্র সহকারি অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে হলুদ প্যানেল থেকে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের আব্দুল্লাহ আল মামুন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইনান্স এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটিতে দুইটি পদেই বিজয়ী হয়েছেন হলুদ প্যানেলের শিক্ষকরা। তারা হলেন ফাইনান্স ক্যাটগরিতে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক জাফর সাদিক এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কমিটি ক্যাটাগরিতে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মহমুদ হোসেন রিয়াজী।
তবে শিক্ষা পরিষদের দুইটি ক্যাটাগরিতে ছয়জনই নির্বাচিত হয়েছেন হলুদ প্যানেল থেকে। এর হলেন সহযোগী অধ্যাপক ক্যাটাগরিতে উদ্ভিদবিজ্ঞানের নাসিরুদ্দিন, শিক্ষা ও গবেষনা ইনস্টিটিউটের রুবাইয়াৎ জাহান এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আবু রাসেল মুহা রিপন। সহযোগী অধ্যাপক ব্যাতীত ক্যাটাগরিতে ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আরমানুল হক, মার্কেটিং বিভাগের শেখ শামীমা সুলতানা এবং চিত্রকলা, প্রাচ্যকলা ও ছাপচিত্র বিভাগের সুজন সেন।
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্যব্যবস্থা বিভাগের শিক্ষক ইমরান হোসাইন বলেন, ‘অনৈক্যের আবাদ ভাল হয়েছে, তাই ফলনেও বাম্পার অবস্থা।
এদিকে শিক্ষকরা দলীয় মিটিং বা দায়িত্বশীলরে প্রতি আস্থাহীনতায় ভুগছেন উলেখ করেন তিনি বলেন, এত বড়ো একটা নির্বাচন নিয়ে স্টিয়ারিং কমিটির কোনোরূপ সমন্বয় ছিল না। তারা নিজেরাই প্রার্থী, নিজেরাই নির্বাচক। কাজেই এই পরাজয়ের ব্যর্থতা মাথায় নিয়ে বর্তমান স্টিয়ারিং কমিটির একযোগে পত্যাগ করা উচিত।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ