পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাই প্রতিহিংসার কারণ হিসেবে মন্তব্য করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, জনপ্রিয়তা ছাড়া শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার আর কোন কারণ নেই।গতকাল (বুধবার) বেলা ১১টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী একথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এ মুহুর্তে যদি নির্বাচন হয় এবং সে নির্বাচন যদি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হয় এবং জনগণ স্বত:স্ফূর্তভাবে নিজের ভোট নিজে দিতে পারে তাহলে বিএনপি বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। আওয়ামী লীগ টের পেয়েছে-জনগণ তাদের সাথে নেই, নিরপেক্ষ ভোট হলে তাদের ভরাডুবি হবে। তাদের দুঃশাসনে দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। বারবার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করার জবাব জনগণ দিতে প্রস্তুত। বর্তমান ভোটারবিহীন সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি, অপশাসনের বিরুদ্ধে রায় দিতে জনগণ উদগ্রীব হয়ে আছে। তাই আওয়ামী লীগ দিশেহারা হয়ে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা সাজানো ও জালনথির মাধ্যমে মামলা দিয়ে নি¤œ আদালতকে ব্যবহার করে সাজানো রায় দিয়ে কারবন্দি করে রেখেছে। নকলের ছাঁচে ঢালাই করা আইনী প্রক্রিয়ায় সাজা দিয়ে এখন বেগম খালেদা জিয়া যাতে জামিনে বের হতে না পারেন সেজন্য আদালতকে শুধু প্রভাবিতই নয়, সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিন স্থগিতে সরকারের কোন হস্তক্ষেপ নেই। তার কথাতেই বোঝা যাচ্ছে ‘ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাইনি’র মতো ঘটনা। অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিতে সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করেছে। যেখানে মহামান্য হাইকোর্ট বা বিচারিক আদালত জামিন দিয়েছে, মামলার বিচারকাজও চলমান, বেগম জিয়া বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, দুই বারের বিরোধী দলীয় নেত্রী, বৃহৎ রাজনৈতিক দলের প্রধান, তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তিনি দেশ থেকে কখনোই পালিয়ে যাবেন না, এমন একজন ব্যক্তির জামিন স্থগিত করা হলো। এমন নজির কী কোথাও আছে ? এটা কেবলমাত্র বাংলাদেশের নজিরবিহীন ভোটারবিহীন সরকারই করতে পারে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা রাজনৈতিক, নি¤œ আদালতের দেয়া সাজা রাজনৈতিক ও জামিন স্থগিতের আদেশও রাজনৈতিক। সারাদেশের জনগণ সেটিও দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করে।
জামিনের আদেশ নিয়ে প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করতে চাই-কিভাবে তিনি বলেন বেগম খালেদা জিয়া আর কারাগার থেকে বের হতে পারবেন না। তাহলে তার পদ কী চীফ জাস্টিসেরও ওপরে? মনে হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচার বিভাগকে কব্জায় রাখতে তাকে অসীম ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন। এদিকে আইনমন্ত্রীও বলেছেন-উচ্চ আদালত জামিন দিলেও বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন না। এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয় বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রাখা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা সাজানো মামলায় দÐ দেয়া আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এগুলো হচ্ছে। সরকার যেন মুক্তিপণ আদায় করার জন্যই বেগম জিয়।
জগণের ধৈর্যচ্যুতি ঘটছে মন্তব্য করে দলের সিনিয়র এই নেতা বলেন, গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার, ভোটাধিকার ইত্যাদি দাবি করার জন্যই বেগম জিয়াকে সইতে হচ্ছে অবর্ণনীয় ও নিষ্ঠুর নির্যাতন। আওয়ামী সরকরের অভিপ্রায় হলো-অসুস্থতা ও শোকে-বেদনায় বিপর্যস্ত করে তাদের নির্দেশিত হিসাব বেগম জিয়াকে মেনে নিতে। কিন্তু সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে এখনও চিনতে পারেনি। তাদের নিশ্চয়ই মনে থাকার কথা-এরশাদের নির্বাচনে অংশ না নিয়ে তিনি যে আপোষহীন উপাধী পেয়েছেন এটি তাঁর দৃঢ় ব্যক্তিত্বের জন্য এবং জনগণের প্রতি প্রদত্ত অঙ্গীকার রক্ষার জন্য। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর মতো জনগণের সাথে প্রতারণা করার ঐতিহ্য বেগম জিয়ার নেই। একই অনড় কমিটমেন্টের ফলশ্রæতিতে দেশনেত্রীকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাঠাতে পারেনি। ২০১৫ সালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বেগম জিয়া কনিষ্ঠ পুত্রের মৃত্যু সংবাদে শোকে পাথর হয়েও তাঁকে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে টলাতে পারেনি বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার। সুতরাং বেগম জিয়ার ওপর কোন চাপ প্রয়োগ করে লাভ হবে না। আগামী নির্বাচনে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই বিএনপি অংশগ্রহণ করবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধির জন্য উচ্চ আদালতে দুর্নীতি দমন কমিশনের আপীল আবেদনের বিষয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হচ্ছে রাতকানা বাঁদুরের মতো শেখ হাসিনার নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠান।যশোরের অভয়নগরের ফরাজী মতিয়ার, কাজী গোলাম হায়দার ডাবলু, গিয়াস হোসেন, হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা বিএনপির মশিয়ার রহমান, নওয়াপাড়ারর জাকির হোসেনসহ ২৭ জন নেতা-কর্মী আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে নিম্ন আদালতে হাজির হলে তাদের কারাগারে প্রেরণের ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন রিজভী। এসময় সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।