Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ

| প্রকাশের সময় : ২৬ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

২৬ মার্চ, মহান স্বাধীনতা দিবস আজ। ভয়াল ‘কালরাত্রি’র পোড়া কাঠ, লাশ আর জননীর কান্না নিয়ে রক্তে রাঙা নতুন সূর্য উঠেছিল একাত্তরের এদিনে। ভীতবিহ্বল মানুষ দেখল লাশপোড়া ভোর। সারি সারি স্বজনের মৃতদেহ। আকাশে কুÐলী পাকিয়ে উঠছে ধোঁয়া। পুড়ছে স্বাধীন বাংলার মানচিত্র আঁকা লাল সবুজ পতাকা। জ্বলে উঠল মুক্তিকামী মানুষের চোখ, গড়ল প্রতিরোধ। মৃত্যুভয় তুচ্ছ করে ‘জয় বাংলা’ তীব্র ¯েøাগান তুলে ট্যাংকের সামনে এগিয়ে দিল সাহসী বুক। আজ থেকে ৪৭ বছর আগের ঠিক এমনি এক ভোররাতে পাক বাহিনীর গণহত্যার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
পাকিস্তানি ঘাতক সেনাবাহিনী ২৫ মার্চ রাতে যখন রাজধানীতে এক নৃশংস গণহত্যায় মেতে ওঠে, তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বাসায় গ্রেফতার হওয়ার আগমুহুর্তে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে একটি বার্তা পাঠান। বার্তায় তিনি বলেছিলেন, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। একে যে রকম করেই হোক শত্রæর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’ ইপিআরের ওয়্যারলেস থেকে তার এই বার্তা প্রচারিত হয়েছিল। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতারা মাইকে এটি প্রচার করেন। পরে চট্টগ্রামে অবস্থানরত বাঙালি সেনা কর্মকর্তা মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা তার পক্ষে বেতারে পাঠ করলে দেশবাসী স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার বিষয়টি আরো ভালভাবে জানতে পারে।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলা শুরুর পরপরই দেশের বীর সন্তানেরা বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশমতো যার যা আছে তা-ই নিয়ে মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেয় বাঙালি। ৯ মাস মরণপণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চিরকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। জাতি আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা বীর সন্তানদের।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত সমৃদ্ধ দেশ গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহŸান জানিয়েছেন।
এ বছর আমাদের মহান স্বাধীনতার ৪৮ বছর পদার্পনের শুভ মুহুর্তে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের গ্রæপ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন বিশেষ মাত্রা যোগ হয়েছে। একই সঙ্গে গত বছরের অক্টোবরে একাত্তরের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া সেই কালজয়ী ভাষণও ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্যর স্বীকৃতি লাভ করে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে এবার জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ প্রত্যুষে রাজধানীতে একত্রিশ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে দিবসটির সূচনা হবে।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী সাভার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এর পর মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযোদ্ধারা, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি ক‚টনীতিকগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং সাধারণ জনগণ জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন।
সকালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শিশু-কিশোর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এবারই প্রথম স্বাধীনতা দিবসের দিন সকাল ৮টায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শিশু কিশোর সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সারাদেশে ও বিদেশে একযোগে একই সময়ে শুদ্ধসুরে জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হবে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্দ করে দেয়ার ষড়যন্ত্রে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে অপারেশন সার্চ লাইটের নামে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে যে বিভীষিকাময় যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল- দীর্ঘ নয় মাসে মরণপণ লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলার দামাল সন্তানেরা এক সাগর রক্তের বিনিময়ে সে যুদ্ধে বিজয় লাভ করে স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে আনে।
১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্বেও বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে পাকিস্তনি সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করে পাকিস্তানি সেনারা বাঙালি বেসামরিক লোকজনকে নির্বিচারে গণহত্যা করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।
সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রæর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহŸান জানান। মূহূর্তের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা ওয়্যারলেসের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
আজ সরকারি ছুটির দিন। দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ নিবন্ধ ও ক্রোড়পত্র প্রকাশিত হবে এবং সরকারি ও বেসরকারি বেতার ও টিভি চ্যানেলে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচারিত হবে। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্প কলা একাডেমি , শিশু একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ স্মারক ডাক টিকেট প্রকাশ করবে। হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রমসহ এ ধরনের বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত এবং বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং রাতে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হবে সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহ। দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এবং বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসেও স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করবে। এদিন রাজধানীর সড়ক ও সড়কদ্বীপ জাতীয় পতাকাসহ নানা রঙের পতাকা দিয়ে সাজানো হবে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছেÑভোরে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৬টায় সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ও সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ।
এছাড়াও ২৭ মার্চ বিকাল সাড়ে তিনটায় কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এতে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করবেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ ছাড়াও বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন যুব ও ছাত্র সংগঠন মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।



 

Show all comments
  • সোলায়মান ২৬ মার্চ, ২০১৮, ৪:২২ এএম says : 0
    সকল বীরদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা
    Total Reply(0) Reply
  • গনতন্ত্র ২৬ মার্চ, ২০১৮, ৪:২৯ এএম says : 0
    জনগন বলছেন "গনতন্ত্র, ” " হে ! স্বাধীনতা “ "ভুলি নাই, ভুলবো না, ভুলি কেমন করে; খোকা গেল আসি বলে, ফিরে নাই আর ঘরে ৷ তার স্মৃতি আলগে রেখেছি, পাছে না যায় ঝরে; বৎসরে তিনবার সবার স্বরনে, অভাগীর অশ্রু বার মাসই পড়ে ৷স্বাধীনতায় পেয়েছি পতাকা , স্বাধীন হইনি আমরা; গনতন্ত্রের বদলে স্বৈরতন্ত্র , প্রতিবাদে তুলে নেয় চামরা ৷"
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ২৬ মার্চ, ২০১৮, ৮:৫১ এএম says : 0
    আজ বাংলাদেশের ৪৭ তম জন্ম বার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে এটাই সত্য। কিন্তু আমি এত বছর এই দিনটা যতই এগিয়ে আসে ততই আমার মনটা বিশাদ হয়ে উঠতে থাকে। কারন ২৫শের সেই কাল রাত...... আমি তখন বগুড়ায় থাকি রাত ১টার সময় আমার ঘরের দরজায় জোড়ে জোড়ে থাপ্পড়ের আওয়াজ। আমার ঘুম ভেংগে যায় ভাবি এটাকে বেল না দিয়ে দরজায় থাপড়াচ্ছে?? খুলে দেখি আমার বিশ্বস্ত বন্ধু কিসলু হাপাচ্ছে মনে হল দৌড়াতে দৌড়াতে এসেছে। আমাকে বলে তাড়া তাড়ি বন্দুক ও রাইফেলটা নাও এখনই থানা ঘেড়াও করতে হবে পরে পুলিশ লাইনে যেতে হবে পাকিস্তানী সেনাদের আটকাতে হবে ইত্যাদি এক বাক্যে বলে ফেলে। আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকি সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বলে তাড়া তাড়ি কর এমএনএ সাহেবে কাছে বঙ্গবন্ধুর মেসেজ এসেছে। আমি এটা শুনার পর পেন্ট পরে বন্দুক তাকে দেই গুলী সহ আর রাইফেল আমি নেই গুলী সহ তারপর থানানার দিকে যাই। গিয়ে দেখি ইতিমধ্যে থানা আমাদের হয়ে গেছে থানার দারোগা মুজিবর সাহেব সবাইকে অস্ত্র দিয়েছে এবং থানার বাইরে চলে এসেছে রংপুর থেকে রওয়ানা দেয়া সেনাদের আটকাতে। আমিও দারগারা সাথে থানার উল্টো দিকের হোটেলের ছাদে উঠে যাই এবং দেয়ালে সাথে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করি আরো লোক জনের সাথে। কিছুক্ষনের মধ্যেই অনেক গাড়ির হেড লাইট দেখতে পাই তখন দারগা সাহেব আমাদের নিচু হতে বলেন এবং ওনার সাথে সাথে গুলী ছুড়তে বলেন। আমরা রেল গেট যাকে বলতাম দুই নং ঘুমটি সেটার গেট আগেই ফেলা ছিল এবং গাছের গুড়িসহ ভাড়ী জিনিষ দিয়ে রাস্তা বন্ধ করা ছিল। সেনারা গেট লাগানো দেখে পরিষ্কার করছে আমরা তখনো এয়াম্বুশ হয়ে আছি। ওরা প্রায় আধা ঘন্টার মত সময় নিয়ে রাস্তা পরিষ্কার শেষ করার সাথে সাথে দারোগা সাহেব গুলী ছোড়া শুরু করেন। বগুড়া সদর থানা ঘুমটি থেকে মাত্র ১০০ গজের মধ্যে ছিল। আমাদের গুলীতে আমার কাছে মনে হয়েছে একজন রাস্তায় পরে গেছে। কয়েক রাউন্ড গুলী করার পর দারগা আমাদের মাথা নিচুকরে বসে পরতে বললেন এবং তিনি নিজে সড়ে গিয়ে অবস্থা পর্যাবেক্ষন করছেন কিন্তু গুলী ছোড়া হচ্ছে না। তবে শুরুতে মনে হয় আমারা সেখানে প্রায় ২০ জন একটু পরপর ছিলাম আমি নিজে ৫টা গুলি ছুড়েছি আমার যতটুকু মনে হয়েছে। এরপর আরো অনেক যন্ত্রনা বিভীষিকা কেটেছে বলে শেষ করার মত নয়। তাই এই মাশ আসলেই কেন জানি আমি নিস্তেজ হয়ে যায় মনটা উদাস হয়ে যায় খুশী মন থেকে পালিয়ে যায়। তবে আশ্চার্যের বিষয় ডিসেম্বর মাশ আসলেই আমার মন খুশিতে টগবগ করতে থাকে আর ১৬ই ডিসেম্বর আমার আন্দন ধরেনা এটাই সত্য। ইতিহাস সাক্ষ্য দিবে এই কানাডার রাজধানী অটোয়াতে আমি আসার আগে ১৬ই ডিসেম্বর পালিত হতো না। ১৯৯২ সালে অটোয়া এসে আমি হাইকমিশনে যাই এবং তাদের এই বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাইলে আমাকে বলা হয় প্রতি বছর ডিসেম্বর মাশে অটোয়ায় বাংলাদেশের সংগঠন “বাকাওভ” যেটা ..........রা পরিচালনা করত। সেই সংগঠনের নির্বাচন হয় এবং কমিটির আভিষেক অনুষ্ঠান হয় তাই তারা বিজয় দিবস পালন করতে পারে না। আমি বসে থাকিনি আমি তখন অটোয়ায় এসে এখানকার রোজার টিভিতে কাজ করি সেই সুবাদে আমি একটা নিজ খরচে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান করে ফেলি। দুঃখজনক হলেও সত্য হাইকমিশন থেকে দাওয়াত দেয়ার পরও কেহই আসেনি। তখন একজন মুক্তিযোদ্ধা নজরুল সাহেব এখানে কাউন্সেলর ছিলেন তিনিও আসেন নি। তবে পরের বছর ১৯৯৩ সালে তিনি যখন চার্জে ছিলেন তখন তিনি একজন কাউন্সেলার সহ এসেছিলেন আমার অনুষ্ঠানে। এখন আমার বয়স ৬৮ তাই আমি ভাবছি আমার এই কথাটা এতদিন পর্যন্ত আমি কাওকে বলিনি আজ আমি আমার সন্তানদের কাছে বলে দিব। আজ আমার চার মেয়ে এসেছিল আমাকে দেখতে দুপুরের খাবার পর আমার মনে হল আজ আমি আমার এই বাজে মনভাবটা প্রকাশ করে ফেলব। আমি তাই করেছি, তখন আমার বড় জামাই আমাকে বলে আব্বু আপনিত লিখেন এটা লিখে প্রকাশ করে ফেলেন হয়ত এই প্রকাশের জন্য বাকী জীবনে আপনার আর খারাপ লাগবে না। তাই আজ আমি এই লিখার মাধ্যমে এই খুশির দিনটা আমার কাছে বেদনার দিন এটা জানেয়ে দিলাম, এখন আমার অপরাধ হলে আমি কি করতে পারি এটাই আমার কাছে আমার প্রশ্ন ছিল এত দিন... আজ এটা আমি সবার প্রশ্ন বানিয়ে দিলাম কেন এটা আমার হচ্ছে বলতে পারবেন কি???
    Total Reply(0) Reply
  • আলী আকবার ২৬ মার্চ, ২০১৮, ১১:০৩ এএম says : 0
    সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ৷
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাধীনতা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ