Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রফতানিতে জট খুলছে পাটখড়ির ছাই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

পাটখড়ির ছাই বা ‘জুট স্টিক চারকোল’ রফতানির জট খুলেছে। এখন প্রতি মাসেই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পাটখড়ির ছাই রফতানি হচ্ছে। ফলে বিদেশ থেকে আসছে মূল্যবান রফতানি আয়। জট কেটে যাওয়ার পর এ খাতে নতুন বিনিয়োগে কারখানা গড়ে তুলছেন উদ্যোক্তারা।
রফতানির উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে দেখা যায়, গত বছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিমাসে গড়ে ৬০ হাজার ডলার মূল্যের পাটখড়ির ছাই রফতানি হয়। তবে জট খোলার পর নভেম্বর থেকে পাল্টে যায় এই চিত্র। ওই মাসে সাড়ে পাঁচ লাখ ডলারের পণ্য রফতানি হয়। ডিসেম্বরে রফতানি আয় হয় ছয় লাখ ১৬ হাজার ডলার, যা জানুয়ারিতে দাঁড়ায় সাড়ে পাঁচ লাখ ডলার।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এই উদীয়মান খাতে রফতানি আয় হয় ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ডলার, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২০ লাখ ৮৪ হাজার ডলার। রফতানি আয় কিছুটা কমলেও জট খোলায় আশার আলো দেখছেন রফতানিকারকরা।
জানা গেছে, গত বছরের শুরুতে কনটেইনারে পাটখড়ির ছাই পরিবহনের সময় বেসরকারি ডিপো ও বিদেশের বন্দরে এসব কনটেইনারে চারটি অগ্নিকাÐের ঘটনা ঘটে। পাটকাঠি পুড়িয়ে তৈরি হওয়া ছাই ঠান্ডা হওয়ার আগেই তড়িঘড়ি করে কনটেইনারে বোঝাই করায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এরপরই বড় দুর্ঘটনার শঙ্কায় অধিকাংশ জাহাজ কোম্পানি পাটখড়ির ছাই পরিবহনে আগ্রহ হারায়। এতে পণ্যটির রফতানি হোঁচট খায়। এ অবস্থায় গত বছরের ২৮ মে এ খাতের রফতানিকারকেরা বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী মির্জা আজমের কাছে চিঠি দিয়ে জটিলতা নিরসনের আহ্বান জানায়। এর পরে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় জাহাজ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক হয় রফতানিকারকদের। এসব বৈঠকের পর নানা শর্ত সাপেক্ষে এই রফতানি পণ্য পরিবহনে সম্মত হয় বিদেশি জাহাজ কোম্পানিগুলো।
রফতানিকারকেরা জানান, ফরিদপুর, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, পাবনাসহ বিভিন্ন এলাকায় গড়ে ওঠা চারকোল কারখানার বিশেষ চুল্লিতে পাটকাঠি পুড়িয়ে ছাই করা হয়। তিন থেকে চার দিন পোড়ানোর পর চুল্লির ঢাকনা খুলে ছাই সংগ্রহ করে ঠান্ডা করতে হয়। এসব ছাইয়ের মধ্যে গড়ে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত কার্বন উপাদান থাকে। টনপ্রতি ৫০০ থেকে এক হাজার ৭০ ডলারে রফতানি হচ্ছে এই পণ্য। পাটখড়ির ছাইয়ে থাকা কার্বন পাউডার দিয়ে প্রসাধনসামগ্রী, ব্যাটারি, কার্বন পেপার, পানির ফিল্টারের উপাদান, দাঁত পরিষ্কার করার ওষুধ ও ফটোকপি মেশিনের কালি তৈরি করা হয়। পাটখড়ির ছাইয়ের ৯৮ শতাংশ যায় চীনে। চীনে এই পণ্যের চাহিদার কারণে সেখানকার উদ্যোক্তারাও বাংলাদেশে কারখানা গড়ে তুলেছেন।
বাংলাদেশ চারকোল উৎপাদক ও রফতানিকারক সমিতির হিসাবে, এই খাতে এখন ৩০টি কারখানা রয়েছে। তবে কাস্টমসের তথ্যে দেখা যায়, বর্তমানে ২৭টি কারখানা পাটকাঠির ছাই রফতানি করছে। অন্যরা তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে রফতানি করছে। এই খাতে ২০ শতাংশ নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। রফতানি জট খোলার পর এখন নতুন বিনিয়োগও হচ্ছে। দেশ থেকে ২০০৯-১০ সালে এই পণ্য রফতানি শুরু হয়। ২০১০-১১ অর্থবছরে রফতানি দাঁড়ায় ৪৭ হাজার ৭৫২ ডলারে। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩১ লাখ ৮২ হাজার ডলারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রফতানি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ