পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী ব্যুরো : বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ শেষ হলেও এর রেশ কাটেনি। অনেক বছর পর এমন একটা সমাবেশ সফল হওয়ায় আয়োজকরা তৃপ্ত। তৃণমূল থেকে শুরু করে উপজেলা জেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত। সমাবেশ ঘিরে মাস দেড়েক ধরে চলছিল প্রস্তুতি। জেলা থেকে উপজেলা। আর নগরীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে হয়েছে প্রস্তুতি সভা। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবড়ানী মামলা নির্যাতন ক্ষমতাসীন দলের চোখ রাঙানীতে অনেকটা কোনঠাসা ছিল বিএনপি কর্মীরা। নেতাকর্মীদের অনেককে প্রত্যেক মাসেই আদালতে হাজিরা দিতে পেরেশান হতে হয়েছে। এখনো মামলা রয়েছে। শুরুর দিকে বেশ কমাস ছিল ঘরছাড়া। ব্যবসা বাণিজ্যও লাটে ওঠে। সংসার খরচ আর আদালতের খরচ যোগাতে হিমসিম অবস্থা। অনেক কে আবার জেলের ঘানি টানতে হয়েছে। এখনো রয়েছে অজ্ঞাত আসামীর তালিকায় ঢুকে যাবার আতঙ্ক। এমন বিরুপ অবস্থার মুখে অনেকে ছিল একেবারে নীরব। সেই নীরবতার পালে বাতাস এনে দিল রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ। বিভাগের আট জেলা আর সাংগঠনিক দুই জেলা মিলে দশ জেলার নেতাকর্মীরা অনেকদিন পর একসাথে রাজপথ কাঁপালো। যদিও বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর পর থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা ছিল ক্ষুব্ধ। বিভাগীয় সমাবেশের ডাক পেয়ে নড়ে চড়ে বসে। যদিও শঙ্কা ছিল শেষ পর্যন্ত সমাবেশ হয় কিনা। তবে অন্যস্থানের মত ঠিক আগ মুহুর্তে অনুমতি হতে পারে এমন আসা নিয়ে চলে প্রস্তুতি। মাসখানেক আগেই বিভাগীয় সমাবেশের জন্য মাদরাসা ময়দান চেয়ে রাজশাহী সিটি মেয়র ও রাজশাহী বিএনপি মহানগর সভাপতি মোসাদ্দক হোসেন বুলবুল পুলিশ কমিশনারের অফিসে গিয়ে দরখাস্ত জমা দেন। অনুমতি না পেয়ে দু’বার তারিখ পেছানো হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা এসে সভা করে শেষ পর্যন্ত ১৫ এপ্রিল যে কোন মূল্যে বিভাগীয় সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। এনিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যেও ছিল উত্তেজনা। সমাবেশের কদিন আগে ঢাকা থেকে চলে আসেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু, সাবেক মন্ত্রী ও সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ কেন্দ্রীয় বেশ কজন নেতা। পুলিশের পক্ষ থেকে দুদিন আগে মেলে সমাবেশের অনুমতি। সাথে একদিনের জন্য প্রচার মাইকিংয়ের অনুমতি। তবে অনুমতি মেলেনি মাদরাসা ময়দানের। পরিবর্তে দেয়া হয় ভুবনমোহন পার্ক। আগের সেই ভুবনমোহন পার্ক নেই। এখন সেখানে বড়জোর শ’তিনেক মানুষ নিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। তা আবার মধ্য শহরে। এতে ক্ষুব্ধ হলেও সিদ্ধান্ত হয় সেখানে বিভাগীয় সমাবেশ হবে। ভুবনমোহন পার্ক হবে মঞ্চ আর আশেপাশে রাস্তা হবে সমাবেশে আসা লোকজনের দাঁড়াবার স্থান। রাজশাহীর বিভিন্ন হোটেলে নজরুল ইসলাম খান, বরকতুল্লাহ বুলু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, অবস্থান নেন। সেখানে ভীড় জমে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন সমূহের বিভিন্ন পয্যায়ের নেতা কর্মীদের। কটাদিন হোটেলগুলো ছিল সরগরম। নেতাদের কাছে পেয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ছিল খুশী। নেতারা তাদের দিক নির্দেশনা ও উৎসাহ জোগান। জনসভাকে সফল করার জন্য। এর বাইরে মাস খানেক ধরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সেক্রেটারী শফিকুল হক মিলনসহ সাংগঠনিক সম্পাদক শাইিন শওকত বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা চষে ফেরেন নগর হতে গ্রাম পর্যন্ত। যার যার জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করেন। জেলা পর্যায়ের নেতারা ছিলেন তৎপর। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অনেক বাধা বিপত্তি পেরিয়ে অবশেষে অনুষ্ঠিত হলো বিভাগীয় সমাবেশ। সকাল থেকে বাইরে থেকে দলে দলে লোক এসে জড়ো হতে তাকে ভুবনমোহন পার্কের আশেপাশে। রোদ্র ছিল চড়া। দুপুরের পর পর একের পর এক মিছিল আসতে থাকে। মঞ্চে নেতা আর সামনে মহিলা দলের কর্মীতে ভরে যায় ভুবনমোহন পার্কের স্বল্প পরিসর। এক কোনে বসানো হয়েছিল মিডিয়ার জন্য মঞ্চ। আশেপাশের ছাদও খালি ছিলনা। পুলিশ ও নগরীর বিভিন্ন প্রবেশ পথে ব্যারিকেড দেয়। বাস, ট্রাক থেকে নেমে পায়ে হেটে মিছিল করে সমাবেশ স্থলে হাজির হন বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা। কারো গায়ে টি শার্ট কারো মাথায় ফিতে বাঁধা। মুখে মুখে ¤েøাগান নেত্রী মোদের মা বন্দী থাকতে দেবনা। কে বলেরে জিয়া নেই। জিয়া মোদের চেতনায়। এমন নানা ¤েøাগানে চারিদিক মুখরিত হয়ে ওঠে। পার্কের আশেপাশে সাহেব বাজার, মালোপাড়া, গণকপাড়া, বাটারমোড়, সোনাদিঘী মোড় পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় অবস্থান করে সমাবেশে আগতরা। দাড়িয়ে নেতাদের বক্তব্য শোনেন। সমাবেশে মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগির প্রধান অতিথির আসন অলংকৃত করার কথা থাকলেও তার মায়ের মৃত্যু জনিত কারণে আসতে পারেননি। তবে এসেছিলেন অনেক সিনিয়র নেতা। তারা আলোকিত করেছিলেন মঞ্চ। তবে রাজশাহীর আরেক প্রিয়মুখ সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর অনুপস্থিতি অনেককে হতাশ করেছে। বিএনপি রাজশাহী বিভাগীয় সমাবেশ সুষ্ঠুভাবে সফল হওয়ায় আয়োজকদের পাশপাশি কেন্দ্রীয় নেতারাও বেশ খুশি। বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেন রাজশাহী অঞ্চলের মাটি বিএনপির দুর্জয় ঘাটি। তা ফের প্রমাণিত হলো। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপি আগের মত সব আসনেই জিতবে। সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল বলেন, সমাবেশের জন্য মাদরাসা ময়দান পেলে দেখানো যেত জনসমুদ্র। সাধারণ মানুষের মাঝেও এনিয়ে আলোচনা সমালোচনা কম নয়। সমাবেশে কত লোক হয়েছিল। মাদরাসা মাঠে সমাবেশ করতে দিলে কি ক্ষতি হতো এমন সব বিষয় নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। বিশেষ করে সাহেব বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এখানে সমাবেশ করতে দেয়ায়। তাদের ব্যবসা বাণিজ্যের বিঘœ ঘটে। সব মিলিয়ে সমাবেশ সফল হওয়ায় বিএনপির সবার মাঝে ছিল প্রশান্তি। বিশেষ করে সামনে সিটি নির্বাচন। তার আগে এমন বড় সমাবেশ কর্মীদের উজ্জীবীত করতে সামনের দিনগুলির জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।