পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্বের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের বাংলাদেশে আরও বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিনিয়োগ করলে তাদের পূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
বুধবার বিকালে লন্ডনে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সরকারপ্রধানদের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ আশ্বাস দেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের বরাতে বাসস জানায়, কমনওয়েলথ দেশসমূহের ১৩ সরকারপ্রধান গোলটেবিল বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদের বিশেষ করে আজ এখানে উপস্থিত বিশ্বের ব্যবসা খাতের নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। নিশ্চিত থাকুন, আপনারা এশিয়ার সবচেয়ে গতিশীল এফডিআইবান্ধব সরকারের পূর্ণ সহযোগিতা পাবেন।’
প্রধানমন্ত্রী কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাতে একযোগে কাজ করার লক্ষ্যে কমনওয়েলথের বাস্তব সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, কমনওয়েলথভুক্ত সব দেশে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করার ক্ষেত্রে কমনওয়েলথ বাস্তব সহযোগিতা দিতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ কমনওয়েলথ ক্ষুদ্র ও দ্বীপরাষ্ট্র (এসআইডিএস), এলএলডিসি, আফ্রিকা ও ক্যারিবীয় দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারে বিপুল সম্ভাবনা দেখতে পায়।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে ৯ কোটি মধ্যবিত্ত ভোক্তা রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ইইউ, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও জাপানের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার। যে কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে এশিয়ার পরবর্তী শ্রেষ্ঠ বিনিয়োগ কেন্দ্র হিসেবে রিব্র্যান্ডিং করছে।’
শেখ হাসিনা আরও উল্লেখ করেন, টেকসই শিল্প বিনিয়োগের লক্ষ্যে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন তার সরকারের শীর্ষ অগ্রাধিকার হয়ে আছে।
অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এটি হচ্ছে সার্বিক অর্থে স্বাধীনতা, মর্যাদা ও সুযোগের বিষয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আমরা আমাদের অবকাঠামো উন্নয়ন, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান এবং প্রযুক্তির ব্যবহার জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে থাকি।’
শেখ হাসিনা জানান, ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৫৬ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০১৫ সালে ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরে দেশে-বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও টেকসই উন্নয়নের জন্য আমার সরকারের গৃহীত নীতি-কৌশলসমূহ বাস্তব ফল দিচ্ছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ চলমান উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় কমনওয়েলথ সদস্য দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে বেসরকারি অংশীদারিত্ব আশা করে। সরকার সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ এবং অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকায় ১০০ অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠা ও ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, এতে নারীসহ আমাদের দক্ষ জনবলের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রাখছে। এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্বল্প পুঁজি নিয়ে শুরু করে পণ্য উৎপাদন করে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের জন্য এসএমই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং রফতানি বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে একটি চালিকাশক্তি।
তিনি বলেন, সরকার রফতানি বহুমুখীকরণের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এসব সেক্টরে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। সম্ভাবনাময় কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আমরা অর্থ, অবকাঠামো উন্নয়ন, প্রযুক্তি, কাঁচামাল ও বাজারভিত্তিক তথ্য প্রদান করছি। সরকার এসএমই বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিটে জামানতবিহীন ব্যাংক লোন দিচ্ছে এবং উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার জন্য চাহিদাভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচিরও আয়োজন করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে এসএমই শিল্পের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক কমার্সের উন্নয়নে অধিক গুরুত্ব দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির একটি মডেল হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। আমাদের সাফল্য অর্জনের ক্ষেত্রে এসএমই একটি গুরুত্ব সেক্টর। এ কারণেই আমাদের সরকার এই সেক্টরের উন্নয়নে সহযোগিতা ও উৎসাহ জুগিয়ে দিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গুরুত্বের জন্য বাংলাদেশ সবসময় আইন ও স্বচ্ছতাভিত্তিক ইনক্লুসিভ এবং অবাধ বহুমুখী বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা দোহা উন্নয়ন রাউন্ড সংলাপের অগ্রগতি থমকে যাওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করে উন্নয়নশীল দেশের গ্রুপে যোগ দিচ্ছি।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, তার পরও ডব্লিউটিওর ১১তম মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনায় আমরা লক্ষ্য করেছি, বহুমুখী বাণিজ্য প্রসারের ক্ষেত্রে আশু কোনো অচলাবস্থা কেটে যাওয়ার আশাও ম্লান হয়ে যাচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।