পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ক্ষমতাসীন মহাজোটের মূল শরিক আওয়ামী লীগ বরিশাল বিভাগীয় সদরে নেতৃত্বে নিরব পরিবর্তন ঘটিয়ে নির্বাচনী বছরে অবস্থান ক্রমশ সংহত করছে। ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও আসন্ন রমজানের পর পরই বরিশাল সিটি করপোরেশনের ভোট যুদ্ধ শুরু হবে। সে লক্ষ্যকে সামনে নিয়েই দলটি এগুচ্ছে। ২০১৩-এর ১৫ জুন ভোট গ্রহণ শেষে ৯ অক্টোবর বরিশাল সিটি করপোরেশনের বর্তমান নগর পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসেবে আগামী ৮ অক্টোবর বর্তমান নগর পরিষদের মেয়াদ শেষ হবে। ফলে তার ১৮০ দিন আগে, আগামী ২৭ এপ্রিল থেকে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দিন গননা শুরু হবে।
দুটি গুরত্বপূর্ণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বরিশাল বরিশাল মহানগরীতে ক্ষমতাসীন মহাজোটের মূল শরিক দল তার অবস্থান আগের চেয়ে কিছুটা সংহত করতে সক্ষম হয়েছে। যদিও ১৯৭৩ সালের জাতীয় নির্বাচন ও ’৭৪-এর পৌরসভা নির্বাচনের পরে বরিশাল সদর আসন সহ মহানগরীতে কোন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে দলটি সুবিধা করতে পারেনি। এসব বিবেচনায় নিয়েই বরিশাল মহানগরীতে নেতৃত্বে পরিবর্তন ঘটেছে ইতোমধ্যে। যদিও তা নিরঙ্কুশ নয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির জ্যেষ্ঠ পুত্র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ গত কয়েক বছরের চেষ্টায় দলটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের কাছে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। এমনকি বিভাগীয় সদরে বরিশাল সিটি করপোরেশনের আগামী নির্বাচনে সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন লাভের বিষয়টি এখন রাজনৈতিক অঙ্গনের মত দলীয় ফোরামেও যথেষ্ঠ আলোচিত বিষয়।
তবে আসন্ন এ নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীক লাভের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবেই দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের ওপরই নির্ভরশীল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল। সে ক্ষেত্রে সাদিক ও তার পরিবার বিরোধী একটি মহল দলের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় পর্যায়ে লবিং’এ তৎপর বলেও জানা গেছে। কিন্তু সাদিক আবদুল্লাহ বরিশাল মহানগরীতে সাধারণ পর্যায় ও দলের মধ্যে ইতোমধ্যে তার অবস্থান সংহত করতে সক্ষম হলেও দলে অনুপ্রবেশকারী যেসব বসন্তের কোকিল ভোটের মৌসুম এলেই এলাকায় ফেরেন তারাও বসে নেই। বরিশাল মহানগরীতে সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের বৃহৎ সমাবেশ ও বর্ণাঢ্য র্যালীতে লোকসমাগমের বিষয়টি ইতোমধ্যে কিছুটা অবাক করার মতই পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে।
দলীয় ও জাতীয় যেকোন কর্মসূচীতেই সাদিক তার বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে বরিশাল মহানগরীর রাস্তায় বর্ণাঢ্য র্যালী ও শোভাযাত্রা করছেন। এসব কর্মসূচী বাস্তবায়নে বরিশাল মহানগরীর বাইরে থেকেও অনেক নেতা-কর্মী অংশ নিচ্ছেন। অনেক উপজেলা চেয়ারম্যান সহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণও এসব কর্মসূচীতে অংশ নেন। তবে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই সাদিকের চেয়েও তার পিতার প্রতি শ্রদ্ধা সহ সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যও এসব কর্মসূচীতে অংশ নেন বলে জানা গেছে।
তবে ২০১৫-এর ৯ এপ্রিল সদর আসনের এমপি ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের মৃত্যুর পরে বরিশাল মহানগরীতে সাদিকের রাজনৈতিক অবস্থান আরো সংহত হতে শুরু করে। ১৯৭৩ এর সংসদ নির্বাচন ও ’৭৪ সালে অধুনালুপ্ত পৌরসভার নির্বাচনের পরে বরিশাল সদর আসন সহ স্থানীয় পর্যায়ের কোন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সুবিধা করতে না পারলেও ১/১১ সরকারের আশির্বাদে ২০০৮-এর বরিশাল সিটি নির্বাচনে দলীয় সমর্থন নিয়ে শওকত হোসেন হিরন প্রথমবারের মত এ নগরীর চাবি লাভ করেছিলেন। কিন্তু দল ক্ষমতায় থাকাবস্থায়ই ২০১৩-এর ১৫ জুন সিটি নির্বাচনে তিনি বিএনপি প্রার্থীর কাছে প্রায় ১৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন। সে নির্বাচনে পরাজয়ের জন্য হিরন ও তার সমর্থকরা প্রকাশ্যে জেলা সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সমালোচনা করেন। এমনকি হাসানাতের বিরুদ্ধে নগরীতে মিছিলও বের করেন হিরন সমর্থকগন। তবে সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের ছয় মাসের মাথায়ই ২০১৪-এর ৪ জানুয়ারির বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনে বরিশাল সদর আসনে বিনা প্রতিদ্ব›দ্বীতায় এমপি নির্বাচিত হন হিরন। কিন্তু নিয়তির পরিহাসে মাত্র ১৫ মাসের মাথায় হিরনের ইন্তেকালে তার স্ত্রী জেবুন্নেসা আফরোজ আরেকটি ভোটার বিহীন নির্বাচনে স্বামীর আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন।
হিরনের মৃত্যুর পরে তার অনুসারীরা কিছুদিন দাপটের সাথে এ নগরী দাপিয়ে বেড়ালেও ক্রমে তাদের মনোবল সহ সব ধরনের শক্তি লোপ পেতে থাকে। ইতোমধ্যেই বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের এক সভায় মরহুম শওকত হোসেন হিরনের স্ত্রী জেবুন্নেসা আফরোজ সিটি করপোরেশনের আগামী নির্বাচনে সাদিক আবদুলাহর নাম প্রস্তাব করেছেন। এমনকি বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের তরফ থেকেও সাদিক আবদুলাহর নাম সিটি মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রস্তাব করে কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
তবে ইতোমধ্যে সাদিক আবদুলাহ বরিশাল বিভাগীয় সদর সহ মহানগরীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও সিটি মেয়র পদে দলের অভ্যন্তরেই এখনো অনেক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। যার মধ্যে তার আপান চাচা ছাড়াও একাধিকবার এমপি ও পৌর চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রমও রয়েছেন। এমনকি ১/১১ সরকারের প্রত্যক্ষ আশির্বাদ নিয়ে ২০০৮-এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামিমও অতি স¤প্রতি যথেষ্ঠ তৎপর হয়ে উঠেছেন দলীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে। যদিও ২০০৮-এর নির্বাচনে পরাজয়ের পরে তাকে আর বরিশালের কোন রাজনৈতিক কর্মকান্ডে দেখা যায়নি। তিনি এলাকার চেয়ে কেন্দ্রে লবিং নিয়েই বেশী ব্যস্ত বলে জানা গেছে। তবে অতি সা¤প্রতিককালে কর্ণেল শামিম দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচীতে অংশ নিতে বরিশালে আসছেন।
তবে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের বিষয়টি স্থানীয় কোন সুপারিশের ভিত্তিতে নয়, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করেই গ্রহণ করবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কারণ বিগত জেলা পরিষদ নির্বাচনে বরিশালের ১০টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের তরফ থেকে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর স্ত্রী শাহানারা বেগমকে সমর্থন করে কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠানোর পরেও তা বিবেচিত হয়নি। তবে সাদিক আবদুল্লাহ সিটি মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাক বা না পাক, এ নগরীতে তার একটি শক্ত অবস্থান তৈরী হয়েছে ইতোমধ্যে। কিন্তু তা কতটুকু রাজনৈতিক, আর কতটুকু ক্ষমতার মোহে সুযোগ সন্ধানীদের সমর্থনে, তা বোঝার অপেক্ষায় রয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।
অপরদিকে নিজেদের অবস্থান সংহত করতে আসন্ন সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারকদের তরফ থেকে বিএনপি প্রার্থী হিসেব বর্তমান মেয়র প্রার্থী হলে যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দ বোধ করবে বলেও জানা গেছে। এমনকি আসন্ন এ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলাম আলাদা প্রার্থী নিয়ে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করুক, তাও চাচ্ছেন দলটির প্রভাবশালী মহল। ইতোমধ্যে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থী ও মহানগর সভাপতি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বরিশালে ফিরেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।