Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাজার টাকার নোট বাতিলের খবর রাবিশ -অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

এক হাজার টাকার নোট বাতিলের খবরকে ‘ভোগাস ও রাবিশ’ আখ্যা দিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।
গতকাল রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সভায় মন্ত্রী কথা বলছিলেন। অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়ে প্রাক-বাজেট আলোচনার জন্য এ সভার আয়োজন করা হয়।
মুহিত বলেন, এক হাজার টাকার নোট বাতিলের খবর সত্যিকারার্থে রাবিশ ও ভোগাস। এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সভায় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, একটি সংবাদমাধ্যমে দেখলাম, দেশ থেকে নাকি এক হাজার টাকার নোট বাতিল হচ্ছে। এতে দেশবাসীর মধ্যে এক ধরনের শঙ্কা ও ভয় কাজ করছে। আদৌ কি এক হাজার টাকার নোট বাতিল হচ্ছে? তারই জবাবে অর্থমন্ত্রী এমন ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মন্ত্রী আসন্ন অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বাজেটের বিষয়ে বলেন, নির্বাচনী বছরে বাজেটে বেশি চ্যালেঞ্জ নেওয়া ঠিক হবে না। আগামী বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বাজেটের আকারের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ভালো। এটা বাজেটের আকার নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে। আগামীতে বাজেটের আকার চার লাখ ৬০ থেকে চার লাখ ৭৫ কোটি টাকা হবে।
ইসিআর ব্যবহারে ভ্যাটে দুই শতাংশ ছাড় --অর্থমন্ত্রী
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্টার (ইসিআর) চালু করলে ভ্যাটের উপর থেকে দুই শতাংশ ছাড় পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত জানিয়েছেন, ৫০ হাজার ইসিআর মেশিন আমদানি করা হচ্ছে। যেসব ব্যবসায়ীরা এসব মেশিন ব্যাবহার করবে তাদের ভ্যাটের উপর দুই শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
গতকাল রোববার সচিবালয়ে বিসিএস কাস্টমস, ভ্যাট ও ট্যাকসেশন অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব তথ্য জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স দিতে চান না। তারা বিনা মাশুলে ব্যবসা করতে চান। এসব ব্যবসায়ীদের লোভ একটু বেশি। বিশ্বের কোথাও এমনটি নেই। তিনি জানান, ৫০ হাজার ইসিআর মেশিন আমদানি করা হচ্ছে। যেসব ব্যবসায়ীরা এসব মেশিন ব্যাবহার করবে তাদের ভ্যাটের উপর দুই শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। এ সময় তিনি এনবিআরকে অনলাইনে ভ্যাট আদায়ে জোরদার করার তাগিদ দিয়ে বলেন, আগামীতে যে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হবে তাতে ভ্যাটের দুই রকম হার থাকবে। আগামী বাজেটে নতুন কাস্টমস আইন উপস্থাপন করা হবে।
তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভেতরে ভেতরে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের কাজ চলছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ভ্যাট আইন তো ১৯৯১ সাল থেকে রয়েছে। সরকার ২০১৯ সালে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করবে এটা স্বাভাবিক।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নিজের পয়সা থেকে ব্যবসায় পৃথিবীর কোথাও দিতে চায় না। আমাদের দেশে লোভ একটু বেশি। মাশুল দিয়ে তারা ব্যবসা করতে চান না। তারা কোনো ট্যাক্স দিতে চান না। নতুন আইনে ঢালাওভাবে ১৫ শতাংশ ভ্যাট করা হয়েছিল। এছাড়া টেরিপ ভ্যালু বাদ দেয়ার কথা বলা হয়েছিল। তবে সেটা টেকেনি। এখন আগামী যে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হবে সেখানে ভ্যাটের হার একের অধিক রাখা হবে।
‘ইউকে প্রথমে এক রেটে ভ্যাট বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেখানে ৮-১০টা রেট রয়েছে। সুতরাং আমি ভ্যাটে কিছুটা হাই রেট রাখতে চায়, কিছুট লো রেট রাখতে চায়।
চলতি বছরের বাজেট বাস্তবায়ন বিষয়ে তিনি বলেন, সবসময় এডিবি বাস্তবায়নে সমস্যা হয়। কিন্তু এবার এডিপির বাস্তবায়ন গত ছয় মাসে ৩৫ শতাংশ, যা খুব ভালো। অনেকেই বলছে বাজেট বাস্তবায়ন ভালো হবে না। তবে আমার বিশ্বাস বাজেট বাস্তবায়ন লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হবে। চার লাখ ২৬৬ কোট টাকা থেকে রিভিশন করে তিন লাখ ৮৫ হাজার করা হয়েছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এটা আরও বেড়ে যাবে।
নির্বাচনের বছরের জন্য এ বাস্তবায়ন বেড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রতিটি সপ্তাহে আমরা একনেক মিটিং করি। আমি প্লানিং কমিশনকে বারবার বলেছি আপনারা সবসময় বেশি বেশি বরাদ্দ চান কিন্তু টাকাতো খরচ করতে পারেন না। তবে এবার তারা এটা ওভারকাম করতে পেরেছে। অর্থাৎ আমাদের বাস্তবায়ন সক্ষমতা অর্জন করেছে।
রাজস্ব আদায় বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ১১-১২ শতাংশ কম হবে। কেন কমছে এ বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন কারণে হয়। তবে আমরা এসব বিষয় ওভারকাম করতে পারবো। এবারের রাজস্ব আদায় গত বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বেশি হবে।
নতুন কাস্টমস আইন বাস্তবায়ন বিষয়ে তিনি বলেন, নতুন কাস্টমস আইন বহুদিন ধরে কাজ চলছে। আগামী বাজেটে নতুন কাস্টমস আইন উপস্থাপন করা হবে।

 



 

Show all comments
  • ফাহাদ ১২ মার্চ, ২০১৮, ৪:২৫ এএম says : 0
    রাবিশ শব্দটা বর্জন করা উচিত
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অর্থমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ