Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রূপগঞ্জে মেরিন সিটির দখলে থাকা সরকারি ৭ বিঘা জমি উদ্ধার

ফের জবরদখল করার চেষ্টা করলে আইনি ব্যবস্থা

| প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


মো : খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে : নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের কালনি, হিননাল, বঈলদা ও নোয়াগাঁও মৌজার জিন্দা ও নোয়াগাঁও এলাকায় মেরিন সিটি নামের আবাসন প্রকল্পের অবৈধ ভাবে কৃষি জমি ভরাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম।
গত ৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে অবৈধ বালু ভরাট বন্ধসহ সকল কার্যক্রম স্থগিত রাখতে নির্দেশ দেন তিনি। ওই সময় উপস্থিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামানকে সরকারী জমি উদ্ধার করে সাইনবোর্ড স্থাপন করার নির্দেশ দেয়া হয়। ১৮ দিন পর মেরিন সিটির অবৈধ ভাবে জবরদখল করা ৭ বিঘা উদ্ধার করেছে প্রশাসন। গতকাল রোববার সকালে সরকারী জমিতে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। এদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলামসহ কর্মকর্তাদের সহযোগিতা পেয়ে এলাকাবাসী সাধুবাদ জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসনকে। ইউএনও আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম জানান, সরকারী ভাগ্যবতি খাল, সরকারি জমি, স্থানীয় কৃষকদের জমি না কিনে জবরদখল ও কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে বালু ভরাটসহ নানা অভিযোগ পাওয়া যায় মেরিন সিটির বিরুদ্ধে। এছাড়া এ ব্যপারে উপজেলা প্রশাসনের কাছে স্থানীয় লোকজন ও কৃষকরা অভিযোগ করেন। পরে তারা সরেজমিনে গিয়ে কেনো প্রকার অনুমতি ছাড়া কৃষি জমিতে বালু ভরাট, ভাগ্যবতি খাল ভরাট, সরকারী জমি জবরদখল, কৃষকদের জমি না কিনে জোরপূর্বক জবরদখলের বিষয়টি সত্যতা পান। পরে তিনি কৃষি জমিতে অবৈধ ভাবে বালু ভরাট বন্ধসহ সকল কার্যক্রম স্থগিতের নির্দেশ দেন। এছাড়া ভুক্তভোগী কৃষকদের প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়। পরে গত এক সপ্তাহ আগে সরকারী জমিতে সাইনবোর্ড স্থাপন করলে মেরিন সিটির লোকজন তা ফেলে দেয়। পরে রোববার সকালে ফের সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসাদুজ্জামান জানান, প্রায় ৭ বিঘা জমিই ক তপসিলভুক্ত। সরকারী এ সম্পত্তি কোন প্রকার অনুমোতি ছাড়াই অবৈধ ভাবে মেরিন সিটি বালু ভরাট করে ফেলেছে। সরকারী সম্পত্তিতে ফের জবরদখলের চেষ্টা করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জানা গেছে, জিন্দা ও নোয়াগাঁওসহ আশ-পাশের এলাকার বেশির ভাগ মানুষই কৃষি ও সবজি চাষের উপর নির্ভর। ধানের ফসল ও সবজি চাষ করে চলে তাদের সংসার। এখানকরা সবজি এলাকার চাহিদার পাশাপাশি ঢাকাসহ বিদেশেও যায়। কয়েক বছর আগে এ এলাকায় মেরিন সিটি নামে একটি আবাসন প্রকল্পের নামে কিছু জমি ক্রয় করেন কুদরতই মাহাবুবে খুদা নামে এক ব্যক্তি। আর এ আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে স্থানীয় একটি শক্তিশালী প্রভাশালী চক্রকে সাথে নিয়ে নেন তিনি। এরপর থেকেই শুরু করেন জবরদখল করে বালু ভরাট কার্যক্রম। দিনে-রাতে মিলিয়ে ধান ও সবজি ফসলি জমি ভরাট করে ফেলছে তারা। আবাসন প্রকল্পের নিয়োজিত সন্ত্রাসী বাহিনীর হুমকির মুখে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করছে। এছাড়া শীতলক্ষ্যা নদী থেকে শিমুলিয়া বাজার হয়ে ব্রাক্ষনখালী, হিরনাল, কুলিয়াদি, কালনি, নোয়াগাও, নবগ্রাম, বঈলদা বড় আমদিয়া, আগলা হইয়া কালিগঞ্জ থানার কলিঙ্গা পর্যন্ত একটি প্রায় ৬০ ফুট প্রশস্থ সরকারী খাল ছিলো। এ খাল দিয়ে এক সময় ট্রলার (ইঞ্চিন চালিত নৌকা) যোগে এসব এলাকার মানুষ চলাচল করতো। এছাড়া এলাকার ধানের ফসল ও সবজি চাষের জন্য পানি সংগ্রহ করা হতো এ খাল থেকেই। বর্তমানে মেরিন সিটি হীননাল, নোয়াগাও, বঈলদা মৌজা অংশের খালটি ভরাট করে নিজেদের দখলে নিয়েছেন। আবাসন প্রকল্পটির নিয়োজিত একটি সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে, তারা সব সময়ই প্রকল্প এলাকায় ঘুরাফেরা করে থাকে। কেউ বাঁধা দিতে আসলেই অতর্কিত হামলা চালানো হয়ে থাকে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ