Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নৌকায় ভোট চাওয়া আমার রাজনৈতিক অধিকার

গণভবনে আ‘লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধামন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, নৌকায় ভোট চাওয়া আমার অধিকার। কারণ, আমি তো একটা দলের সভানেত্রী। কাজেই আমি যেখানেই যাবো অবশ্যই আমার দলের জন্য আমি ভোট চাইবো। এটা আমার রাজনৈতিক অধিকার। সম্প্রতি ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় সরকারি সফরের পাশাপাশি নিজ দলের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিষয়টির সমালোচনা করে বিএনপিসহ অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সরকারি খরচে নিজ দলের নির্বাচনি প্রচার চালাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। সমালোচকদের ওই অভিযোগের জবাবে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সকলকে নৌকা মার্কায় ভোট চাওয়ার আহŸান জানিয়ে দলটির সভাপতি বলেন, আগামী নির্বাচন হবে। অবশ্যই আমাদের সকলকে জনগণের কাছে যেতে হবে। নৌকায় ভোট চাইতে হবে। সকলকে বলতে হবে এবং বোঝাতে হবে; একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই এদেশের মানুষ উন্নতি পায়। তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দিয়েই দেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে, রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেয়েছে আর দেশের উন্নতির ছোঁয়াটাও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই পেয়েছে। কাজেই এই কথাটা সকলকে বলতে হবে, যে আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই আর দেশের উন্নয়ন করার সুযোগ চাই।
বিএনপি জোটের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ক্ষমতায় আসে ভোগবিলাস করতে, অর্থসম্পদ বানাতে আর মানুষ খুন করতে। ওই বিএনপি জামায়াত জোট মানুষ পুড়িয়ে পুড়িয়ে মারতে পারে। মানুষের ক্ষতি করতে পারে। মানুষকে অত্যাচার করাই তাদের কাজ। আর আমাদের কাজ হচ্ছে আমরা দেশকে শান্তিপূর্ণ করে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। মানুষকে সেবা করাই আমাদের কর্তব্য। এই সেবা করার সুযোগটাই আমরা চাই।
ভ‚-রাজনৈতিক অবস্থানের ফলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে বাংলাদেশের গুরুত্ব তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে এখানে আমরা অনেক কাজ করতে পারি। যার মাধ্যমে আমরা নিজেরাই অর্থ উপার্জনের পথ করে নিতে পারি। কিন্তু এদিকে কেউ কখনো দৃষ্টি দেয়নি। প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মাঝে সেতুবন্ধন করার দয়িত্বটা বাংলাদেশ নিতে পারে। সেখান থেকেই আমদের বিরাট অর্থনেতিক অর্জন হতে পারে। কিন্তু এগুলো কখনো কেউ সেভাবে বোঝেও নাই, ভাবেও নাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে নিয়ে যাবো। আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছি। একদিন আমরা উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবো।
বৈঠকের শুরুতে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় দলের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারা। এসময় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার হাতে ফুলের তোড়া তুলে দেন। কার্যনির্বাহী এই সভায় দলের সিনিয়র নেতাদের মধ্যে মতিয়া চৌধুরী, কাজী জাফরউল্লাহ, সাহারা খাতুন, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে রূদ্ধদ্বার বৈঠক চলছিল।
লুসি হল্টকে নাগরিকত্বের সনদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশকে ভালোবেসে মানব সেবায় ৫৭টি বছর কাটিয়ে দেয়া ব্রিটিশ নাগরিক লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট পেলেন নাগরিকত্বের সনদ। গতকাল শনিবার বিকালে লুসি হল্টের হাতে বাংলাদেশের নাগরিকত্বের সনদটি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন।
৮৭ বছর বয়সী লুসি জীবনের ৫৭ বছর কাটিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশে; এদেশের মাটি ও মানুষকে ভালবেসে থেকেছেন নিজের পরিবার ছেড়ে। মৃত্যুর আগে তার একটাই চাওয়া ছিল ‘দ্বৈত নাগরিকত্ব’; যা গতকাল শনিবার তিনি তা পেলেন। ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্ম লুসি হল্টের। বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট।
মানুষের সেবা করার জন্য ১৯৬০ সালে বরিশালের অক্সফোর্ড মিশনে যোগ দেন লুসি। এদেশে এসে অক্সফোর্ড মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়ানো শুরু করেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যশোর ক্যাথলিক চার্চে শিশুদের ইংরেজি পড়াতেন তিনি। যুদ্ধের কারণে চার্চ বন্ধ করে সবাই নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেলেও যাননি লুসি হল্ট। যুদ্ধাহত মানুষদের সেবা করে গেছেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭৩ সালে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের কাছে চিঠি ও উপহার পাঠান লুসি হল্ট। মায়ের পক্ষ থেকে লুসির সেই চিঠির জবাব দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
দীর্ঘ কর্মজীবন শেষ করে ২০০৪ সালে অবসরে যান লুসি। অবসরে যাওয়ার আগে খুলনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, গোপালগঞ্জ ও ঢাকায় কাজ করেছেন লুসি হল্ট। অবসর জীবনে তিনি বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের শিশুদের মানসিক বিকাশ ও ইংরেজি শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন। অবসরের পর সবাই দেশে ফিরে গেলেও তিনি যাননি। বাংলাদেশে ও বরিশালের সঙ্গে তার আত্মার সম্পর্ক। বাকি জীবনটা বরিশালেই কাটিয়ে দিতে চান লুসি। তার শেষ ইচ্ছা, মৃত্যুর পর তাকে যেন বাংলাদেশের মাটিতেই চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়।
অবসরকালীন ভাতা সাড়ে সাত হাজার টাকা দিয়ে জীবন চালিয়ে নিচ্ছেন লুসি। কিন্তু প্রতিবছর ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ৩৮ হাজার টাকা দেয়া তার জন্য কষ্টকর হচ্ছিল। চলতি বছরের ৮ ফেব্রæয়ারি লুসি হল্টকে ১৫ বছরের মাল্টিপল ভিসা দেয় সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মনিরা হক স্বাক্ষরিত এক চিঠি দিয়ে লুসি হল্টকে এ ভিসা দেয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের জন্য তার ভিসা ফি মওকুফও করা হয়। এখন আর সেসবের প্রয়োজন হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করায় লুসি হল্টকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা
এক সময় শেখ ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছিল জানিয়ে লুসি বলেন, শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে পেরে তিনি আনন্দিত।
নাগরিকত্বের সনদ পাওয়ার এ অনুষ্ঠানে শেখ রেহানার সঙ্গেও কথা বলেন লুসি হল্ট। গণভবনে এই অনুষ্ঠানে মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • Nur ১ এপ্রিল, ২০১৮, ১২:৩৮ এএম says : 0
    Ami boro ata mantee hobe ata bekti odikare hosto kef gonotontro hotee parena.
    Total Reply(0) Reply
  • rakib ১ এপ্রিল, ২০১৮, ৭:৫০ এএম says : 0
    Awami League KE Awami League ER NIJER LOK RAI VOTE DIBE NA !! EVEN JARA SHARA JIBON Awami League ER SUPPORTER SILO, TARAO AKHON BIROKTO !! SATRO LIGER , CHADA BAJI, DHORSHON, BANK LUTT, SHAIRBAJAR, INDIA KE SHOB MELE DEWA, SHOB MILIE EVEN Awami League ER SUPPOT ER RAI BIROKTO , VOTE MILBE NA !!! ONNE RA TO PARLLE ...........
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২ এপ্রিল, ২০১৮, ৪:১৩ এএম says : 0
    প্রধানমন্ত্রী হিসাবে তিনি যেখানেই যান সেটাই রাষ্ট্রিয় সফর এবং সেসব খরচ রাষ্ট্র বহন করে এটাই প্রথা তাই না? এখন প্রশ্ন সেসব অনুষ্ঠানে তিনি ভোট চাইতে পারেন কিনা? আমরা জানি এসব সভায় প্রাসঙ্গিক কথা আসে তখন সেটা কোন পর্যন্ত যেতে পারে এটাও প্রশ্ন তাই না?? পূর্বে এধরনের অনেক হয়েছে কিন্তু কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হননি তাই এটা এভাবে সকলের নজরে আসেনি। এখন এসব নিয়ে যেহেতু প্রশ্ন উঠেছে তাই আমি মনে করি আওয়ামী লীগের জাঁদরেল আইনজীবীদের এখন এটা নিয়ে রীতিমত গবেষনা করে দেখে এর উপর বিস্তারী প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করানো উচিৎ তাই না?? আল্লাহ আমদের দেশের রাজনীতিবিদদেরকে সঠিক ভাবে তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা দান করুন। আমীন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ