Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দেশের বিমানবন্দরগুলোতে নেই চিকিৎসা কেন্দ্র

| প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নেই আধুনিক সুবিধার মেডিক্যাল সেন্টার, যে কোনো দুর্যোগে জরুরি চিকিৎসাসেবার বড় ধরনের ঝুঁকি রয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার : দেশের বিমানবন্দরগুলোতে চিকিৎসাসেবার মান খুবই নিম্নমানের। বিশেষ করে যে কোনো দুর্ঘটনায় বা গুরুতর অসুস্থ রোগীদের (যাত্রী) জরুরি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নেই আধুনিক সুবিধার মেডিক্যাল সেন্টার। ফলে যে কোনো দুর্যোগে জরুরি চিকিৎসাসেবার রয়েছে বড় ধরনের ঝুঁঁকি। অভ্যন্তরীণ প্রতিটি বিমানবন্দরে জরুরি সেবা প্রদানের জন্য মাত্র একজন চিকিৎসক থাকলেও নেই কোনো চিকিৎসা কেন্দ্র। তবে সিভিল এভিয়েশন জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর সংস্কারসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সিভিল এভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশনের (আইকাও) নিয়ম অনুসারে, প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক সরঞ্জামসহ একটি স্বাস্থ্যসেবা ইউনিট থাকতে হবে। একইসঙ্গে বিমানবন্দরের স্বাস্থ্যসেবা ইউনিটটি নিকটবর্তী বড় হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে হয়। যেন যে কোনো সময় বিমানবন্দরে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে পাঠানো যায়। তবে আইকাও কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর নিয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা রাখেনি। অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে দেশের সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ যাত্রী পরিবহনের হারে যাবতীয় ব্যবস্থা নেয়। যাত্রী পরিবহনের হার অনুপাতে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা রাখা জরুরি। যাতে যে কোনো জরুরি মুহূর্তে যাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা যায়।
সিভিল এভিয়েশনের তথ্যমতে, দেশে সচল বিমানবন্দর রয়েছে আটটি। এর মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তিনটি। শুধু অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য পাঁচটি বিমানবন্দর ব্যবহৃত হচ্ছে। এগুলো হলোÑ কক্সবাজার বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, বরিশাল বিমানবন্দর, রাজশাহীর শাহ মাখদুম বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর।
যশোর বিমানবন্দরে ফার্স্টএইড ব্যবস্থা থাকলেও নেই মেডিক্যাল সেন্টার। বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক আলমগীর পাঠান জানান, একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্যক্তি রয়েছেন, যিনি ফার্স্টএইড কার্যক্রম পরিচালনা করেন। জরুরি কোনো প্রয়োজন হলে যেন প্রাথমিক ব্যবস্থা নিয়ে হাসপাতালে পাঠানো যায়।
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের অবস্থাও একই রকম। সেখানে একজন চিকিৎসক থাকলেও মেডিক্যাল সেন্টার নেই। বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক শাহীন আহমেদ বলেন, আমাদের এখানে একজন চিকিৎসক আছেন। তিনি একটি কক্ষে বসেন। তবে আলাদা করে মেডিক্যাল সেন্টার নেই। তবে সামগ্রিকভাবে বিমানবন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে, তখন এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
রাজশাহীর শাহ মাখদুম বিমানবন্দরে একজন মেডিক্যাল অ্যাসিসট্যান্ট ও ফার্স্টএইড ক্রু থাকলেও মেডিক্যাল সেন্টার নেই।
ওই বিমানবন্দরটির ব্যবস্থাপক সেতাফুর রহমান বলেন, বর্তমান অবকাঠামোতে অনেক কিছু করা সম্ভব নয়। তবে অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তখন একটি বিমানবন্দরে যেসব সুবিধা দরকার, তা নিশ্চিত করা হবে।
সিভিল এভিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, পাঁচ বছরে অভ্যন্তরীণ রুটে যাত্রী পরিবহনের হার দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। ২০১৩ সালে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ১২ হাজার ৫২৬টি ফ্লাইটে ছয় লাখ ৪৮ হাজার ১৯ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০১৪ সালে ২৪ হাজার ১২৭টি ফ্লাইটে ছয় লাখ ৮৫ হাজার ১৯৮ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০১৫ সালে ৩২ হাজার ২১২টি ফ্লাইটে ৯ লাখ ১২ হাজার ৬৪৪ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। ২০১৬ সালে ৩৮ হাজার ২০টি ফ্লাইটে ১০ লাখ তিন হাজার ৩১ জন যাত্রী যাতায়াত করেন। আর ২০১৭ সালে ৩৮ হাজার ৫৭টি ফ্লাইটে যাতায়াত করেন ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৫৩৭ জন যাত্রী।
সিভিল এভিয়েশনের সদস্য (পরিকল্পনা ও পরিচালনা) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দ্রæত এসব সঙ্কট কাটিয়ে ওঠার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোর সংস্কার কাজ ও নতুন টার্মিনাল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। সব বিমানবন্দরে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা বাড়ানোসহ মেডিক্যাল সার্ভিস বৃদ্ধি করা হবে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ