পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সায়ীদ আবদুল মালিক : বংশ পরম্পরায় গত ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকায় বসবাস করে আসছি। এ জমিন ও এলাকা ছেড়ে যেতে চাই না। আমাদের পূর্ব পুরুষেরা আশেপাশে একটি মন্দির আছে বলেই তো এখানে বসতি গড়েছেন। তাহলে এখন কেন আমাদেরকে এই জায়গা ছেড়ে যেতে হবে। উপরিউক্ত কথাগুলো বলেছেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারণের জন্য একোয়ার হওয়া ২৭৬ নং দাগের জমির মালিক রাম দাস ঘোষ। তিনি বলেন, আমাদের এই সামান্য জায়গায় আমরা প্রায় ৩৫জন সদস্য বসবাস করছি। এ জায়গা ছেড়ে পরিবারের ৩৫ সদস্য নিয়ে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো। মন্দির সম্প্রসারণের জন্য ২৭৭ নং দাগের জায়গা একোয়ারের সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং জমির মালিক আজম আজিম সাহেব উপযুক্ত মূল্য পাওয়ার নিমিত্তে জায়গা দিতেও রাজি হয়েছিল। সেখানে আমাদের জমিন একোয়ারের কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। পূজা কমিটির লোকেরা মনে করেছিল একোয়ারের টাকা সরকারের তহবিল থেকে দেয়া হবে তাই তারা আমাদের জায়গাও একোয়ারের তালিকায় নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে তারা মন্দির সম্প্রসারণের জন্য একোয়ারের নাম করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা তুলেও আজম সাহেবকে তার পাওয়না টাকা দিচ্ছেনা এবং আমাদেরকে আমাদের পৈতৃক ভিটা বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করছে, দেবোত্তর ২০ বিঘা জমির ধোয়া তুলে।
তিনি বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দির কানো কালেই ২০ বিঘা জমির উপর ছিল না। আমরা ছোট বেলা থেকেই দেখে আসছি মন্দির এরিয়ার ভিতরের পুকুরসহ ঢাকেশ্বরী মন্দির ৬ বিঘা জমির উপর অবস্থিত ছিল। এ ৬ বিঘা জায়গার উপর অবস্থিত মন্দির এরিয়া বাউন্ডারি করা ছিল বহুকাল আগে থেকেই। তিনি বলেন, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পক্ষে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আমাদের দীর্ঘদিনের পৈতৃক ও ক্রয়কৃত ভিটাবাড়ি নানা তালবাহনায় অবৈধভাবে দখল করতে চায়। তাদের এই হিনবাসনা কখনোই পূরণ হবে না।
গতকাল বুধবার সরেজমিন ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকায় গিয়ে ভুক্তভোগিদের সাথে এ বিষয়ে কথা বলে জানতে চাইলে, রাম দাস ঘোষ ইনকিলাবকে এ কথা বলেন।
মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির জেনারেল সেক্রেটারি শ্যামল কুমার রায় ইনকিলাবকে বলেন, এই সম্পত্তি হলো দেবোত্তর সম্পত্তি। এটা একোয়ারের কোন বিষয় নয়। এ সম্পত্তি যারা অবৈধভাবে দখল করে আছে তাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য কোর্ট থেকে রায় আছে।
তিনি বলেন, আমরা কখনো কোথায়ও এই সম্পত্তি একোয়ারের বিষয়ে কোন সভা কিংবা মির্টি করিনি এবং একোয়ারের জন্য কারো কাছ থেকে চাঁদাও তোলার প্রয়োজন হয়নি। মন্দির সম্প্রসারণের জন্য জায়গা একোয়ারের জন্য টাকা তোলা হয়েছে এ কথাটি একেবারেই মিথ্য ও অপপ্রচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
গত মঙ্গলবার রাজধানীর রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারনের জন্য মূল্য পরিশোধ না করেই জায়গা দখলের অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ঐ এলাকার স্থানীয় জমির মালিকরা। এসময় তারা বলেন, মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দকে ডিসি অফিস থেকে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও তারা জমির মূল্য পরিশোধ করেনি। সার্বজনীন পূজা কমিটির লোকজন স্থানীয় জমির মালিকদের নানা তালবাহানার মাধ্যমে ধোকা দিয়ে সরকার নির্ধারিত একোয়ারের মূল্য পরিশোধ না করেই জমির পজিশন দখলে নেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকেশ্বরী মন্দির এলাকার ২৭৭ নং দাগের জমির মালিক মোহাম্মদ আজম আজিম ইনকিলাবকে বলেন, সাবেক সচিব সৈলেন মজুমদার, ভূমি প্রতিমন্ত্রী শামসুজ্জামান জাভেদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে ঢাবেশ্বরী মন্দির সম্প্রসারণের জন্য আমার জমির উপযুক্ত দাম পাওয়ার শর্তে, এ জমি দিতে রাজি হয়েছিলাম। সরকারী সিদ্ধান্ত মোতাবেক মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটি উক্ত জায়গার মূল্য পরিশোধ করার জন্য ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামনে ব্যানর টানিয়ে ও লিফলেট বিলি করে প্রায় ২০ কোটি ঢাকা সংগ্রহ করেছে।
তিনি বলেন, টাকা সংগ্রহের পর মাঝখানে অনেক সময় পার হয়ে গেলেও মন্দির কমিটি আমার জমির টাকা পরিশোধ করেনি। ডিসি অফিস থেকে তাদেরকে বার বার তাগাদা দেওয়ার পরও তারা ঢাকা পরিশোধ করছে না।
মোহাম্মদ আজম আজিম বলেন, মন্দির সম্প্রসারণের জন্য শুধু মাত্র আমার জমিনই একোয়ারের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দ মনে করেছিল এই একোয়ারের টাকা সরকারের ফান্ড থেকে দেয়া হবে তাই তারা এ সুযোগে আশেপাশের জমিনগুলোও একোয়ারের আওতায় নিয়ে নেয়। এখানেও পূজা কমিটির লোকজন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে।
ওই এলাকার ভূক্তভোগিদের সাথে কথা বলে যানা যায়, ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পক্ষে কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি আমাদের দীর্ঘদিনের পৈতৃক ও ক্রয়কৃত ভিটাবাড়ি নানা তালবাহনায় অবৈধভাবে দখল করতে চায়। আমরা আমাদের বহুদিনের পৈত্রিক ভিটা বাড়ি ছেড়ে কোথায়ও যাবো না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।