পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, নোয়াখালী ব্যুরো : হাতিয়া উপজেলা এখন দেশ বিদেশে সু-পরিচিত। এরমধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত ও ভ্রমণ পিয়াসীর আকর্ষনীয় স্থান নিঝুমদ্বীপ, এশিয়ার বিখ্যাত সেনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্বর্ণদ্বীপ এবং রোহিঙ্গা শরনার্থীর পুর্ণবাসনস্থল ভাষান চর। এছাড়া হাতিয়া মূলদ্বীপের বাইরে রয়েছে অর্থ শতাধিক চর। এরমধ্যে ১৮-২০টিতে চাষাবাদ ও জনবসতি গড়ে উঠেছে। কিন্তু দূর্ভাগ্য যে, মেঘনার অব্যাহত ভাঙনে হাতিয়া মূলভূখÐ এখন অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। গত চার দশক হাতিয়া মূলভূখÐের দেড়শত বর্গকিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এর সাথে হারিয়ে গেছে হাতিয়ার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ইতিহাস ঐতিহ্য। এক সময়ের ধনাঢ্য পরিবার রাতারাতি ভিখারীতে পরিণত হয়েছে। ভাঙনের মুখে উত্তরাঞ্চলের হরণী, চানন্দী, সুখচর ও নলচিরা ইউনিয়ন মেঘনায় বিলীন হয়েছে। ফলে ঘরবাড়ী হারিয়ে হাজার হাজার পরিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
হাতিয়া মূলভূখÐের উত্তরাঞ্চল নলচিরা এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত পাঁচ বছর উত্তরাঞ্চলের অন্তত আট বর্গকিলোমিটার মেঘনায় বিলীন হয়েছে। এতে পাঁচ হাজার পরিবার গৃহহীন হয়েছে । এছাড়া চরকিং, সোনাদিয়া ও জাহাজমারা ইউনিয়নের মোক্তারিয়া এলাকায় ভাঙন চলছে সমানগতিতে । হাতিয়া মূলভূখÐে এমন শত শত পরিবার রয়েছে, যারা ১২-১৩ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। হাতিয়াদ্বীপ ভাঙন রোধকল্পে এ যাবত সরকারীভাবে কেনো পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। হাতিয়াদ্বীপের পশ্চিমপার্শ্বে ভোলা’র মনপুরা উপজেলায় নদীভাঙনরোধে সরকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। অথচ হাতিয়াদ্বীপ ভাঙনরোধে সরকারী উদ্যোগে এখনো সাড়া মেলেনি।
সাত লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত হাতিয়াবাসীর দ্বিতীয় সমস্যাটি হচ্ছে, বিদ্যুৎ সঙ্কট। উপজেলা হেডকোয়ার্টার ওছখালীতে ডিজেল চালিত জেনারেটরের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুৎ উপজেলা সদরের সীমিত পরিসরে সরবরাহ হলেও অবশিষ্ট ৯৮% এলাকা অন্ধকারে থাকে। অপরদিকে হাতিয়া উপজেলার পূর্বপার্শ্বে অবস্থিত সন্ধীপ উপজেলা। চট্রগ্রামের মীরেরশ্বরাই থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সন্ধীপ উপজেলায় বিদ্যুৎ লাইন স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। অথচ হাতিয়া চেয়ারম্যান ঘাট থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে হাতিয়া মূলভূখÐে বিদ্যুৎ সরবরাহ আরো সহজ। ছয় লক্ষাধিক অধিবাসীর বৃহত্তর স্বার্থে এদু’টো জনগুরুত্বপূর্ণ কাজ কবে সম্পন্ন হবে তারও কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছেনা। হাতিয়া নদীভাঙনরোধ ও বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবীতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচী অব্যাহত রেখেছে দলমত নির্বিশেষে হাতিয়াবাসী। উল্লেখ্য, ধান, তরিতরকারী, ফলমূল, শাক সবজীর ভাÐার হিসেবে হাতিয়া উপজেলার সুখ্যাতি রয়েছে। এছাড়া মেঘনা পেরিয়ে দক্ষিণের বিশাল বঙ্গোপসাগর থেকে সংগৃহীত হাজার হাজার মেট্রিকটন সামুদ্রিক মৎস স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। এখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত হলে মৎস প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মৎস সংরক্ষণ সম্ভব। এবিষয়ে জানতে চাইলে হাতিয়া আসনের এমপি আয়েশা ফেরদাউস ইনকিলাবকে জানান, আমি এমপি হবার পূর্বে হাতিয়ায় মাত্র আধা মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ ছিল। এখন চার মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্য আমি কাজ করে যাচ্ছি উক্ত প্রকল্পটি প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়া নদী ভাঙনরোধে একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আমি আশা করছি অচিরেই এদু’টি প্রকল্প অনুমোদিত হলে হাতিয়াবাসীর দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।