Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শেখ হাসিনার টার্গেট এখন তারেক রহমান -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রাখার পর এখন শেখ হাসিনার টার্গেট ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলে জানিয়েছে দলটি। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী তারেক রহমানকে লন্ডন থেকে দেশে ফেরানো নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার রোডম্যাপ বলে আখ্যা দিয়েছেন। গতকাল (বুধবার) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, এখন তার (শেখ হাসিনা) টার্গেট হচ্ছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, তাকে টার্গেট করে প্রধানমন্ত্রীর যে মনের ক্ষোভ, তার যে মনের প্রতিহিংসা- এটা চরিতার্থ করতে তিনি আরেকটা রোডম্যাপ খোলার চেষ্টা করছেন। তবে এতে কোন লাভ হবে না মন্তব্য করে রিজভী বলেন, কারণ পৃথিবীর সব দেশ তো শেখ হাসিনার মতো নিষ্ঠুর একনায়কতান্ত্রিক দেশ নয়। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ গণতান্ত্রিক দেশ, সেখানে মানবিক মূল্যবোধ আছে, সেখানে অনেক কিছু মানবাধিকারের সাথে জড়িত আছে। তারা জানে এই সরকারের প্রকৃতি কী, এই সরকারের নিষ্ঠুরতা কী, এদেশে কী ধরণের বিভৎস পৈশাচিকতার শাসন বিদ্যমান আছে, সেটা তারা জানে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দেশে এখন আওয়ামী বিচার হচ্ছে, এটা শেখ হাসিনার বিচার, প্রকৃত বিচার নয়। কারণ আইনের শাসনকে তারা কালো কাপড়ে জুড়ে রেখেছে। অনেক সময় বিচারকরাই কখনো কখনো ন্যায়ের পক্ষে রায় দিলেও সেই বিচারক দেশে থাকতে পারেন না। যেখানে শেখ হাসিনার আইন বিদ্যমান, তার রায় বিদ্যমান, তার সাজানো মামলায় সাজা দিতে হবে। যদি বিচারক রায় না দেন তাকে পালিয়ে যেতে হবে মালয়েশিয়ায়। এখানে প্রকৃত আইনের শাসন চলছে না। তিনি যেমন অন্যায়ভাবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে রেখে জুলুম নির্যাতন করছেন। তার যেমন চিকিৎসাও করতে দিচ্ছে না। তাকে মানসিকভাবে হেনস্তা করছেন, হয়রানি করছেন, পর্যদস্ত করছে।
দেশের এই ক্রান্তিকালে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যের একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বৃটেনের স্বনামধন্য টিভি চ্যানেল-ফোর এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশে বিরোধী দল ও মতের ব্যক্তিদের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যান, কিছু বলেননি। কিন্তু বাংলাদেশে কিছু মিডিয়া এটাকে কিন্তু নিউজে নিয়ে আসেনি। তারা নিয়ে এসেছে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনা হবে। মানে কিভাবে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার? গণতন্ত্র আজকে ধুলিসাৎ, আজকে মানুষের বাক স্বাধীনতা মৃতপ্রায়, নাগরিক স্বাধীনতা ডুকরে ডুকরে কাঁদছে। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা জেলখানায় না হলে আঁধারে-অন্ধাকারে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঠিক সেই মুহূর্তে বাংলাদেশের কিছু গণমাধ্যম একেবারে নিলর্জ্জভাবে আত্মা বিক্রি করে দিয়েছে এই নির্দয় অবৈধ সরকারের কাছে। একটা জাতি যখন ভয়ংকরভাবে দুদর্শায় পড়ে তখন গণমাধ্যম একটা বিবেকের ভূমিকা পালন করে। আজকে সেই বিবেকের ভূমিকা নস্যাৎ হয়ে গেছে কিছু গণমাধ্যমের কাছ থেকে।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতায় নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কারাবন্দি দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা নিয়ে আমরা বার বার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও কারা কর্তৃপক্ষ কোনো উদ্যোগই গ্রহণ করছেন না। বরং স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে যথাযথ মর্যাদায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ডাহ্যা মিথ্যাচার। সরকারের গঠিত মেডিকেল বোর্ডই দেশনেত্রীকে অর্থোপেডিক বেডসহ যেসব চিকিৎসার সুপারিশ করেছিল তা এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। তার যে অসুস্থ দিনকে দিন বাড়ছে। কারাগারে তার কোনো চিকিৎসাই হচ্ছে না। মনে হচ্ছে এতে গভীর চক্রান্ত রয়েছে। চিকিৎসা নিয়ে সরকার ও কারা কর্তৃপক্ষে টালবাহানায় দেশনেত্রীর জীবন নিয়ে আমরা গভীর শঙ্কা প্রকাশ করছি। খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের তত্ত¡াবধানে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার দাবি জানান রিজভী।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, মুনির হোসেন প্রমুখ। #####

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ