পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকার দেশের সকল জেলা-উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এসব পরামর্শ কেন্দ্র এসএমই শিল্পের প্রসারে উদ্যোক্তাদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিসের সেবা প্রদান করবে। তিনি বলেন, দেশের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পের বিকাশে জেলায় এবং উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এ পরামর্শ কেন্দ্রগুলো এসএমই শিল্প প্রসারে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসাবে কাজ করবে। উদ্যোক্তাগণ ব্যবসা স্থাপন থেকে শুরু করে ব্যবসা স¤প্রসারণ, ব্যবসায়িক ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ও সহায়তা, পরামর্শক সেবা ইত্যাদি এই ওয়ানস্টপ সেন্টার থেকে গ্রহণ করতে পারবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
গতকাল সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ৬ষ্ঠ জাতীয় এসএমই মেলা-২০১৮’র উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্য রাখেননি। পরিবর্তে বক্তব্যের লিখিত কপি সবার মধ্যে বিতরণ করা হয়। এসএমই ফাউন্ডেশন এবং এফবিসিসিআই যৌথভাবে ৪ থেকে ৮ এপ্রিল পর্যন্ত পাঁচদিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি বিভাগীয় শহরে প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে পণ্যের প্রদর্শনী ও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হবে। বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে এসএমইর গুরুত্ব অপরিসীম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসএমই সবচেয়ে শ্রমঘন ও স্বল্পপুঁজি নির্ভর খাত হওয়ায়, এই খাতের মাধ্যমে স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগে অধিক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ৯০ শতাংশ শিল্পই ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের অন্তর্ভুক্ত। তাই জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসএমই খাত গুরুত্বপূর্ণ। জিডিপিতে এসএমই খাতের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগত সুরক্ষার মাধ্যমে দেশের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে তার সরকার ‘জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬’-তে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতকে শিল্প উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম হিসাবে গণ্য করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের গৃহীত কর্মসূচির ফলে দেশব্যাপী টেকসই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের দ্রæত প্রসার ঘটছে। উদ্যোক্তাবান্ধব নীতির কারণে প্রতিনিয়ত নারীরা ব্যবসায়ে মনোনিবেশ করছে। ফলে দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থান, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির অনেক সূচকে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোকে ছাড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেই, তখন বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। অনেক দেশ বিশ্বমন্দার অভিঘাত কাটিয়ে উঠতে পারেনি। কিন্তু আমরা সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে দেশকে একটি শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছি।
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৪৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে এখন বাংলাদেশ মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫২ মার্কিন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। প্রবৃদ্ধির হার বেড়ে ৭ দশমিক ৬৫ শতাংশে উন্নীত।
সরকার প্রধান বলেন, বর্তমানে ১৯৯টি দেশে ৭৫০টি পণ্য রপ্তানি করা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ৪১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশী পণ্যের রপ্তানির হার বৃদ্ধির ফলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩৫ বিলিয়ন ডলার। যা ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে। তিনি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে সারা দেশে ১০০টি ইকোনমিক জোন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। ইকোনমিক জোনসমূহ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ শিল্পায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
বাংলাদেশে কুটির শিল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী জামদানি, নকশিকাঁথা এবং সিলেটের শীতল পাটি ইতোমধ্যে ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য-তালিকায় স্থান পেয়েছে। উদ্যোক্তাগণ এ সকল পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি বাজার স¤প্রসারণের উদ্যোগ নিতে পারেন।
মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিভিন্ন দেশের পণ্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে নতুন ও আধুনিক প্রযুক্তি আয়ত্বকরণ এবং পণ্যের গুণগত মানোন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, এসএমই মেলা দেশে উৎপাদিত এসএমই পণ্যের পরিচিতি বৃদ্ধির পাশাপাশি ক্রেতা আকর্ষণ ও বাজার স¤প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। এ ধরনের মেলা আয়োজনের মাধ্যমে এসএমই খাতের অনেক সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত হবে এবং যথাযথ স্বীকৃতি পাবে।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সভাপতিত্ব করেন। এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, শিল্প সচিব মো. আব্দুল্লাহ এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন কেএম হাবিবুল্লাহ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে সফল এসএমই উদ্যোক্তাদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করে প্রধানমন্ত্রী মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।