পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ডিজিটাল জার্নাল : ফ্রান্স যখন দেশীয় জিহাদিদের সর্বশেষ হামলায় নিহত এক পুলিশ সদস্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে তখন উগ্রপন্থী সালাফিদের ইসলাম ব্যাখ্যার প্রভাব নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিছু কর্মকর্তা তাৎক্ষণিক ভাবে সালাফিবাদ নিষিদ্ধ করার আহবান জানিয়েছেন।
শুক্রবার রেদুয়ান লাকদিমের গুলি চালানোর ঘটনায় কর্মকর্তারা জানান যে ২০১৩ সালে সালাফিস্ট মুভমেন্টের সাথে সে জড়িত হয়। সুন্নী মুসলমানদের এ শাখাটির জন্ম সউদী আরবে যারা ইসলামের কঠোর রক্ষণশীল জীবন ধারার অনুসারী।
সালাফিদের এক বড় অংশই ধর্মপ্রাণ পূর্বসূরীদের মৌলিক ঐতিহ্যের অনুসারী হিসেবে সহিংসতা পরিহার করলেও কিছু অনুসারী তাদের বিশ^াসের প্রসার ঘটাতে শক্তি প্রয়োগের পথ গ্রহণ করেছে।
সাবেক সমাজবাদী প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভালস মঙ্গলবার এক রেডিও সাক্ষাতকারে বলেন, এটা কোনো ধর্মকে বা কোনো মতাদর্শকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নয়, কিন্তু আমি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বলছি যে আমরা অবশ্যই সালাফিবাদের বিস্তার রোধ করব, কারণ তারা শত্রæ।
তিনি বলেন, সকল সালাফিই সন্ত্রাসী নয়, কিন্তু সকল সন্ত্রাসীই সালাফি।
২০১৫ সালের জানুযারিতে শার্লি হেবদো হামলা ঘটনার পর থেকে ফ্রান্সে হামলা চালানো বহু জিহাদিকেই প্রায়শ সালাফি বলয়ের সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা জানা গেছে।
আইন বিশেষজ্ঞরা সালাফিবাদ নিষিদ্ধ করার ধারণা সর্বসম্মত ভাবে বাতিল করে দিয়েছেন। তারা বলেছেন, কোনো ধর্মীয় আন্দোলনকে নিষিদ্ধ করার কোনো চেষ্টা হবে বিশ^াসের স্বাধীনতার বিরোধী ও কখনো আদালতে টিকবে না।
অন্য সমালোচকরা বলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ উগ্রপন্থীদের প্রচারকে গোপন প্রচারণার পর্যায়ে নিয়ে যাবে এবং সালাফিদের কবলে তরুণদের নিপতিত হওয়ার বিষয়টি মনিটর করা কর্তৃপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
কিন্তু ফরাসি পুলিশ অফিসার আরনড বেলট্রেমকে হত্যার ঘটনায় সৃষ্ট ক্ষোভ অধিকতর কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর উপর নতুন করে চাপ সৃষ্টি করতে পারে। বেলট্রেমকে গলা কেটে হত্যা করে লাকদিম।
কিছু আইন প্রণেতা ইতোমধ্যে পুলিশের নজরদারিতে থাকা অধিক উগ্রপন্থী ইসলামীদের নিরোধমূলক আটক রাখার জন্য বারংবার আহবান জানাচ্ছেন। লাকদিম এ তালিকায় ছিল এবং দক্ষিণ ফ্রান্সে হামলা চালানোর কয়েকদিন আগে তাকে কর্তৃপক্ষের সাথে সাক্ষাতকারের জন্য তলব করা হয়েছিল বলে মঙ্গলবার খবর প্রকাশিত হওয়ার পর এ আহবান জোরদার হয়েছে।
মঙ্গলবার ডানপন্থী দৈনিক ফিগারো প্রথম পৃষ্ঠায় এক সম্পাদকীয়তে লেখেঃ সালাফিদের নির্মূল করতে আমাদের দেশকে অবশ্যই ব্যাপক অভিযান শুরু করতে হবে। সম্প্রীতিতে বসবাসের দূতদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখে বলছি , এই ভাইরাস আমাদের জীবন, চলাফেরা ও চিন্তার স্বাধীনতার সাথে বেমানান।
গত জানুয়ারিতে ফ্রান্সে ‘ইসলামের পুনর্গঠনের অঙ্গীকার’কারী প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ ইতোমধ্যে সালাফি মসজিদ গুলো ও ইমামদের বিরুদ্ধে দমন অভিযান চালাতে তার সবুজ সংকেত দিয়েছেন। ২০১৬ সালে মন্টেপেলিয়ার এক অধিবাসীর মন্তব্য ‘একজন সালাফিও অন্য নাগরিকের মত’-র জবাবে তিনি বলেছিলেন, কিছু সংগঠন আছে যারা ধর্মের নমে প্রজাতন্ত্রের আইনকে শ্রদ্ধা করে না। আমি এটা বিলুপ্ত করতে চাই।
উগ্রবাদ দমনের জন্য ফ্রান্স ২০১২ সাল থেকে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। গত বছর নেয়া আইনে সন্ত্রাস বিরোধী বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে।
সরকারের হিসেব মতে, ফ্রান্সে ২৫০০ মসজিদ ও নামাজের হল রয়েছে। এগুলোর মধ্য্রে ১২০টি উগপন্থী সালাফিবাদ প্রচার করছে বলে মনে করা হয়। কর্তৃপক্ষ এগুলোর কিছু বন্ধ করে দিয়েছে। সর্বসম্প্রতি মার্সেই-এ এ রকম ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আলজেরীয় ইমাম এল হাদি দাউদীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ সৃষ্টিকর বই বিতরণের অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশ জানায়, আল কায়েদার প্রতি আনুগত্য প্রকাশকারী বা ইরাক ও সিরিয়ায় যুদ্ধ করেছে এমন কিছু লোক আস সুন্নাহ মসজিদ নামাজে যোগ দেয়। কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন যে এ মাসেই দাউদিকে প্রত্যর্পণ করা হবে।
চরম ডানপন্থী নেত্রী মেরিন লা পেন সোমবার ফ্রান্সের মসজিদগুলোতে বিদেশী অর্থায়ন বন্ধে তার দাবির পুনরুল্লেখ করেন।
তবে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এডুয়ার্ড ফিলিপ্পে তাৎক্ষণিক ভাবে সালাফি মতাদর্শ নিষিদ্ধ ঘোষণার ধারণায় ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়েছেন। মঙ্গলবার পার্লাামেন্টে তিনি বলেন, আমরা কোনো মতাদর্শ নিষিদ্ধ করতে পারি না।
আইন প্রণেতাদের ব্যাপক করতালির মধ্যে ফিলিপ্পে বলেন, এর ফলে উস্কানিগত আচরণ, জন শৃঙ্খলা ভঙ্গ , দেশের আইন লংঘন বা সামাজিক জীবনে ন্যূনতম বিঘœ সৃষ্টি করার জন্য আমরা শাস্তি দিতে পারি, কিন্তু নিষিদ্ধ করতে পারি না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।