Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লন্ডনের কুখ্যাত আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি -মোহাম্মদ নাসিম

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ১৪ দলের সমাবেশ

| প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জামায়াতকে আকড়ে ধরার জন্যই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী পরিবর্তন করে যুদ্ধাপরাধী মীর কাশেম আলীর আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ১৪ দলের মুখপাত্র আওয়ামী লীগ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশে বিএনপি নেত্রীর নতুন আইনজীবী নিয়োগের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আদালত খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠিয়েছে। এখানে আমাদের কোন হাত নেই। কিন্তু আজকে শুনলাম উনার নিজের আইনজীবীর উপর কোন বিশ্বাস নেই। নিজের আইনজীবীর প্রতি কোন বিশ্বাস নেই বলেই তিনি আজকে একজন বিদেশী আইনজীবীকে নিয়োগ করেছেন। সেই আইনজীবী কে? সেই আইনজীবী হলো, ওই একাত্তরের ঘাতক মীর কাশেম আলীর আইনজীবী হয়েছিল লন্ডনের সেই কুখ্যাত আইনজীবী লর্ড কারলাইল।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাফর ইকবালের উপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, একাত্তরের ঘাতকের লবিষ্ঠ ছিল যে, সেই আইনজীবীকে ঢাকায় আনছে খালেদা জিয়ার দল। তার মানে হলো, এখনও খালেদা জিয়া জামায়াতকে ছাড়ে নাই, একাত্তরের ঘাতকদের ছাড়ে নাই।
আগামী নির্বাচন নিয়ে নাসিম বলেন, নির্বাচন নিয়ে বলতে চাই, আগামী নির্বাচনে বাংলার জনগণ খালেদা জিয়াকে চিরদিনের জন্য ছেড়ে দিবে, বর্জন করবে ইনশাল্লাহ। নির্বাচন সামনে আসছে এই নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী হবে। তিনি বলেন, যে কোন বাধা, হুমকি দেয়া হোক না কেন কোন কাজে আসবে না। বাংলার জনগনের নেত্রী দেশের সব সমস্যা সমাধান করছেন। সেই নেত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলার জনগণ আবার নির্বাচিত করবে। যদি সাহস থাকে মাঠে খেলতে আসেন। আমরা খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যেতে চাই না। মাঠে খেলেই নির্বাচনে গোল দিতে চাই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ করে নাসিম বলেন, আপনার নেত্রী জেলে আছে। আপনাদের আন্দোলন হলো ঘরের মধ্যে। আর আমরা জেল খেটেছি মার খেয়েও মাঠ ছাড়ি নাই। আপনার দলের লোকেররা এমন লোক; যারা মাইরের আগেই পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, আন্দোলন করবেন আপনারা ? আন্দোলন আপনারা কি করবেন বাংলার জনগণ বুঝে গেছে। বাংলার জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় আসতে দিবে না। একাত্তরের ঘাতকদের আর ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য বাণিজ্যমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেন, দেশে বারবার জঙ্গি আক্রমণ হয়েছে। অধ্যাপক জাফর ইকবালের ওপর হামলা একই ধারাবাহিকতা। জঙ্গিবাদের রাজনীতির বিষবাষ্প। তিনি বলেন, যত বাধাই আসুক বাঙালি জাতি বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত হবেই। আমরা আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছি। উন্নত রাষ্ট্রেও পরিণত হবো। দেশের এই অর্জন, এই উন্নয়ন যারা চায় না, তারা বারবার ষড়যন্ত্র করবে। জঙ্গিবাদ এবং সা¤প্রদায়িকতার মাধ্যমে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাইবে। তবে আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এসব অপশক্তিতে প্রতিহত করবো।
আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, জঙ্গিরা বিভিন্নভাবে মানুষকে ধর্মের দোহাই দিয়ে বিভ্রান্ত করে। এক জঙ্গি আরেক জঙ্গির বউকে নিয়ে সংসার করে। এটা কি ইসলাম সমর্থন করে? মানুষ হত্যা; এটা কি ইসলাম সমর্থন করে? নিজেরা আত্মহত্যা করে। এটা কি ইসলাম সমর্থন করে? করে না।
জঙ্গিদের পরিবার নিয়ে মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, এই যে জঙ্গিরা মরে গেলে অমুকে তমুকের সঙ্গে, তমুক মরে গেলে আরেক জনের সঙ্গে মেয়েরা থাকছে। মেয়েরা কি হাত বদলের জিনিস? ইসলামের কোন জায়গায় আছে মেয়েরা হাত বদলের জিনিস। সব জঙ্গি আস্তানায় বাচ্চাদের মাসের পর মাস আটকিয়ে রাখা হয়। যখন অভিযান চলে তখন তারা বাচ্চাদের সামনে দেয়।
মতিয়া বলেন, আজকে একটাই কথা এই মানবতাবিরোধীরা কখনোই ইসলামের লোক না। আমরা যখন সরকার গঠন করলাম তখন থেকেই তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, ৯৩’এ এদেশে রোহিঙ্গা প্রবেশের সময় খালেদা জিয়া দানবের মত আচরণ করেছিল। আর শেখ হাসিনা ২০১৭-এ মানবতার মাতা হয়েছেন। কাজেই মানবতা আর দানবতা এক সঙ্গে চলতে পারে না।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, অনেকেই বলে জাফর ইকবালের উপর হামলার ঘটনা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এটা সে (জঙ্গি) নিজে নিজে করেছে। আমি বলবো এটা পরিকল্পিত ঘটনা এবং যারা বলে সে নিজে নিজে আক্রমন করেছে এটা ভুল। বিএনপি-জামায়াতের সময় থেকে এ দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল। তারপর থেকে আমাদের উপর নানাভাবে নানা ধরণের আক্রমন হয়েছে। এই আক্রমন এরই ধারাবাহিকতা। মুক্তমনাদের উপর আক্রমন মুক্তিযুদ্ধের উপর আক্রমন এসব চক্রান্ত।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, জাসদ একাংশের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া, আরেকাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি, গণআজাদী লীগের সাধারণ সভাপতি একে শিকদার, সাম্যবাদী দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহŸায়ক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, নাগরিক কমিটির সদস্য ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক হারুন উর রশীদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমান, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিক।



 

Show all comments
  • জসীম উদ্দীন ২১ মার্চ, ২০১৮, ২:৩১ এএম says : 0
    একজন বিদেশীকে সম্মান দিয়ে কথা বলা উচিত
    Total Reply(0) Reply
  • গনতন্ত্র ২১ মার্চ, ২০১৮, ৩:১৫ এএম says : 0
    জনগন বলছেন, নিজকে দিয়ে অন্যকে যাচাই করে ......য় ৷ কুখ্যাত এর মানে জানেন ???? না জানলে সাহায্য লাগবে ?????
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ