Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হালদায় রেণু বিক্রি আজ শুরু

| প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) থেকে : এশিয়ার বিখ্যাত প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী থেকে সংগৃহীত মা-মাছের ডিম সনাতন পদ্ধতিতে রেণুতে রুপান্তর হয়েছে। মাটির কুয়া ও হ্যাচারীর কুয়ায় রেখে পানি পরির্বতন করার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ডিম থেকে রেণু বিকশিত হয়েছে। পোনার চোখ ফুটেছে ও রক্ত চলাচলও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারাসহ ডিম সংগ্রহকারীরা। আর এর মাধ্যমে এসব পোনা বিক্রির উপযোগী হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) থেকে শুরু হবে পোনা বেচাকেনা। দেশে হালদার পোনার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারণ এ নদীতে কার্প জাতীয় রুই, কাতাল, মৃগেল ও কালিবাইশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মা-মাছ ডিম দিয়ে থাকে। এসব পোনা দ্রæত বর্ধনশীল। গত বৃস্পতিবার ও শুক্রবার নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে মা-মাছের ডিম সংগ্রহ করে পোনায় রূপান্তর করা হয়।
পোনা বিক্রি করতে হালদার দুই পাড়ে হ্যাচারীতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রতি কেজি পোনার মূল্য ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে পোনা ক্রয় করতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ক্রেতারা যোগাযোগ শুরু করেছেন। অনেক ক্রেতা অগ্রীম বুকিং করে রেখেছেন। পোনা বেচাকেনার সময় হালদার পাড়ে চাঁদাবাজীর আশঙ্কা করছেন পোনা বিক্রেতারা। পোনা বিক্রেতা কামাল জানান, নদী থেকে ডিম সংগ্রহ করে রাত-দিন এই ডিম থেকে পোনা বিকশিত করার কাজে ব্যস্ত ছিলাম। প্রতিটি মুহূর্ত ছিল আমার কাছে অনেক মূল্যবান। সঠিক পরির্চযা করে কুয়ার পানি বার বার পরির্বতন করে সনাতন উপায়ে এখন ডিম থেকে পোনায় রুপান্তর হয়েছে। আমরা অনেক যতœ করে পোনাগুলো সংরক্ষণ করছি। প্রতি কেজি পোনার মূল্য ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা হতে পারে। অনেকে আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন।
হালদা পাড়ের আরো কয়েকজন পোনা বিক্রয়কারী জানান, সব ঠিক থাকলে আজ থেকে থেকে পোনা বিক্রয় শুরু হবে। এ কয়েকদিনে তাদের অনেক কষ্ট হয়েছে। ন্যায্য মূল্য পেলে সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। বৃষ্টিবাদল মাথায় নিয়ে ডিম সংগ্রহ করার পর রাত দিন নির্ঘুম পরিশ্রম করে হালদার পাড়ে সনাতন পদ্ধতিতে হ্যাচারি ও মাটির কুয়াতে রেণু ফুটানোর কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় গতকালও। ডিম হতে পোনা উৎপাদন করে প্রতি কেজি পোনা এবার পানিসহ উপযুক্ত দামে বিক্রি করবে বলে জানিয়েছেন মাদারীপুর এলাকার হ্যাচারীর ডিম সংগ্রহকারীরা। মাছুয়াঘোনার ডিম সংগ্রহকারী আবদুল খালেক জানান, হ্যাচারীর দায়িত্বরত ব্যক্তি ও মৎস্য কর্মকর্তার অবহেলার কারণে আমার অনেক ডিম নষ্ট হয়ে গেছে। যা অবশিষ্ট আছে তা বিক্রয় করবো।
এদিকে গতকাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোমিনুল হক হাটহাজারীর তিনটি হ্যাচারী পরির্দশন করেন। পরির্দশ কালে তিনি ডিম সংগ্রহকারীদের আশ্বস্ত করেন, আগামী পূর্ণিমা তিথির আগে হ্যাচারীর সংস্কার কাজ করা হবে। হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া গড়দুয়ারা ডিম সংগ্রহকারীদের ডিম থেকে রেণু ফোটানোর মাটির কুয়াগুলো পরির্দশ করেন। হাটহাজারী উপজেলার সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, পোনা বিক্রয়কারীরা আনন্দে আছে। গত বছরের তুলনায় এবার দাম একটু বেশি পাওয়া যাবে বলে ধারণা করছি। তবে পর্যাপ্ত পোনা আছে। কিছু ডিম ও পোনা বিভিন্ন কারণে নষ্ট হয়ে গেছে। তাতে কোন প্রভাব পড়বেনা। আশা করি পোনা বিক্রয়কারীরা উপযুক্ত দাম দিয়ে তাদের পোনা বিক্রয় করতে পারবে। এদিকে আগামী আগামী পূর্ণিমা তিথিতে দ্বিতীয় দপায় হালদা নদীতে মা-মাছ আরেক দফা ডিম ছাড়তে পারে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তাসহ ডিম সংগ্রহকারীরা। তাই দ্বিতীয় দফা হালদা নদীতে মা-মাছ ডিম ছাড়ার আশায় ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।


বিশ্বব্যাংকের তথ্য
বৈদেশিক মুদ্রা আয়ে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয়, বিশে^ নবম
২০১৭ সালে আয় ১৩৫০ কোটি ডলার
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বাংলাদেশ ২০১৭ সালে এক হাজার ৩৫০ কোটি ডলার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা আয় করেছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান নবম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয়। গতকাল সোমবার অভিবাসন ও উন্নয়ন শীর্ষক সর্বশেষ অভি অবহিতকরণ বৈঠকে বিশ্বব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় যথাক্রমে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এ সময়ে ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা আয় ছয় হাজার ৯০০ কোটি ডলার আর পাকিস্তানের ১৯ হাজার ৭০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ২০১৭ সালে শ্রীলংকার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ কমেছে শূন্য দশমিক নয় শতাংশ।
২০১৬ সালে ১১ দশমিক পাঁচ শতাংশ পতনের পর থেকে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ অপরিবর্তীত রয়েছে বলে জানায় সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংকের ভাষ্য, বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান উৎস সৌদি আরব, আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত ও মালয়েশিয়া। এ দেশগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আর্জিত হতে থাকায় দেশটিতে এখন বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ক্ষেত্রে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
২০১৭ সালে শ্রীলংকার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ কমেছে শূন্য দশমিক নয় শতাংশ। একই সময়ে নেপালের বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ৬৯০ কোটি ডলার। যা দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ। আর বাংলাদেশের আয় করা বৈদেশিক মুদ্রা দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের পাঁচ দশমিক চার শতাংশ ছিল।
সংস্থাটির সভায় মন্তব্য করা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০১৭ সালে সৌদি আরবের শ্রমবাজার জাতীয়করণের ধাক্কা এড়িয়ে যেতে পারত, যদি তার আগে হওয়া চুক্তি অনুযায়ী চার লাখ শ্রমিক দেশটি পাঠিয়ে দিত। ওই চুক্তির আওতায় শ্রমশক্তির অর্ধেকই নারী শ্রমিক হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু ২০১৮ সালে বাংলাদেশের শ্রমশক্তি রফতানি কার্যক্রমের গতি মন্থর হয়ে পড়ে। চুক্তি হওয়ার মাসে বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৫৯ হাজার ৩৮২ জন শ্রমিককে সৌদি আরবে পাঠানো হয়েছিল। অথচ ২০১৭ সালের ফেব্রæয়ারিতে ৮৫ হাজার ৩৮ জনকে পাঠানো হয়েছিল।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, দক্ষ শ্রমশক্তি রফতানি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ১২টি দেশে সমন্বয়কারী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। সমন্বয়কারীদের প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশের ‘ব্যুরো অফ ম্যানপাওয়ার অ্যামপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড ট্রেনিং’ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ‘ইউনিভার্সাল মেডিকেলের’ সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে।###

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ