Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উদ্ধারকারী পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করা যায়নি -ডিসি রমনা

ছাত্রী লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতরা অধরা

| প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের সমাবেশে অংশ নিতে যাওয়া মিছিল থেকে এক কলেজ ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থানা পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে। এরই মধ্যে কলেজছাত্রীকে হয়রানির ঘটনায় দুটি ভিডিও ক্লিপ হাতে পেয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট্র পুলিশ কর্মকর্তারা। ভিডিওতে যৌন নিপীড়নের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে গতকাল পর্যন্ত ৪ দিনেও এ ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনার শিকার এক শিক্ষার্থীর বাবা অনাদি রঞ্জন বৈরাগী বাদী হয়ে রমনা মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পর থেকেই পুলিশের পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি), মহানগর সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম ইউনিটসহ আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর অন্য সংস্থাগুলো ছায়া তদন্ত শুরু করেছে। ৭ মার্চ ওই শিক্ষার্থীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় তার দেয়া ফেসবুকের স্ট্যাটাসের পর সেটি ভাইরাল হয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হওয়ায় ওই রাতেই ঘটনার বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে শুরু করে রমনা থানা পুলিশ।
রমনা জোনের ডিসি মারুফ হোসেন সরদার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। যে পুলিশ সদস্য ওই ছাত্রীকে বাসে তুলে দিয়েছিলেন তার বক্তব্য নেয়া হয়েছে কি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা এখনও তাকে শনাক্ত করতে পারেনি। তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
রমনা থানার ওসি মাইনুল ইসলাম গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি তদন্ত করছি।
তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ভিডিও পর্যালোচনা করে পুলিশ ৭/৮ জন যুবককে শনাক্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যেএদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে গ্রেফতারের তৎপরতা চলছে। এছাড়া ওই ছাত্রীকে উদ্ধারকারী পুলিশ সদস্যের ছবিও সংগ্রহ করা হয়েছে। তাকেও শনাক্তের চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়া গত শুক্রবার আলামত হিসেবে ওই ছাত্রীর একটি ছেড়া জামা জব্দ করেছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
মামলায় এজাহারে বলা হয়েছে, ৭ মার্চ বুধবার রাত আনুমানিক ৯টায় কর্মস্থল থেকে তিনি বাসায় গিয়ে তার মেয়ের কাছ থেকে জানতে পারেন সে তার ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের বেইলি রোডের ক্যাম্পাস থেকে বাসায় ফেরার জন্য শান্তি নগর মোড়ে যায়। সেখানে বাস না পেয়ে কাকরাইল মোড়ে হেঁটে যায়। সেখানেও বাস না পেয়ে অফিসার্স ক্লাবের পূর্ববর্তী সিগন্যালে এসে ফার্মগেটগামী বাসে ওঠে। ওই বাসটি মগবাজার হয়ে বাংলামোটর দিকে যাওয়ার সময় তীব্র জ্যামে পড়ে। তখন সে বাস থেকে নেমে পায়ে হেটে বাংলামোটরের দিকে যেতে থাকে। তখন আনুমানিক আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে নিউ ইস্কাটনের ৮৯ নম্বর বাসার সামনের ফুটপাথে পৌঁছালে সাদা টি-শার্ট পরা ২৫/৩০ বছরের ১৫ থেকে ২০ জন ছেলে তাকে ঘিরে ধরে টিজিং করে। তাকে টানাহেচড়া করে তার পরনের স্কুল ড্রেসের জামার সোলডার ও দুটি বোতাম ছিঁড়ে ফেলে। তখন একজন ট্রাফিক পুলিশ তাকে উদ্ধার করে একটি বাসে তুলে দিলে সে বাড়িতে আসে। এজাহারে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, তার মেয়ে এ ব্যাপারে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছে। এদিকে একই দিন শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা, কাকরাইল, খামারবাড়ি ও কলাবাগানে এ ধরনের ঘটনার শিকার হয়েছেন দাবি করে আরো ৫ নারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য দিলে তাদের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ