Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা

| প্রকাশের সময় : ৫ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম


সাম্প্রতিক সময়ের সর্ববৃহৎ মানবিক বিপর্যয় রোহিঙ্গা সমস্যা
বর্ষায় রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায়
আসছে শতাধিক দাতা সংস্থা
শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে : মিয়ানমারের আরাকান (রাখাইন) রাজ্য থেকে সেদেশের সেনা-পুলিশ ও মগ দস্যুদের নির্যাতন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গাদের নিয়ে উদ্বিগ্ন আজ বিশ্ব সম্প্রদায়। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁিকতে রয়েছে এসব রোহিঙ্গা শরনার্থীরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে রোহিঙ্গা সমস্যাটি সাম্প্রতিক সময়ের সর্ববৃহৎ মানবিক বিপর্যয়। বর্ষায় রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়ে আসছে শতাধিক দাতা সংস্থা। রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ১৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তা চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিøউএইচও)।
জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক ড. পুণম ক্ষেত্র পাল রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য ঝুঁিক মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি সহযোগিতার এ আহŸান জানিয়েছেন। আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার সঠিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে আর্থিক সঙ্কট রয়েছে বলেও জানান তিনি। তাছাড়া আসছে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের ফলে স্বাভাবিক জীবন-যাপন ব্যাহতসহ নানা রোগব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে তাদের। এই সমস্যা মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
গত ২৯ মার্চ ২০১৮ ইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহŸান জানান তিনি। ড. পালের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে এটি সর্ববৃহৎ মানবিক বিপর্যয়। বাংলাদেশ সরকার বা কোনো একক সংস্থার পক্ষে বিশাল এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবন রক্ষাও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গারা পাহাড়ের ওপর যেখানে আশ্রয় নিয়েছেন সে এলাকা সাইক্লোন ও ভূমিধস প্রবন এলাকা। বর্ষা এলেই পাহাড়ের মাটি ধসে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাছাড়া বিশুদ্ধ পানির অভাব ও ডেঙ্গু ও ম্যালেরিয়াবাহী মশার প্রকোপ রয়েছে প্রচুর। সহযোগীদের সঙ্গে এক বৈঠকে মি. পাল প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি শতাধিক দাতা সংস্থা আসছে বর্ষায় রোহিঙ্গাদের জীবন ও স্বাস্থ্য রক্ষায় নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
জানা গেছে, রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে নির্মিত স্থাপনার এক চর্তুথাংশ ভূমিধ্বসের ঝুঁকিতে থাকায় সেগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে। এপ্রিলে আরেক দফা কলেরা ও মিজেলস এর টিকা দেয়া হবে। ইতিপূর্বে রোহিঙ্গা শরনার্থীদেরকে ৯ লাখ ডোজ ডায়রিয়ার টিকা প্রদানের পাশাপাশি দুই দফা মিজেলস ও তিন দফা ডিপথেরিয়ার টিকা দেয়া হয়েছে।
ড. পুনম ক্ষেত্র পাল জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আসন্ন বর্ষা মৌসুমের জন্য আগাম ওষুধ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি মজুদ করছে। রোহিঙ্গা সমস্যা শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১২০টন ওষুধ ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে।
বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে দেখাগেছে, যেসব পাহাড়ে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে সেখানে গাছপালা নেই। তাছাড়া থাকার উপযোগী করতে গিয়ে মাটি কেটে সমান করা হয়েছে অধিকাংশ জায়গায়। আসন্ন বর্ষায় নিশ্চিত মাটি ধস ও পাহাড় ধসের আশঙ্কা করছেন সেখানে বসবাসকারীরা। এছাড়াও রয়েছে নানা জটিল রোগব্যধির ঝুঁকি।

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ