Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ইমরান এইচ সরকারের চাচাত ভাই খুন

প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : গণজাগরন মঞ্চের প্রধান ইমরান এইচ সরকারের চাচাত ভাই দাতাউর রহমানের (২৬) ঝুলন্ত লাশ রোববার দুপুরে রৌমারী থানা পুলিশ উদ্ধার করেছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত পিলার ১০৭২এর নিকট ব্যাপারী পাড়ার জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁশ ঝাড় থেকে এ লাশ উদ্ধার করা হয়।
রৌমারী থানার এস আই মশিউর রহমান ও এস আই আতাউর রহমান জানান, এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে দুপুর সোয়া ২টায় লাশ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। ধারনা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা দাতাউর রহমানকে হত্যা করে বাঁশঝাড়ের জঙ্গলে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। ঝুলন্ত লাশ থেকে ২০০গজ দুরে ২ধরনের দুটি স্যান্ডেল, কয়েকটি পরিত্যক্ত ব্লেড ও সিগারেটের প্যাকেট, সিগারেটের মুড়ো পাওয়া যায়। সেখানে মাটিতে ধস্তাধস্তির আলামত পাওয়া গেছে। পড়ে আছে পোড়া মবিলের জেরিকেন। শরীরে পোড়া মবিল লাগিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এতে বোঝা যাচ্ছে এক স্থানে হত্যার পর অন্য স্থানে লাশ ঝুলিয়ে রাখে আত্মহত্যা হিসাবে চালিয়ে দেয়ার জন্য। ঘটনাটি রহস্যে আবৃত।
যাদুরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, রৌমারীর লাঠিয়ালডাঙ্গা গ্রামের আব্দুস সামাদের ৩পুত্র ও ২ কন্যার মধ্যে দাতাউর সবার বড়। রোববার সকালে ব্যাপারী পাড়ার জিঞ্জিরাম নদীর উপর বাঁশ ঝাড়ে ঝুলন্ত লাশ দেখে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। রৌমারী থানার এস আই মশিউর রহমান ও এস আই আতাউর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে এসে লাশ ও আলামত উদ্ধার করে। মেম্বার আবুল কাশেম ও রৌমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, নিহত দাতাউর সহজ সরল প্রকৃতির ছিল। সে কৃষি কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিল।
নিহতের মামা আবুল হাসেম ও খালু নজরুল ইসলাম জানান, শনিবার বিকালে মা হনুফা বেগমের সাথে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। যাবার সময় আত্মহত্যা করার হুমকী দেয়। মামাত ভাই আনোয়ারের স্কুল পড়–য়া মেয়ের সাথে দাতাউরের ছিল প্রেমের সম্পর্ক। এটি দুই পরিবার ও আত্মিয় স্বজনরা মেনে নেয়নি। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল।
নিহতের মা হনুফা বেগম বলেন, অভিমান করে গেলেও রাত ১০টার দিকে বাড়িতে ভাত খেতে আসে। শুনেছেন অনেক রাত পর্যন্ত বালিয়ামারী বাজারে একটি চায়ের দোকানে টিভি দেখে। এর পর বালিয়ামারী বাজার সংলগ্ন নিজেদের অপর একটি বাড়িতে চাচাত ভাই সাদ্দামসহ ঘুমায়। এরপর কি হয়েছে তা আর কেউ বলতে পারছে না।
নিহতের বাবা আব্দুস সামাদ বলেন, ভাতিজি সম্পর্কের এক মেয়েকে বিয়ে করতে চায় দাতাউর। পরিবার থেকে তা মানা হয়নি।
গ্রামবাসীদের সূত্রে জানা যায়, মামা বাড়ির সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এছাড়া পারিবারিক দ্বন্দ্ব এবং প্রেমের সম্পর্কের দিকেও অভিযোগের তীর সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে।
রৌমারী থানার অফিসার ইন-চার্জ এ বি এম সাজেদুল ইসলাম জানান, সুরতহাল রিপোর্টে শরীরে আঘাতের কোন চিহ্ন নেই। গলার দাগও বোঝা যায়না। কাজেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার বিষয়টি যথেষ্ট সন্দেহজনক। আর নিহতের পরিবার থেকে মামলায় আগ্রহী না হওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে ইউডি মামলা রেকর্ড করেছে। এখন লাশ কুড়িগ্রামে পাঠানো হচ্ছে ময়না তদন্তের জন্য। সঠিক কারণ উদঘাটন করে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ