পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর বাড্ডার বেরাইদ এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রæপের গোলাগুলিতে একজন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। গত রোববার বিকালে ঢাকা-১১ আসনের এমপি ও বেরাইদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের সমর্থকদের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে উভয়পক্ষই এ ঘটনার জন্য একে অপরকে দায়ী করেছে। নিহত কামরুজ্জামান দুখু (৩৫) বেরাইদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাড্ডা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের ভাই। তিনি রড-সিমেন্টের ব্যবসা করতেন। এলাকাবাসীর মতে, বাড্ডায় এমন খুনের ঘটনা নতুন কিছু নয়। থানা এলাকাজুড়েই সারাবছরই লেগে আছে অস্ত্রের ঝনঝনানি। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, খাল ও বালুমহাল দখল, অন্যের জমিতে মাছের ঘের নির্মাণ করে দখলে রাখা, মাদক ব্যবসা, ডিশ ব্যবসা ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে খুনাখুনির ঘটনা লেগেই আছে। রোববারের ঘটনা বাদ দিলে গত পাঁচ বছরে কমপক্ষে দশটি খুনের ঘটনা ঘটেছে। বেশিরভাগ খুনের ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কোনো ঘটনারই কোনো কিনারা হয়নি। প্রতিটি হত্যাকান্ডের পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক শক্তির প্রভাব। সর্বশেষ গত ১৭ ফেব্রæয়ারি মেরুল বাড্ডার মাছের আড়তে একদল সন্ত্রাসী তাদের প্রতিপক্ষ গ্রæপের আবুল বাশার বাদশাকে গুলি করে হত্যা করে।
জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১৩ আগস্ট রাতে বাড্ডার আদর্শনগর পানিরপাম্প এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয় ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান গামা, বাড্ডার ছয় নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামসুদ্দিন মোল্লা, ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ মানিক ও যুবলীগ নেতা আবদুস সালাম। নিহত মাহবুবুর রহমান গামার বাবা মতিউর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামী করে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে সাইদুল নামে স্থানীয় এক ছিঁচকে সন্ত্রাসী পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। নিহতের স্বজনদের অভিযোগ, আফতাবনগর গরুর হাটের ইজারাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ ভাগ্নে ফারুক ও বিদেশে আত্মগোপন করে থাকা মেহেদীর নির্দেশে ভাড়াটে খুনি দিয়ে গামাকে খুন করা হয়। খুনের মিশনে অংশ নিয়েছিল আরিফ, পবন, পুলক, রমজান, মানিক, মান্নানসহ ১০-১২ জন সন্ত্রাসী।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাড্ডা এলাকায় দখল, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, ঝুট ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের নেপথ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি সন্ত্রাসী গ্রæপ। এর মধ্যে রয়েছে, ভাগ্নে ফারুক গ্রæপ, মেহেদী গ্রæপ, রায়হান গ্রæপ, ডালিম-রবিন গ্রæপ, জাহাঙ্গীর-আলমগীর গ্রæপ এবং অনিক গ্রæপ। ২০০৯ সালের বাড্ডায় নাজিমকে গুলি করে হত্যার ঘটনার পর মেহেদী গ্রæপের অন্যতম ক্যাডার কাবিলা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি আনন্দনগরে দুই গ্রæপের গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় আমির হোসেন নামের একজন। একই বছরের ৩ মে বাড্ডা জাগরণী সংসদ ক্লাবে আফতাবনগর পশুর হাটের ৬০ লাখ টাকা চাঁদার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সন্ত্রাসী গ্রæপের একটি বৈঠক চলাকালে সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন রাহিনকে। একই মাসের ১৬ তারিখ বাড্ডায় দুলাল হোসেন নামের এক পুলিশ সোর্সকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর দিনদুপুরে গুলি ও বোমা ছুঁড়ে হত্যা করা হয় বাড্ডার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মামুনকে। এছাড়া দখল, চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের বিরোধে গত ১০ বছরে বাড্ডায় খুন হন সাইদুর, মাসুম, আলা, রুবেল ও তাইজুলসহ আরো কয়েকজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাড্ডায় বেশিরভাগ খুনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সন্দেভাজনদের কেউ কেউ নিহত হয়েছে। গত ১৭ ফেব্রæয়ারি মেরুল বাড্ডার মাছের আড়তে বাদশা হত্যার ঘটনার পর আটককৃত আসামী নূর ইসলাম নূরী ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়। সন্ত্রাসী নূরীর বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ নভেম্বর বানানীতে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির অফিসে ঢুকে প্রতিষ্ঠানের মালিক সিদ্দিক মুন্সীকে গুলি করে হত্যার অভিযোগ রয়েছে। এর আগে ২০১৩ সালের ৩০ নভেম্বরে বাড্ডার হোসেন মার্কেটের পেছনে একটি নির্মাণাধীন বাড়ির চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীরা দুই নির্মাণ শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনার দুই দিন পর মনির নামে সন্দেহভাজন একজন আসামী পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, বহু বছর ধরেই বাড্ডা থানা এলাকা সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়ে আছে। বিশেষ করে বেরাইদ, মেরুল বাড্ডাসহ থানা থেকে দুরের এলাকাগুলো সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। চাঁদাবাজি, দখল, মাদক ব্যবসার জন্য এসব এলাকায় সন্ত্রাসীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মারমুখি আচরণ, গোলাগুলি, বোমাবাজি লেগেই আছে। এক কথায়, বাড্ডা এলাকা সন্ত্রাসী গ্রæপের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। #
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।