পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেসরকারি খাতের ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান আরাস্তু খান পদত্যাগ করেছেন। হঠাৎ বড় পরিবর্তনের মাধ্যমে গত বছরের ৫ জানুয়ারি ব্যাংকটির চেয়ারম্যান পদে আসেন সাবেক এই আমলা। অর্থাৎ দায়িত্ব নেয়ার এক বছর চার মাসের মাথায় গতকাল মঙ্গলবার সরে দাঁড়ালেন আরাস্তু খান। শুধু চেয়ারম্যানের পদ থেকেই নয়; ব্যাংকটির পরিচালক পদ থেকেও তিনি পদত্যাগ করেছেন। আরাস্তু খান তিন বছরের জন্য পরিচালক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এদিকে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ব্যাংকটির স্বতন্ত্র পরিচালক ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. নাজমুল হাসান। তিনিও আরাস্তু খানের ন্যায় আরমাডা স্পিনিং মিলের পক্ষে নতুন করে পরিচালক হয়েছেন। চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্তির পূর্বে তিনি অত্র ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।
এদিকে আরাস্তু খানের সঙ্গে একই দিনে ইসলামী ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলামও পদত্যাগ করেছেন। এর আগে গত সপ্তাহেও ব্যাংকটির শীর্ষ পর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরাস্তু খান নিজেই। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ইসলামী ব্যাংক অনেক বড় ব্যাংক। প্রচÐ চাপ। প্রতিদিন যেতে হয়। পাশাপাশি নানা অনুষ্ঠান। এ ছাড়াও ওয়াকফসহ নানাভাবে ব্যাংকের কাজ বিস্তৃত করে ফেলেছিলাম। পরিবারকে সময় দিতে পারছিলাম না। তাই পদত্যাগ করেছি। তিনি বলেন, পেশাগত জীবনে সচিব হিসেবে কাজ করেছে সফলভাবে। এর আগে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলাম। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলাম। কিন্তু ইসলামী ব্যাংক অনেক ভিন্ন। তাই পেরে ওঠতে পারছিলাম না। পদত্যাগে কোনো শিল্পগোষ্ঠীর চাপ ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি কাজের চাপের কথাই উল্লেখ করেন।
ব্যাংকের পরিচালনা পরিষদ সূত্র বলছে, ব্যাংক পরিচালনায় ব্যাংকের মালিকানায় আসা চট্টগ্রাম ভিত্তিক শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রæপের সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল আরাস্তু খানের। তারই সূত্র ধরে শেষ পর্যন্ত আরাস্তু খানকে পদত্যাগ করতে হলো।
গত সপ্তাহেই ব্যাংকটির শীর্ষ পর্যায়ের পাঁচ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন। তখন অবশ্য আরাস্তু খান বলেন, অনেক বড় ব্যাংক। এখানে চার-পাঁচজন কর্মকর্তার পদত্যাগ বড় কোনো বিষয় নয়।
গত বছরের জানুয়ারি মাসে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পরিবর্তন আসে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তেই এ পরিবর্তন আসে তখন। ব্যাংকের তৎকালীন চেয়ারম্যান মুস্তফা আনোয়ারকে সরিয়ে পরিচালনা পরিষদের প্রথম সভাতেই চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয় আরাস্তু খানকে। ভাইস চেয়ারম্যান আজিজুল হকও পদত্যাগ করেন একই সঙ্গে। এ ছাড়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আবদুল মান্নানকে সরিয়ে নতুন এমডি হিসেবে ইউনিয়ন ব্যাংকের এমডি আবদুল হামিদ মিঞাকে নিয়োগ দেয়া হয়। ব্যাংকটি থেকে জামায়াত সমর্থিতদের সরিয়ে দেয়া নতুন মালিকানার আওতায় আসে ব্যাংকটি।
এরপর ব্যাংকটির বিভিন্ন পর্যায়ে নানা পরিবর্তন আসে বছরজুড়ে। বিভিন্ন স্তরের বেশ কিছু কর্মকর্তা পদত্যাগ করে যেমন স্বেচ্ছায় চলে গেছেন। আবার বেশ কিছু কর্মকর্তাকে অপসারণ করে নতুন পরিচালনা পরিষদ। আবদুল হামিদ মিঞা গত মাসের ১০ তারিখে অবসরে গেছেন। এরপর নিয়োগ দেয়া হয় ব্যাংকটির সাবেক অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব-উল আলমকে।
দেশি-বিদেশি যৌথ উদ্যোগে দেশে ১৯৮৩ সালে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের যাত্রা শুরু হয়। শুরুতে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৬৩ শতাংশের বেশি মালিকানা ছিল ইসলামী ব্যাংকের। তবে গত তিন বছরে তা অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত বছরের পরিবর্তনে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংকটি সার্বিক সূচকে এক বছরে ভালো প্রবৃদ্ধি করেছে বলে সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলন করে জানায় ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের মে মাসে ব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভায় পরিচালনা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলমকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মো. আবদুল মাবুদ সরিয়ে দেয়া হয়। এরপর প্রফেসর সৈয়দ আহসানুল আলম পরিচালক পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এদিকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন প্রফেসর ড. মো. নাজমুল হাসান। প্রফেসর মো. নাজমুল হাসান ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। এরপর উন্নয়ন অর্থনীতি ও হিউম্যান নিউট্রিশন বিষয়ে তিনি উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে প্রফেসর হিসেবে যোগদান করেন এবং বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।