Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

চট্টগ্রামে চাচা-ভাতিজার জাল টাকার কারবার

বাটন চাপ দিতেই কড়কড়ে নোট

| প্রকাশের সময় : ১৩ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

 

রফিকুল ইসলাম সেলিম : অত্যাধুনিক ডিজিটাল মেশিন। বাটন চাপ দিতেই বেরিয়ে আসে হাজার আর পাঁচশ টাকার নোট। এতটাই নিখুঁত যে বোঝার উপায় নেই এ টাকা জাল না আসল। এসব টাকা চলে যায় জালিয়াত চক্রের হাতে। লাখ টাকার বান্ডেল বিক্রি হয় ২০ হাজার টাকায়। এরপর তা ছড়িয়ে দেয়া হয় চট্টগ্রাম মহানগরীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়। রমজান আর ঈদ বাজারকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রস্তুতি ছিল তাদের। তবে তার আগেই ৩০ লাখ টাকার জাল নোটসহ ধরা পড়েন চাচা-ভাতিজা। বুধবার গভীর রাতে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর জাল টাকার ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেন তারা। তাদের দেখানো মতে, টাকা তৈরির প্রিন্টার, কম্পিউটার ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম আমিরাবাদ হাজ্জী পাড়ার আবদুর শুক্কুরের পুত্র মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩২) ও সামসুল ইসলাম পুত্র মোঃ জাহেদ হোসেন (২২)। সম্পর্কে তারা চাচা-ভাতিজা। নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৩০ লাখ টাকার জাল নোটসহ ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেখানো মতে, লোহাগাড়ায় তাদের গ্রামের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় জাল টাকা তৈরির সরঞ্জাম।
গতকাল নগর পুলিশ সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) মোঃ শহীদুল্লাহ জানান, গ্রেফতারকৃত দুইজন স্বীকার করেছে তারা তাদের আমিরাবাদস্থ বাড়িতে উন্নত মানের প্রিন্টার ও স্ক্যানারের সাহায্যে ১০০০ টাকা ও ৫০০ টাকা সমমানের জাল নোট তৈরি করে। দীর্ঘদিন ধরে তারা জাল টাকার ব্যবসা করে আসছে। তবে রোজা ও কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তারা ব্যাপকভাবে জাল টাকার ব্যবসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গ্রেফতারকৃতরা রেয়াজউদ্দিন বাজার ও তার আশপাশের এলাকায় প্রতারক চক্রের কাছে জাল নোটগুলো বিক্রি করার জন্য নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থান নিয়েছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) এবি সিদ্দীক জানান, তাদের সাথে নিয়ে লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে অভিযান চালানো হয়। সেখানে আনোয়ারের বাড়ি থেকে জাল নোট তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জাল টাকা বানানোর জন্য প্রক্রিয়া করা অবস্থায় আরও কিছু নোটসহ মোট ৩০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। তারা এক লাখ টাকার জালনোট ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে। জালিয়াত চক্রের সদস্যরা এসব টাকা কিনে নিয়ে বিভিন্নভাবে বাজারে ছড়িয়ে দেয়। এবি সিদ্দীক জানান, আমিরাবাদে জাহেদের একটি মোবাইলের দোকান আছে। তার কম্পিউটার ব্যবহার করে আনোয়ার মূলত টাকাগুলো তৈরি করেছে।
জাল টাকাগুলোকে আসল প্রমাণ করার জন্য তারা প্রতিটি বান্ডেলে ব্যাংকের ভুয়া সিল ও কাগজও ব্যবহার করে। গোয়েন্দা পুলিশের এক সদস্য জানান, গ্রেফতারকৃতরা জাল টাকাগুলো বিক্রির পাশাপাশি মাদক কেনাবেচাও করে থাকে। জাল নোটের বান্ডেলের উপরে কয়েকটি আসল টাকা রেখে ভেতরে জাল টাকাগুলো রাখা হয়। মাদক কেনার সময় সেগুলো দিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন সউদি আরবে ছিল আনোয়ার হোসেন। সেখান থেকে দেশে ফিরে কম্পিউটারের দোকানের আড়ালে জাল টাকা ও মাদকের ব্যবসা শুরু করে সে। তার সাথে যোগ দেয় জাহেদ হোসেন। ডিবি পুলিশ জানায়, তাদের রিমান্ডে এনে জালিয়াত চক্রের বাকি সদস্যদের ধরতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ