Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামে হাসপাতালের ভুলে তুলকালাম অবশেষে জীবিত শিশু পেলেন মা

| প্রকাশের সময় : ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘লাশ’ বুঝে নেয়ার ২০ ঘণ্টা পর জীবিত কন্যা শিশুকে ফিরে পেলেন মা। আবার জীবিত শিশুকে ফেরত দিয়ে লাশ গ্রহণ করে শোকে পাথর হন আরেক মা। এক নবজাতকের লাশ নিয়ে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘটে এমন তুলকালাম কাÐ। রুদ্বশ্বাস অপেক্ষা, থানা-পুলিশসহ নানা ঝামেলার পর বিষয়টি রফাদফা হয়। তবে এমন ভুলের জন্য শুধুমাত্র ক্ষমা চেয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করছে নগরীর প্রবর্তক মোাড়ের চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।
নোয়াখালীর মাইজদীতে ১৪ এপ্রিল একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন প্রবাসী মহিউদ্দিনের স্ত্রী রোকসানা আকতার। বিয়ের ৫ বছর পর প্রথম সন্তানের মা হন তিনি। কিন্তু শিশুটি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে চাইল্ড কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ১৭ এপ্রিল সকালে শিশুটি মারা গেছে জানিয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্যাকেট করে তাকে লাশ বুঝিয়ে দেয়। কন্যা সন্তান হারানোর শোকে হতবিহŸল মা লাশ নিয়ে নোয়াখালীর গ্রামের বাড়ি চলে যান। সেখানে লাশ গোসল করানোর সময় দেখতে পান এটি ছেলে শিশুর লাশ। লাশ দেখে চমকে উঠেন তিনি। নিশ্চিত হন তার কন্যা মারা যাননি। হাসপাতালের ভুলেই এমনটি হয়েছে।
তিনি অ্যাম্বুল্যান্সে নিয়ে লাশসহ ফিরে আসেন ক্লিনিকে। ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তাকে সেখানে ঢুকতেও দেননি। তিনি ছুটে যান পাঁচলাইশ থানায়। ক্লিনিকে পুলিশ গিয়ে ঘটনা তদন্ত শুরু করে। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই তাদের ভুল স্বীকার না করে উল্টো ওই শিশুর লাশ নিয়ে ফিরে যেতে বলে। প্রতিবাদে শিশুটির মা আদালতে যাওয়ার হুমকি দেন। অবশেষে হাসপাতালের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় কন্যা শিশুটিই রোকসানা আকতারের এবং সে জীবিত আছে। রাতভর ছেলে শিশুটির লাশ নিয়ে হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে অপেক্ষার পর সকালে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ তার কোলে তুলে দেন জীবিত কন্যা শিশু। শিশুটিকে পেয়ে আনন্দ অশ্রæতে আপ্লুত হন মা। ওই ক্লিনিক থেকে নিয়ে শিশুটিকে অন্য একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে ওই শিশুটিকে নিজেদের শিশু মনে করে আশায় বুক বেঁধেছিলেন ছেলে শিশুটির বাবা-মা। কিন্তু নোয়াখালী থেকে লাশ ফিরে আসার পর তাদের বলা হয় এটি তাদের নবজাতক এবং সে মারা গেছে। হঠাৎ করে সন্তানের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন ছেলে শিশুটির বাবা-মা। নবজাতকের মৃত্যুর প্রায় একদিন পর লাশ ফিরে পান তারা। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালের দায়িত্বহীনতার কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটলো। পাঁচলাইশ থানার ওসি মহিউদ্দিন মাহমুদ বলেন, সামান্য ভুলের কারণে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করে। এক পক্ষ মেয়ে শিশু না হওয়ায় শিশুটির লাশ গ্রহণ করছিল না আবার অন্য পক্ষ হঠাৎ করে নবজাতকের মৃত্যুর খবরও মেনে নিতে পারছিল না। এ জটিলতায় বিষয়টির ফায়সালা হতে রাত শেষ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষের ভুলের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তারা উভয় শিশুর পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছে।



 

Show all comments
  • arif ১৯ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:৫৬ পিএম says : 0
    not accepte
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ