Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

সড়ক দুর্ঘটনায় হাত হারানো রাজিব এখন লাইফ সাপোর্টে

বিআরটিসির সেই বাসটি জিম্মায় নেয়ার আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


বিশেষ সংবাদদাতা : সড়ক দুর্ঘটনায় ডান হাত হারানো কলেজ ছাত্র রাজীব হোসেনের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসকেরা। তাকে এখন লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পৌনে দুইটার দিকে রাজীবের এ অবস্থার কথা জানান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধান শামসুজ্জামান শাহীন। তিনি সাংবাদিকদের সামনে রাজীবের পরিস্থিতির বর্ণনা করতে গিয়ে আবেগ তাড়িত হন এবং কান্না সংবরণ করেন। গতকাল সকালে অধ্যাপক শামসুজ্জামান জানিয়েছিলেন, মাথায় আঘাতের কারণে নিউরোলজিক্যাল অবস্থার অবনতি হওয়ায় ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার রাজীবকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, গতকাল (সোমবার) রাজীব নিজে উঠে বসে কথা বলেছে। আমি ওকে বলেছি, তুমি খাওয়াদাওয়া করো ঠিকমতো। আমাদের সহযোগিতা করো। আমরা তোমার কৃত্রিম হাত বানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছি। আমরা কাজও শুরু করেছি।
তিনি আরো জানান, গতকাল ভোররাত চারটার দিকে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তাঁকে প্রথম অক্সিজেন দেয়া হয়। নেবুলাইজেশন করার ফলে স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে থাকেন। তখন সাপোর্ট তুলে নেয়া হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে রাজীবের শারীরিক অবস্থার মারাত্মক অবনতি ঘটে। শামসুজ্জামান বলেন, রাজীবের সর্বশেষ সিটিস্ক্যান রিপোর্ট খুবই উদ্বেগজনক। গøাসগো কমা স্কেল (জিসিএস) ১৪ থেকে ১৫ হলে মানুষের মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে কাজ করে বলে ধরে নেয়া হয়। ৮ থেকে ৯ হলে বুঝতে হবে রোগীর অবস্থা সংকটজনক। রাজীবের জিসিএস লেভেল এখন ৩। রাজীবের মামা জাহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার দিবাগত রাত নয়টার দিকে রাজীব বলেছিল, আমি বাড়ি যাব। রাতে যে ছেলে জুস খেলো, সুন্দর কথা বললো, সে এখন কোমায়। সে এখন লাইফ সাপোর্টে, এইটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
অন্যদিকে কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের হাত হারানো মামলায় বিআরটিসির বাসটি জিম্মা নেয়ার আবেদন করা হয়েছে। আজাহার আলী নামে এক ব্যক্তি গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ আবেদন করেন। ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম নবী বিআরটিএ থেকে বাসটির মালিকানা যাচাই করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওই ঘটনায় স্বজন পরিবহনের বাসটির মালিক আসাদুজ্জামান রাজু সোমবার বাসটি জিম্মা নেয়ার আবেদন করেছিলেন। ওই দিন একই আদালত একই ধরনের আদেশ দিয়েছিলেন। শাহবাগ থানার এসআই আফতাব আলী মামলাটি তদন্ত করছেন। গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসের পেছনের ফটকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিলেন রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতকের (বাণিজ্য) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন (২১)। তার একটি হাত বেরিয়েছিল সামান্য বাইরে। হঠাৎই পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসটিকে গা ঘেঁষে ওভারটেক করার সময় রাজীবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কয়েকজন পথচারী দ্রæত তাকে পান্থপথের শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু চিকিৎসকেরা চেষ্টা করেও বিচ্ছিন্ন হাতটি রাজীবের শরীরে আর জুড়ে দিতে পারেননি। এ ঘটনায় গত ৪ এপ্রিল দুই বাস চালককে গ্রেফতার করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ