পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশের পণ্য ও সেবা উভয় ক্ষেত্রেই বেঁড়েছে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ। তাই সামগ্রিক বাণিজ্য ঘাটতিতে একের পর এক রেকর্ড করছে দেশ। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের আট মাসে (জুলাই-ফেব্রæয়ারি) মোট বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার বা ৯৭ হাজার কোটি টাকার বেশি। মূলত আমদানি ব্যয় বাড়ছে লাগামহীনভাবে। সে অনুযায়ী বাড়ছে না রফতানি আয়। ফলে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে বাণিজ্য ঘাটতি। লেনদেনের চলতি হিসাব ভারসাম্যে।
এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ২০১০-১১ অর্থবছরে; ৯৯৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার। ২০১১-১২ অর্থবছরে ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৯৩২ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের সাত মাসে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি এক হাজার ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার দাঁড়ায়। যা দেশের ইতিহাসে এটি সর্বোচ্চ বাণিজ্য ঘাটতি। একমাস পর ফেব্রæয়ারিতে এ ঘাটতি আরও বাড়লো। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আট মাস শেষে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৭৩ কোটি ২০ লাখ ডলার, যা গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৬০৮ কোটি ৯০ লাখ ডলার। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বাণিজ্য ঘাটতি বেঁড়েছে ৫৬৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার বা ৯২ শতাংশের উপরে। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, প্রতি ডলার ৮৩ টাকা হিসেবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ বেড়েছে ৪৬ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, রফতানি আয়ের চেয়ে আমদানি ব্যয় যতটুকু বেশি, তার পার্থক্যই বাণিজ্য ঘাটতি। দেশে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ চলছে। এসব বড় বড় প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ায় প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আমদানি বেড়ে গেছে। এছাড়াও শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনীয় যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বেড়েছে। এসব কারণেই বাণিজ্য ঘাটতি বাঁড়ছে। তবে এই ঘাটতি মেটানো হয় রেমিট্যান্স ও বিদেশি বিনিয়োগ দিয়ে। এই খাতেও নি¤œগতি রয়েছে। ফলে বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে (ব্যালান্স অফ পেমেন্ট বা বিওপি) ঋণাত্মক হয়ে পড়েছে। এ অবস্থা বিদ্যমান থাকা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি ভালো নয় বলে মনে করছেন তারা।
তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমাদের আমদানি যে হারে হয়েছে সেই হারে রফতানির প্রবৃদ্ধি বাড়েনি। এ কারনেই বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে। এদিকে রেমিটেন্স প্রবাহও এখন কম। সব মিলিয়ে চলতি হিসাব ঋণাত্বক হয়ে পরেছে। এ লেনদেনে ঘাটতি দীর্ঘমেয়াদি হলে তা অর্থনীতির জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, দেশে আমদানির পরিমাণ বেঁড়েছে এটা মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য হলে ভালো। তবে সে হারে দেশে বিনিয়োগ বাড়েনি। তাই আমদানির নামে অর্থ পাচার হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা উচিত।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ফেব্রæয়ারি শেষে ইপিজেডসহ রফতানি খাতে বাংলাদেশ আয় করেছে দুই হাজার ৪০৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আমদানি বাবদ ব্যয় হয়েছে তিন হাজার ৫৮২ কোটি ডলার। এ হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় এক হাজার ১৭৩ কোটি ২০ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী, প্রতি ডলার ৮৩ টাকা হিসেবে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৭ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আলোচিত সময়ে, আমদানি বেঁড়েছে ২৬ দশমিক ২২ শতাংশ হারে। অন্যদিকে রফতানি বেঁড়েছে মাত্র ৮ দশমিক ০৬ শতাংশ। ফলে চলতি হিসাবে ঘাটতি বড় হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকার অর্থ হলো নিয়মিত লেনদেনে দেশকে কোনো ঋণ করতে হচ্ছে না। আর ঘাটতি থাকলে সরকারকে ঋণ নিয়ে তা পূরণ করতে হয়। সেই হিসাবে উন্নয়নশীল দেশের চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত থাকা ভালো। কিন্তু গত কয়েক বছর উদ্বৃত্ত থাকলেও গেল অর্থবছরে ঋণাত্মক ধারায় চলে গেছে। জানুয়ারি শেষেও এ ধারা অব্যাহত রযেছে। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থবছর জুড়ে চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত ছিল। এতে বৈদেশিক দায় পরিশোধে সরকারকে বেগ পেতে হয়নি। কিন্তু ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১৪৮ কোটি ডলার (-) ঋণাত্মক হয়। যা এখনো অব্যাহত রযেছে।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের ফেব্রæয়ারি শেষে ৬৩১ কোটি ৮০ লাখ ডলার ঋণাত্মক হয়েছে। আলোচিত সময়ে সেবাখাতে বিদেশিদের বেতনভাতা পরিশোধ করা হয়েছে ৫৭৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার। আর বাংলাদেশ এ খাতে আয় করেছে মাত্র ২৮০ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ হিসাবে আট মাসে সেবায় বাণিজ্যে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। যা গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল (ঘাটতি) ২১১ কোটি ৭০ লাখ ডলার।
দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কিছুটা বেঁড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রæয়ারি সময়ে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) দেশে এসেছে মোট ১২৬ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১২৫ কোটি ডলার। আলোচিত সময়ে শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ বেঁড়েছে। চলতি অর্থবছরের আট মাসে নিট পোর্টফোলিও বিনিয়োগ হয়েছে ৩১ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৪ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।